জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
দ্বীনদারি কে অবশ্যই প্রাধান্য দিতে হবে,নতুবা তাদের একজন দ্বীনদার আর অপর জন্য বেদ্বীন হলে তাদের মাঝে মতবিরোধ লেগেই থাকবে।
এটা চলতেই থাকবে, যার উদাহরণ আজ সমাজে অহরহ।
,
বিশেষ করে মেয়ে যদি পরিপূর্ণ দ্বীনদার হয়,আর ছেলে যদি দ্বীনদার না হয়,তাহলে সে অনেকাংশে ভালো ভাবে দ্বীনই মানতে পারেনা।
সর্বদায় পর্দার সমস্যা হয়।
একসময় এসে বিবাহ ভেঙ্গে যায়,যা মেয়ে এই ভাবেই চলতে থাকে,ছেলের পরিবর্তন কিছু ক্ষেত্র ব্যাতিত অনেকাংশেই দেখা যায়না।
,
তাই কোনো দ্বীনদার মহিলাকে এই বলে বেদ্বীন ছেলের সাথে বিবাহ দেওয়া যে তাকে বুঝিয়ে পরে দ্বীনদার বানিয়ে নেওয়া যাবে,এটি ঠিক নয়।
এতে মহিলার সাংসারিক জীবন অনেক কষ্টে চলে।
,
আবার শুধু ছেলে যদি দ্বীনদার হয়,তাহলে মেয়ে বেদ্বীন হলে এক্ষেত্রেও হাজারো সমস্যা হয়।
,
একজন দ্বীনদার পাত্রপাত্রীর সাথে একজন ধর্মবিষয়ে উদাসীন পাত্রপাত্রীর জীবনাচার নাও মিলতে পারে। দ্বীনদার চাইবে সব কিছুতে ধর্মের ছাপ থাকুক। আর দীনহীন চাইবে সব কিছু ধর্মের আবরণমুক্ত থাকুক। সুতরাং এ দুইয়ের একত্রে বসবাস কখনো শান্তি-সুখের ঠিকানা হতে পারে না। তাই পবিত্র কুরআনও বিয়ের ক্ষেত্রে দ্বীনদারিতে সমতা রক্ষার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছে।
আল্লাহ বলেন, ‘দুশ্চরিত্রা নারী দুশ্চরিত্র পুরুষদের জন্য; দুশ্চরিত্র পুরুষ দুশ্চরিত্রা নারীর জন্য; সচ্চরিত্রা নারী সচ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষ সচ্চরিত্রা নারীর জন্য উপযুক্ত।’ (সূরা নূর : ২৬)।
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘ব্যভিচারী পুরুষ যেন ব্যভিচারিণী বা মুশরিক নারী ছাড়া কাউকে বিয়ে না করে। আবার ব্যভিচারিণী নারী যেন ব্যভিচারী পুরুষ বা মুশরিক পুরুষ ছাড়া কাউকে বিয়ে না করে। মুমিনদের জন্য এ ধরনের চরিত্রের নারী-পুরুষকে হারাম করা হয়েছে।’ (সূরা নূর : ৩)।
কুরআনের পাশাপাশি রাসূল সা:-এর পবিত্র হাদিস শরিফেও এ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَابُورَ الرَّقِّيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ سُلَيْمَانَ الْأَنْصَارِيُّ أَخُو فُلَيْحٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَجْلَانَ عَنْ ابْنِ وَثِيمَةَ النَّصْرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَتَاكُمْ مَنْ تَرْضَوْنَ خُلُقَهُ وَدِينَهُ فَزَوِّجُوهُ إِلَّا تَفْعَلُوا تَكُنْ فِتْنَةٌ فِي الْأَرْضِ وَفَسَادٌ عَرِيضٌ
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের নিকট এমন কোন ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে এলে, যার চরিত্র ও ধর্মানুরাগ সম্পর্কে তোমরা সন্তুষ্ট, তার সাথে (তোমাদের মেয়েদের) বিবাহ দাও। তোমরা যদি তা না করো, তাহলে পৃথিবীতে বিপর্যয় ও ব্যাপক বিশৃংখলা ছড়িয়ে পড়বে।
(ইবনে মাজাহ ১৯৬৭,তিরমিযী ১০৮৪, ইরওয়াহ ১৮৬৮, সহীহাহ ১০২২।)
,
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
সহীহ : বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)
,
আরো জানুনঃ
,
★তাই দ্বীনদার ছেলের জন্য দ্বীনদার মেয়ের সাথে বিবাহ দেওয়া উচিত,এবং দ্বীনদার মেয়ের জন্য দ্বীনদার ছেলের সাথে বিবাহ দেওয়া উচিত।
তাহলেই রাসুলুল্লাহ সাঃ এর হাদীসের উপর যথাযথ আমল হবে।
এটা বলে ঠিক নয় যে বিয়ের পর দ্বীন শিখাবে।একজন দ্বীনদার হলেই অপরজনকে দ্বীনদার বানিয়ে নেওয়া যায়।
এতে রাসুল সাঃ এর হাদীসের উপর যথাযথ আমল হয়না।