জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
Mufti Menk সম্পর্কে আমরা যেই তথ্য পেয়েছি,তা হলোঃ
ডক্টর ইসমাইল ইবনে মুসা মেঙ্ক দাঃবাঃ' হলেন একজন বিখ্যাত মুসলিম শিক্ষাবিদ, ইসলাম প্রচারক ও বক্তা, যিনি মুফতি মেঙ্ক নামে অধিক পরিচিত। তিনি বর্তমানে জিম্বাবুয়ের মহান মুফতি বা "গ্র্যান্ড মুফতি"।
২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৭ সালে তিনি জর্ডানে ইসলামী চিন্তার জন্য রয়েল আল-বায়ত ইনস্টিটিউট ফর ইসলামিক চিন্তাধারার মাধ্যমে বিশ্বের ৫০০ টি সর্বাধিক প্রভাবশালী মুসলমানদের মধ্যে একজন হিসাবে নামকরণ করেছেন। ২০১৮সালে তিনি তার বক্তব্যগুলির একটি প্রেরণামূলক মুঠোফোন শিরোনামের একটি বই হিসাবে প্রকাশ করেছিলেন এবং ২০১৯ সালে দ্বিতীয় সংস্করণটি শিরোনাম প্রকাশ করে মোটুভেশনাল মোমেন্টস। এবং এই বইটা বের হবার কিছু দিন পরে বাংলায় অনুবাদ করা হয়।
,
মুফতি মেঙ্ক দাঃবাঃ জিম্বাবুয়ের হারারে-তে জন্মগ্রহণ করেন, সেখানেই তার প্রারম্ভিক শিক্ষার হাতেখড়ি। উনি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখতে যাবেন, তার আগ দিয়ে জানতে পারেন উনার পিতা মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্যে উনার নাম দিয়েছিলেন এবং উনি নির্বাচিত হয়েছেন। তখন উনার বাবা উনাকে বলেন, মদিনা রাসুলুল্লাহ এর শহর, চেষ্টা করে দেখতে গিয়ে কি হয়। বাবার কথামত উনি সেখানে যান এবং পরবর্তীতে মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শরিয়া আইনের ওপর উপাধি অর্জন করেন। এরপর ভারতের গুজরাট থেকে আইনশাস্ত্রে উচ্চতর শিক্ষা অর্জন করেন এবং মুফতি উপাধি লাভ করেন।
মুফতী মেন্ক দাঃবাঃ জিম্বাবুয়ে ইসলামিক স্কোলার কাউন্সিল (মজলিসুল উলামা জিম্বাবুয়ে) এর জন্য কাজ করে, যা জিম্বাবুয়ের মুসলিম জনসংখ্যার শিক্ষাগত চাহিদা পূরণ করে। তিনি হারারেতে মসজিদ আল ফালাহাতে রোস্টের ভিত্তিতে ইমামও রয়েছেন। মেন্ক বিশেষত পূর্ব আফ্রিকায় পরিচিত এবং আন্তর্জাতিকভাবেও শিক্ষা দেয়। তিনি হারারেতে ইমাম কাউন্সিলের অধীনে মহিলাদের জন্য একটি সাপ্তাহিক সিস্টার্স লার্নিং প্রোগ্রাম পরিচালনা করেন। মেন্ক প্রায়শই আমন্ত্রণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ এবং কর্পোরেট সংস্থাগুলিতে কথা বলে এবং যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা, সৌদি আরব, কেনিয়া, উগান্ডা এবং ভারত সহ ২০ টিরও বেশি দেশে উচ্চারিত হয়। ২০০১ সালে, মেন্কে সৌদি আরবের আফ্রিকার দাওয়াহ কমিটির কাছে "ইসলামের দাওয়াতের প্রচার মাধ্যমের প্রভাব" বিষয়ে তার গবেষণার জন্য প্রথম পুরস্কার প্রদান করা হয়েছিল। পরের বছর তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত "আফ্রিকান মহাদেশে দাউদের মুখোমুখি বাধা এবং তাদের সমাধান" শীর্ষ কিং ফাহাদ সিম্পোজিয়ামে গবেষণা উপস্থাপন করেন।
,
★মুফতি মেঙ্কের প্রসিদ্ধ ১০ উক্তিঃ
১. অন্যের কি আছে অথচ আমাদের নেই এ বিষয়টা আমরা খুব দ্রুত লক্ষ্য করি। কিন্তু আমরা এটা বুঝতে চাই না কতটুকু আমাদের আছে অথচ তাদের নেই। কৃতজ্ঞ হতে চেষ্টা করুন।
২. আপনি হতে পারেন আশেপাশের সবচেয়ে সুদর্শন এবং সবচেয়ে আকর্ষনীয় ব্যক্তি, কিন্তু আপনার মানসিকতা এবং ব্যক্তিত্ব যদি কুৎসিত হয়ে থাকে, তাহলে তা সবকিছু ধ্বংস করে দিবে।
৩. যখন কিছু আপনার মন মতো হয় না, হতাশ কিংবা ক্রুব্ধ হবেন না। এটাকে অধ্যবসায় এবং অনেক ধৈর্যের সাথে গ্রহণ করুন। মনে রাখবেন এটা তাঁরই পরিকল্পনার অংশ।
৪.আপনি কি এমন অনুভব করেন যে আপনার উদ্বেগ বা সমস্যা নিয়ে কথা বলার জন্য কেউ নেই? সবকিছুর শ্রবণকারী এবং সর্বশ্রেষ্ঠ শ্রোতার সাথে কথা বলতে শিখুন। এটা করুন!
৫. আমরা ক্ষুদ্রতম বিষয় নিয়ে বিরক্ত হয়ে যাই। তাদের কথা ভাবুন, যাদের আমাদের যা আছে তার কিছুমাত্র অংশ আছে এবং তা সত্তেও তৃপ্ত। ছোট খুশিগুলো হারাবেন না।
৬. কেউই পরিপূর্ণ জীবনযাপন করে না। আমাদের প্রত্যেককেই কিছু পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। তাই এই জীবনে বেশি নিমজ্জিত হয়ে যাবেন না এবং পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যর্থ হবেন না।
৭. বন্ধু আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা অবচেতনভাবে তাদের জীবনযাত্রার ধরন এবং অভ্যাস অবলম্বন করি। তাই বিজ্ঞতার সঙ্গে আপনার বন্ধু নির্বাচন করুন।
৮. মোনাজাতে শুধু নিজের জন্য প্রার্থনা করার মাধ্যমে স্বার্থপর হয়েন না। অন্যের জন্য প্রার্থনা করার মাধ্যমে নিজের চাওয়াগুলো কবুল হওয়ার সুযোগ করে নিন।
৯. যেখানেই যান, মানুষের সাথে সহৃদয় ব্যবহার করুন। কিন্তু এর বদৌলতে কৃতজ্ঞতা কিংবা কোনকিছু আশা করবেন না। পুরস্কারটা আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসুক।
১০.আমরা অনেক কিছুই আগামীকাল করতে চাই; বাজে অভ্যাসগুলো ত্যাগ করুন, একজন ভাল মানুষে পরিণত হন এবং সর্বশক্তিমানের প্রতি আরও নিকটবর্তী হন। কি হবে যদি ‘আগামীকাল’ই আর কখনো না আসে?
(সংগৃহীত।)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
কারো সম্পর্কে মন্তব্য করার পূর্বে এই হাদীস লক্ষ্যণীয়।
হযরত আবু বাকরা রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَبِي بَكْرَةَ رضي الله عنه أَنَّ رَجُلًا ذُكِرَ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَثْنَى عَلَيْهِ رَجُلٌ خَيْرًا ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ( وَيْحَكَ قَطَعْتَ عُنُقَ صَاحِبِكَ - يَقُولُهُ مِرَارًا - إِنْ كَانَ أَحَدُكُمْ مَادِحًا لَا مَحَالَةَ فَلْيَقُلْ : أَحْسِبُ كَذَا وَكَذَا إِنْ كَانَ يُرَى أَنَّهُ كَذَلِكَ وَحَسِيبُهُ اللَّهُ ، وَلَا يُزَكِّي عَلَى اللَّهِ أَحَدًا )
একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক লোকের ব্যাপারে আলোচনা হয়। তখন অন্য এক লোক বলল, হে আল্লাহর রসূল! অমুক অমুক কাজের বিষয়ে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পর তার চেয়ে উত্তম আর কোন লোক নেই। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার ধ্বংস হোক, তুমি তো তোমার সঙ্গীর গর্দান কেটে ফেলেছ। তিনি এ কথাটি বার বার বললেন। অতঃপর বললেন, তোমাদের কারো যদি তার ভাইয়ের প্রশংসা করতেই হয় তবে সে যেন বলে অমুকের ব্যাপারে আমার ধারণা যে, সে এমন (বাস্তবে হলেই এ কথাটি বলতে পারবে), তবে আল্লাহর সম্মুখে আমি কাউকে দোষমুক্ত ঘোষণা করছি না (অর্থাৎ আমি আল্লাহর সামনে কাউকে পবিত্র করতে পারি না)। (সহীহ মুসলিম-শামেলা:৩০০০,ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৭২৩১, ইসলামিক সেন্টার ৭২৮৪)(সহীহ বোখারী-৬০৬১)
সুতরাং এই হাদীসের আলোকে বলবো যে,আমার ধারণা অনুযায়ী মুফতি মেনক হাফিঃ নিষ্ঠাবান দ্বীনের খাদেম।
বিজ্ঞ আলেম ও দ্বীনের দাঈ।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারী।
আমার জানামতে উনার আকিদা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুকূলে। উনার গবেষনা পড়তে পারেন বয়ান শুনতে পারেন।
তবে উনার কোনো বক্তব্য যদি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকীদা বহির্ভুত হয়,তাহলে তাহা মানা যাবেনা।
মাসয়ালা ফতোয়া, জাতীয় কোনো বিষয় তার থেকে না নেয়ার পরামর্শ থাকবে।
কেননা হানাফী মাযহাবের মাসয়ালার সাথে উনার মত বিরোধ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল রয়েছে।