আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
74 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
edited by
১)কেউ যদি জান্নাতে হুর পাওয়ার আশায় আল্লাহকে মানে এবং আল্লাহর ইবাদাত করে তবে কি ইবাদাত কবুল হবে বলে আশা করা যায়??

২)কোন খৃষ্টান
জিজিয়া কর থেকে বাঁচার জন্য মুসলিম হল
কিন্তু সে আল্লাহ কে বিশ্বাস করে আর নবী(সা) কে রসুল হিসেবে মানে
তার ইমান আনার উদ্দেশ্য দুইটা
১)পরকালীন মুক্তি
২)জিযিয়া কর থেকে বাচা

সে কি মুশরিক?/

তার ইমান কি গ্রহনযোগ্য হবে??

সে পরকালে মুক্তি পাবে বলে আশা করা যায়??
৩)ধরুন,কেউ জিম করতে অনেক পছন্দ করে।

সে মনে করে জিম না করলে সে ভালো ভাবে বাচতে পারবে না।

তার এই মনভাব কি শিরক??
৪)যদি কেউ বলে সে ইসলাম ছাড়তে পারবে কিন্তু বিটিএস না

তবে কি কুফর বা শিরক হবে??

৫)কোন গুনাহের তাওবা না করে,আগে দুনিয়াবি কিছু লাভের জন্য দুয়া করা কি শিরক?

৬)যখন আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করতে বসি তখন আগে নিজের সব গুনাহর জন্য মাফ চাই তারপর জান্নাতের জন্য দোয়া করি।
এরপর আমার পরাশুনা যেন ভালো হয় সেজন্য দুয়া করি।

পরাশুনার জন্য দুয়া না করলে আমার ভালোই লাগে না।

এই যে আমি সবসময় দুয়া করা শেষে পরাশুনার জন্য দুয়া করিআর এটা না করা পযন্ত শান্তি পাই না ,এতে কি শিরক হবে???

৭)ধরুন, আমি আল্লাহর কাছে দুয়া করলাম,"আল্লাহ আমাকে বুয়েটে চান্স পাওয়াই দাও।"
এরপর আমি খুব বিশ্বাস করলাম যে আল্লাহ আমাকে চান্স পাওয়াই দিবেন।

এটা ভেবে আমার দুঃখী মন ভালো হয়ে গেল।

এতে কি শিরক হবে??


৮)ধরুন,একজন লোক যখনই কুফরি, শিরক করে,সে তখনই তাওবা করে

কিন্তু কুফর,শিরক করার পর খুব একটা মন খারাপ হয় না।


পক্ষান্তরে যখনই কোন দুনিয়াবি বিষয় নিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হয়,তখন তার মন খারাপ হয়ে যায়।


তার এই মনভাব কি শিরক??

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/987 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, দু'আ করা পৃথক একটি ইবাদত। এমনকি দু'আ কে সমস্ত ইবাদতের মগজ হিসেবে হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে।

যেমন হাদীসে বর্ণিত রয়েছে-

হযরত নু'মান ইবনে বশির রাযি থেকে বর্ণিত,

عن النعمان بن بشير قال: قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم - "«الدعاء هو العبادة " ثم قرأ: {وقال ربكم ادعوني أستجب لكم} [غافر: ٦٠] رواه أحمد والترمذي، وأبو داود، والنسائي، وابن ماجه

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,

দু'আ পৃথক একটি ইবাদত। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাঃ নিম্নোক্ত আয়াত তেলাওয়াত করেন, এবং তোমাদের রব বলেন, আমাকে ডাকো,আমি তোমাদের ডাকের জবাব দেবো'। (সূরা গাফির-৬০,

মিশকাতুল মাসাবিহ-২২৩০)

এবং হযরত আনাস রাযি থেকে বর্ণিত,

وعن أنس، قال: قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم - " «الدعاء مخ العبادة» " (رواه الترمذي)

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, দু'আ সমস্ত ইবাদতের মগজ। (মিশকাতুল মাসাবিহ-২২৩১)

দু'আ কবুল হয়নি মনে করে দু'আকে ছেড়ে দেওয়া যাবে না।বরং ধারাবাহিক লাগাতার দু'আ করতে হবে, তবেই কবুলের সম্ভাবনা থাকবে। যেমন হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।

হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,

عن أبي هريرة، عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال: «لا يزال يستجاب للعبد، ما لم يدع بإثم أو قطيعة رحم، ما لم يستعجل» قيل: يا رسول الله ما الاستعجال؟ قال: يقول: «قد دعوت وقد دعوت، فلم أر يستجيب لي، فيستحسر عند ذلك ويدع الدعاء»

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, প্রত্যেক বান্দার দু'আ ইস্তে'যাল না করার শর্তে ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল হয়ে থাকে,যতক্ষণ না সে কোনো গোনাহ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক-কে বিচ্ছিন্ন করার দু'আ করে থাকে। সাহাবায়ে কেরাম রাযি জিজ্ঞাসা করলেন। ইয়া রাসুলাল্লাহ! ইস্তে'যাল অর্থ কি?

রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, ইস্তে'যাল অর্থ হল, বান্দা কর্তৃক এমন কথা উচ্ছারিত হওয়া বা বলা যে, আমি তো দু'আ করতেই থাকলাম,করতেই থাকলাম, অথচ আমার দু'আ কবুল হয়েছে,তা তো কখনো দেখিনি। সুতরাং তখনই সে আফসোস করতে থাকে এবং দু'আ কে ছেড়ে দেয়। (ফালাফল হিসেবে তার দু'আ আর কবুল হয় না) (সহীহ মুসলিম-২৭৩৫,মিশকাতুল মাসাবিহ২২২৭)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. আশা করা যায় যে এবাদত কবুল হবে। কারণ, সাধারণত মানুষ জান্নাত পাওয়ার আশায় ইবাদত করে থাকে। তবে আমাদের উচিত আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য ইবাদত করা তাহলে আল্লাহ তায়ালাও সন্তুষ্ট হবেন হবেন এবং জান্নাতও লাভ হবে।

২. জ্বী না। সে যেহেতু আল্লাহ ও তার রাসূলের উপর ঈমান এনেছে বিধায় সে মুশরিক হবে না এবং আশা করা যায় সে পরকালে নাজাত পাবে।

৩. না এটি শিরক হবে না। শারীরিক ফিটনেস ঠিক রাখার জন্য জিমের ভূমিকা অতুনীয়। তবে জিম না করলে বাঁচবে না ধারণা করাটা মোটেও উচিত না।

৪. কোন প্রকৃত ঈমানদ্বার ব্যাক্তি কখনই এমন কথা বলতে পারে না। কারণ, মুসলমানের কাছে ইসলাম হলো পৃথীবির সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। বিধায় বিটিএসকে ইসলামের চেয়ে অধিক দামী মনে করা ঈমানের জন্য ক্ষতিকারক। সুতরাং এমন ব্যাক্তির জন্য তওবা করা আবশ্যক।

৫. না তা শিরক হবে না। তবে আগে গোনাহ থেকে তওবা করা উচিত।

৬. না এটি শিরক হবে না।

৭. না তা শিরক হবে না।

৮. দুনিয়ার ক্ষতির চেয়ে পরকালের ক্ষতি ভয়ানক। কোন মুমিন গোনাহ করার পর স্বীয় গোনাহের উপর অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইলে আল্লাহ তায়ালা তা ক্ষমা করে দেন। সুতরাং মুমিনের জন্য উচিত পার্থিব ক্ষতির চেয়ে পরকালের ক্ষতিকে বেশী ভয় করা এবং যেই কাজ করলে আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন কাজ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...