আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
193 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
edited by
আস্সালামুআলাইকুম হুজুর !
আমাকে কোনো হাদিসের বেখ্যা দিতে হবেনা হুজুর! প্রশ্ন বড় করবার জন্য দুঃখিত হুজুর ! ক্ষমা করবেন ! শুধু এক কথায় উত্তর দিলেই হবে ,

আমি কুরআন ভালোভাবে পড়তে পারিনা,শুধু অর্ধেক কায়দা পর্যন্ত শিখেছিলাম ,একটু একটু নিজে নিজে রিডিং পড়ার চেষ্টা করি ,কিন্তু কোথায় বেশি টান হবে কোথায় কম টেনে পড়তে হবে ইটা জানিনা ,আবার কোন আয়াত পড়লে সেজদা দিতে হয় এটাও বুঝিনা ,এমতাবস্থায় আমিযদি প্রতিদিন প্রতিটা সূরার অডিও ছেড়ে ল্যাপটপে দেখে দেখে মিলিয়ে মিলিয়ে পড়ার চেষ্টা করি ,এরপর অর্থগুলো গুলো পরে নেই,,তবেকি আমি জাহান্নাম থেকে বাঁচতে পারবো হুজুর !? হুজুর আল্লাহতো আমাদেরকে কুরআন দিয়েছেন সেই অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করতে,অনেকেই সারাজীবন শুধু কুরআনের আরবিটাই পড়েন! বাংলা অর্থ পড়েনা! তাহলে তারা কিভাবে বুঝবে যে আল্লাহ কি কি করতে বলেছেন আমাদেরকে ,আমাদের গ্রামের অনেক বয়ষ্ক নারী আছেন যারা বাংলা পড়তে জানেনা ,তবে ছোটোবেলাথেকেই আল্লাহর রহমতে কুরআন পড়তে জানে,তারা তাহলে কি শুধু আরবিতে পড়লেই পূর্ণ সওয়াব পেয়ে যাবেন! আর বাংলা অর্থ সারাজীবন না জেনেও ,,,তাদের ক্ষেত্রে বিধান কি হুজুর !?
আমার মামা উনি নামাজ পড়েনা ,ইসলামকে উনি অন্যভাবে চর্চা করেন নাউযুবিল্লাহ ! বলতেও ঘৃণা হচ্ছে,উনার সাথে তর্কে জড়াতে চাইনা ,উনি অনেক রকমের যুক্তি বের করেন ,উনার কথার সাথে পেরে উঠা যায়না,বাধ্য হয়ে নানুবাড়ি যেতে হয় ,আগে নানু বেঁচে থাকতে একটা কথা ছিল ,এখনকি তাহলে ঐবাড়ির খাবার খাওয়াও হারাম !?   উনি বলেন কুরআনের কোথাও ৫ ওয়াক্ত সালাতের কথা লিখা নেই! আবার বলেন কুরআন আল্লাহ দিয়েছেন জানার জন্য আরবিতে না পরে বাংলায় পড়াটা বেশি জরুরি ,নবীজী(স:) আরবের ছিলেন বলেই কুরআন আরবি ভাষায় তৈরী করা হয়েছিল। আমি সালাত আদায় করলে ,আমার নানী সালাত আদায় করলে মামা ,মামীরা তা স্বাভাবিক দেখেনা এমনকি ছোট দুইটা বাচ্চাকেও তাদের মতোই পথভ্রষ্ট করছে ,আগে বাচ্চাদুটো মসজিদে যাবার জন্য ,ফজরের সালাত আদায়ের জন্য কান্না করতো ,তারা মসজিদে গেলে ওদের মা খুব বকে ,বাজে বেবহার করে ,নানী বাচ্চাদেরকে আরবি পড়ানোর জন্য শিক্ষক রেখেছিলেন ,কিন্তু মামী খুবই অশান্তি করতো এগুলো নিয়ে ,এখন আর তাদেরকে কেউ কিছু বলেন ,তারাকারো কোনো কথা শুনেনা ,স্বামী-বউ ,আর দুটো ছেলে বাচ্চা , ৪ জন্যেই এই দলভুক্ত এখন ,একটা বাচ্চার বয়স ৭ হলো আরেককতার ১২,নানী বাধ্য হয়ে তাদেরসাথেই থাকে ,তাদের খায়! আমিও আগে নানুবাড়িতে বাধ্য হয়ে ছিলাম , হুজুর ওদের বাসায় জাওয়াওকি তাহলে ঠিক হচ্ছেনা !?

৩.হুজুর বালেগ হবার পর থেকে আমার যতগুলো বিতরের সালাত কাজা হয়েছে ওগুলো কিভাবে পরবো,আমি শুনেছি ৪ রাকাত নাকি পড়তে হয় ,,,

৪.আরেকটা প্রশ্ন,ফজর কাযা হয়ে গেলে জোহরের ওয়াক্তে আগে কাযা সালাত পরেনিবো,নাকি আগে জোহর শেষ করবো ?

৫.কোন কোন সময়গুলোতে সালাত আদায় করা হারাম ?

৬.শীতের সময় ফজরে আজকে ৬ টার সময়েও অন্ধকার ছিল ,আমি তখন সালাত শেষ করে ঘড়িতে টাইম দেখি ৬.৩০ বাজে ,আমার কি সালাত কাজ হয়ে গিয়েছে !?

৭.সুন্নত সালাতের পর মুনাজাতে কি দুআ করা যাবেনা ? ফরজ সালাতের পর কি আরবি দুআ করার পর আল্লাহকে বাংলায় মনের সব কথা বলা যাবেনা ??
প্রতি ফরজ সালাতের সেজদায় ইস্তেগফার পড়া যাবে!? আমি শুনেছি ফরজ সালাতের সেজদায় বেশি দুআ কবুল হয় তাই আমি সেজদা লম্বা করি এবং আল্লাহর কাছে অনেক কিছু বলি ,এভাবেকি ঠিক হচ্ছে ?

৮.আমি অনেক সময় আল্লাহর কাছে দুআ করি কথা বলি আল্লাহর সাথে ,,হাত না তুলেই ,ধরুন পড়তে বসেছি,অমনি কোনো কথা মনে পরেগেলো আমি ফিশ ফিশ করে শুধু হাত না তুলেই যদি আল্লাহকে বলি তাহলে কি সেই দুয়াটা হবেনা !? নাকি হাত তুলেই দুআ করতে হবার !? অনেকসময় সামনে মা থাকেন ,হাত তুলে আল্লাহর কাছে চাইতে অন্যের সামনে লজ্জা লাগে।.

৯.ওযু করার সময়ে কাপড়ে ওযুর পানির ছিটা পড়লে কি সালাত আদায় হয়না ?

10.আমার হায়েজের সময়সীমা নির্ধারিত নয়। একেক মাসে একেক রকম। এখন আমি হায়েজের শেষদিকে যদি দেখি রাতের বেলা এখনো পবিত্রতা অর্জন হয়নি কিন্তু সকালে দেখি যে আমি পবিত্র হয়েছি। তাহলে ফজরের নামাজের হুকুম কী হবে? যেহেতু হায়েজের সময় ঘুম থেকে একটু দেরি করে অর্থাৎ ফজরের অনেক পরে উঠা হয়।

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
নামাজে সুরা তিলাওয়াত এর জন্য সুরা ফাতেহা এবং কমপক্ষে আরো চারটি সুরা শুদ্ধ ভাবে মুখস্ত করতেই হবে।
এটি ফরজ।

এরপর আপনি যদি প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে তিলাওয়াত করেন,অর্থ পড়েন,এবং তা অনুযায়ী আমল করেন,সেক্ষেত্রে আপনি জাহান্নাম থেকে বাঁচতে পারবেন,ইনশাআল্লাহ। 
(০২)
আপনি তাদের বাসায় যেতে পারবেন।
পূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে চলবেন।

(০৩)
তিন রাকাত করে আদায় করবেন।
জন সম্মুখে কাজা করলে সেক্ষেত্রে দোয়ায়ে কুনুতের আগে তাকবির বলার সময় হাত উঠাতে হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৪)
এক্ষেত্রে জোহরের আগেই ফজরের কাযা সালাত পরে নিবেন।

(০৫)

তিন সময়ে নামাজ পড়তে হাদীস শরীফে নিষেধ করা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে-

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ الصُّنَابِحِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الشَّمْسُ تَطْلُعُ وَمَعَهَا قَرْنُ الشَّيْطَانِ فَإِذَا ارْتَفَعَتْ فَارَقَهَا فَإِذَا اسْتَوَتْ قَارَنَهَا فَإِذَا زَالَتْ فَارَقَهَا فَإِذَا دَنَتْ لِلْغُرُوبِ قَارَنَهَا فَإِذَا غَرَبَتْ فَارَقَهَا " . وَنَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الصَّلاَةِ فِي تِلْكَ السَّاعَاتِ .

আবদুল্লাহ সুনাবিহী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনসুর্য শয়তানের দুই শিঙের মধ্য দিয়ে উদিত হয়। যখন সুর্য উপরে উঠেতখন শয়তান তা থেকে দুরে সরে যায়। আবার যখন সুর্য মাথার উপর আসেতখন শয়তান এসে মিলিত হয়। আবার ঢলে পড়লে পৃথক হয়ে যায়। আবার যখন সুর্য অস্তগমনের নিকটবর্তী হয়তখন শয়তান মিলিত হয় এবং যখন সুর্য অস্তমিত হয়তখন শয়তান সরে যায়। এ জন্যই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ তিন সময় সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন। ( সুনান আন-নাসায়ী ,৫৬০)

 

অন্য হাদীসে এসেছে-

عَنْ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ الْجُهَنِيَّ، يَقُولُ ثَلاَثُ سَاعَاتٍ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْهَانَا أَنْ نُصَلِّيَ فِيهِنَّ أَوْ نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا حِينَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتَّى تَرْتَفِعَ وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ حَتَّى تَمِيلَ وَحِينَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ حَتَّى تَغْرُبَ .

উকবা ইবনু আমির জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনতিনটি সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সালাত আদায় করতে ও মৃত ব্যাক্তিকে কবরস্থ করতে নিষেধ করেছেন (১) যখন সুর্য আলোকিত হয়ে উদয় হয়যাবৎ না ঊর্ধাকাশে উঠে; (২) যখন দ্বিপ্রহর হয়যাবৎ না সুর্য হেলে পড়ে আর (৩) যখন সুর্য অস্ত যাওয়ার উপক্রম হয়যাবৎ না সম্পূর্ণ অস্ত যায়। ( সুনান আন-নাসায়ী ,৫৬১)


★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(১) তিন সময়ে ফরয-নফল তথা সকল প্রকার নামায পড়া নিষিদ্ধ।যথা-
(১)সূর্যোদয়ের সময়।
(২)সূর্যাস্তের সময়।
(৩)সূর্য ঠিক মধ্যখানে অবস্থানের সময়।

আর পাঁচ সময়ে শুধুমাত্র নফল নামায পড়া মাকরুহ।উপরোক্ত তিন সময়।(৪)সুবহে সাদিকের পর থেকে নিয়ে সূর্যোদয় পর্যন্ত।অর্থাৎ ফজরের নামাযের আগে ও পরে (৫)আছরের নামাযের পরে।(শেষোক্ত দুই সময়ে ফরয নামায পড়া মাকরুহ নয়)সুতরাং এই পাঁচ সময়ে যেকোনো প্রকার নফল নামায,চায় তাহিয়্যাতুল ওজু হোক বা তাহিয়্যাতুল মসজিদ হোক, সবই মাকরুহ।প্রথম তিন প্রকারে মাকরুহে তাহরিমীর বিধান রয়েছে।আর শেষ দুই প্রকারে প্রকাশ্যে কোথাও পাইনি।তবে যতটুকু সম্ভব মনে হচ্ছে, মাকরুহে তানযিহি-ই হবে।(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/8219

(০৬)
হ্যাঁ, আপনার ফজরের নামাজ আদায় হয়েছে।

(০৭)
সুন্নাত সালাতের পর মুনাজাতে দুআ করা যাবে।

ফরজ সালাতের পর আরবি দুআ করার পর আল্লাহকে বাংলায় মনের সব কথা বলা যাবে।

প্রতি ফরজ সালাতের সেজদায় ইস্তেগফার পড়া যাবে। সেজদাহ লম্বা করা যাবে।
তবে ফরজ নামাজের সেজদার ক্ষেত্রে এমনটি করার ক্ষেত্রে উলামায়ে কেরামগন অনুৎসাহিত করেছেন।

(০৮)
হাত তুলে দোয়া করা দোয়ার আদব।

তার মানে এই নয় যে হাত না তুলে দোয়া করলে তাহা কবুলই হবেনা। বিষয়টি এমন নহে।

আপনি যদি দোয়া কবুলের আশায় হাত না তুলেও অনুনয় বিনয় করে দোয়া করেন,সেক্ষেত্রেও সেই দোয়া কবুল হবে,ইনশাআল্লাহ। 

(০৯)
এতে কোনো সমস্যা নেই।
সেই ছিটা পানি পবিত্র,সুতরাং এক্ষেত্রে সালাত আদায় হবে।

(১০)
হায়েজ কখন শেষ হয়েছে,আপনি জানেননা।
তাহাজ্জুদের শেষ ওয়াক্তে অর্থাৎ ফজরের ওয়াক্ত আসার আগে আপনি চেক করেননি।

এক্ষেত্রে ফজরের ওয়াক্ত আসার আগেও তো আপনার হায়েজ শেষ হয়ে যেতে পারে!

সুতরাং আপনি সতর্কতামূলক ইশা ও ফজরের সালাত কাজা আদায় করে নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...