আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
113 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ শাইখ

আমার বিয়ের কথা বার্তা ফাইনাল হয়ে গেছে আলহামদুলিল্লাহ,,  বিয়ের দিন তারিখ ও ঠিক হয়ে গেছে,, আমার হবু শাশুড়ী প্রায়ই আমার খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য আমাকে কল দেন,, তো আমি উনাকে আন্টি ও আমার হবু শ্বশুর কে আনকেল বলে সম্বোধন করি,, কিন্তু এতে উনাদের মন খারাপ হয়,, উনাদের ইচ্ছা আমি উনাদের এখন থেকেই বাবা মা বলে সম্বোধন করি,, এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে এভাবে বিয়ের আগে কি উনাদের বাবা মা বলে ডাকা যাবে বা এটা কি ডাকা ঠিক হবে কি না,, দয়া করে উত্তর দিবেন উস্তায ইন শা আল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (63,200 points)
edited by

 

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাব,

শশুরকে ‘বাবা’ আর শাশুড়িকে ‘মা’ বলা নাজায়েয হবে না। তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্যই মূলত এমনটা বলা হয়।

কুরআনে আল্লাহ তা'আলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্ত্রীদেরকে আমাদের মা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন যদিও তারা আমাদের জন্মদাত্রী মা নন। এবং ইবরাহীম আ. কে আমাদের পিতা হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। যদিও তিনি আমাদের জন্মদাতা পিতা নন।

যেমন অাল্লাহ তা'আলা বলেন,

ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺃَﻭْﻟَﻰ ﺑِﺎﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻣِﻦْ ﺃَﻧﻔُﺴِﻬِﻢْ ﻭَﺃَﺯْﻭَﺍﺟُﻪُ ﺃُﻣَّﻬَﺎﺗُﻬُﻢْ

নবী মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর স্ত্রীগণ তাদের মাতা।(সূরা আহযাবঃ৬নং আয়াতের কিয়দাংশ)

আল্লাহ তা'আলা অন্যত্র বলেন,

ﻭَﺟَﺎﻫِﺪُﻭﺍ ﻓِﻲ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺣَﻖَّ ﺟِﻬَﺎﺩِﻩِ ﻫُﻮَ ﺍﺟْﺘَﺒَﺎﻛُﻢْ ﻭَﻣَﺎ ﺟَﻌَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪِّﻳﻦِ ﻣِﻦْ ﺣَﺮَﺝٍ ﻣِّﻠَّﺔَ ﺃَﺑِﻴﻜُﻢْ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ ﻫُﻮَ ﺳَﻤَّﺎﻛُﻢُ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤﻴﻦَ ﻣِﻦ ﻗَﺒْﻞُ ﻭَﻓِﻲ ﻫَﺬَﺍ ﻟِﻴَﻜُﻮﻥَ ﺍﻟﺮَّﺳُﻮﻝُ ﺷَﻬِﻴﺪًﺍ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻭَﺗَﻜُﻮﻧُﻮﺍ ﺷُﻬَﺪَﺍﺀ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﻓَﺄَﻗِﻴﻤُﻮﺍ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻭَﺁﺗُﻮﺍ ﺍﻟﺰَّﻛَﺎﺓَ ﻭَﺍﻋْﺘَﺼِﻤُﻮﺍ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻫُﻮَ ﻣَﻮْﻟَﺎﻛُﻢْ ﻓَﻨِﻌْﻢَ ﺍﻟْﻤَﻮْﻟَﻰ ﻭَﻧِﻌْﻢَ ﺍﻟﻨَّﺼِﻴﺮُ

তোমরা আল্লাহর জন্যে শ্রম স্বীকার কর যেভাবে শ্রম স্বীকার করা উচিত। তিনি তোমাদেরকে পছন্দ করেছেন এবং ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা রাখেননি। তোমরা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের ধর্মে কায়েম থাক। তিনিই তোমাদের নাম মুসলমান রেখেছেন পূর্বেও এবং এই কোরআনেও, যাতে রসূল তোমাদের জন্যে সাক্ষ্যদাতা এবং তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলির জন্যে। সুতরাং তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে শক্তভাবে ধারণ কর। তিনিই তোমাদের মালিক। অতএব তিনি কত উত্তম মালিক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী।(সূরা হজ্ব-৭৮)

অনুরূপভাবে ছোটদের প্রতি স্নেহ ও মমতা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে তাদেরকে ‘ছেলে’ বা বৎস বলার প্রচলিনও রয়েছে। এবং এটি দূষণীয়ও নয়।

যেমন হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে,

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনাস রা. কে বলেন,

يَا بُنَيَّ إِذَا دَخَلْتَ عَلَى أَهْلِكَ فَسَلِّمْ يَكُونُ بَرَكَةً عَلَيْكَ وَعَلَى أَهْلِ بَيْتِكَ.

হে আমার বৎস! তুমি যখন বাড়িতে প্রবেশ করবে, তখন বাড়ির লোকদেরকে সালাম দিবে।এটা তোমার জন্য এবং তোমার পরিবারবর্গের জন্য রহমত স্বরূপ।” (সুনানে তিরমিযি-২৬৯৮)

সম্মান প্রদর্শন পূর্বক কাউকে বাবা বা মা বলে সম্বোধন করা জায়েয আছে।তবে কাউকে বাস্তবে বাবা-মার স্থান দিয়ে দেয়া বা নিজ পিতা-মাত ব্যতীত নিজেকে অন্যকারো সন্তান বলে পরিচয় দেয়া, আইডি কার্ড বা পাসপোর্টে নাম দেয়া কখনো জায়েয হবে না।এটা সম্পূর্ণই না জায়েয।

যেমন হযরত সা'দ রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি-

عَنْ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «مَنِ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ أَبِيهِ، وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ غَيْرُ أَبِيهِ، فَالْجَنَّةُ عَلَيْهِ حَرَامٌ»

" যে ব্যক্তি আপন পিতা ছাড়া অন্যকে পিতা বলে মেনে নেয় অথচ সে জানে যে, সে তার পিতা নয়, তার জন্য জান্নাত হারাম। "। (সহীহ বোখারী, হাদীস নং- ৬৭৬৬)

হাদীসের সারমর্মঃ যে ব্যক্তি নিজের জন্মদাতা পিতা ছাড়া অন্য কাউকে পিতা হিসেবে মেনে নয় বা অন্য কারও সাথে জন্মগত সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠার দাবী করে তার জন্য জান্নাত হারাম। অন্য বর্ণনায় এসেছে, সে কুফুরী করল।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি আপনার শশুর শাশুড়ীকে সম্মান প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে বিবাহের পূর্বেই মা-বাবা বলে ডাকলে নাজায়েয হবে না। যদিও বা সাধারণত বিবাহের পরেই উক্ত সম্পর্ক ধরে ডাকা হয়।

বি:দ্র: বিবাহ ঠিক হওয়ার পর আক্বদ সম্পূর্ণ করতে বিলম্ব করা মোটেও উচিত নয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...