জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন:
(مَّن ذَا ٱلَّذِي يُقۡرِضُ ٱللَّهَ قَرۡضًا حَسَنٗا فَيُضَٰعِفَهُۥ لَهُۥٓ أَضۡعَافٗا كَثِيرَةٗۚ ) [البقرة:245]
{কে আছে, যে আল্লাহকে উত্তম ঋণ দেবে, ফলে তিনি তার জন্য বহুগুণে বাড়িয়ে দেবেন?} [সূরা আল বাকারা:২৪৫]
,
ইরশাদ হয়েছে :
(لَن تَنَالُواْ ٱلۡبِرَّ حَتَّىٰ تُنفِقُواْ مِمَّا تُحِبُّونَۚ ) [آل عمران:29]
{তোমরা কখনো ছাওয়াব অর্জন করতে পারবে না, যতণ না ব্যয় করবে তা থেকে, যা তোমরা ভালবাস।}
[সূরা আলে ইমরান:৯২]
,
আল্লাহ তাআলা বলেন:
(إِن تُبۡدُواْ ٱلصَّدَقَٰتِ فَنِعِمَّا هِيَۖ وَإِن تُخۡفُوهَا وَتُؤۡتُوهَا ٱلۡفُقَرَآءَ فَهُوَ خَيۡرٞ لَّكُمۡۚ ) [البقرة:171]
{তোমরা যদি সদাকা প্রকাশ কর, তবে তা উত্তম। আর যদি তা গোপন কর এবং ফকীরদেরকে তা দাও, তাহলে তাও তোমাদের জন্য উত্তম} [সূরা আল বাকারা:২৭১]
,
ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ তাআলা বলেন:
(خُذۡ مِنۡ أَمۡوَٰلِهِمۡ صَدَقَةٗ تُطَهِّرُهُمۡ وَتُزَكِّيهِم ) [التوبة:301]
{তাদের সম্পদ থেকে সদকা নাও। এর মাধ্যমে তাদেরকে তুমি পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবে।} [ সূরা তাওবা:১০৩]
,
আল্লাহ তাআলা বলেন :
(وَمَآ أَنفَقۡتُم مِّن شَيۡءٖ فَهُوَ يُخۡلِفُهُۥۖ وَهُوَ خَيۡرُ ٱلرَّٰزِقِينَ ٣٩ )[سبأ:93]
{আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় কর তিনি তার বিনিময় দেবেন এবং তিনিই উত্তম রিয্কদাতা।}[সূরা সাবা:৩৯]
,
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুল (সা.) বলেছেন, ‘এমন কোনো দিন যায় না যেদিন দুজন ফেরেশতা পৃথিবীতে আগমন করেন না, তাদের একজন দানশীল ব্যক্তির জন্য দোয়া করতে থাকেন এবং বলেন, হে আল্লাহ! আপনি দানশীল ব্যক্তিকে উত্তম বদলা দিন। দ্বিতীয় ফেরেশতা কৃপণের বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে বদ দোয়া করে বলেন, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস ও বরবাদ করুন’ (বোখারি-মুসলিম)
,
রসুল (সা.) বলেছেন, ‘খেজুরের একটি টুকরা দান করে হলেও তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার চেষ্টা কর।’ (বোখারি ও মুসলিম)। হজরত উকবা বিন আমের (রা.) থেকে বর্ণিত। দয়াল নবীজী (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই দান-সদকা কবরের আজাব বন্ধ করে দেয়। আর কেয়ামতের দিন বান্দাকে আরশের ছায়ার নিচে জায়গা করে দেয়। (তাবরানি ও বায়হাকি)।
,
(০২)
হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে,
وعن أبي ذر عن النبي -صلى الله عليه وسلم- قال: من بنى لله مسجدا بنى الله له بيتا في الجنة
‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মসজিদ নির্মাণ করবে, মহান আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ ঘর তৈরি করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৫০)
মসজিদ নির্মাণ এমন একটি পুণ্যময় কাজ, যার সওয়াব মৃত্যুর পরও অব্যাহত থাকে। যত দিন সেই মসজিদে আল্লাহর ইবাদত হবে, তত দিন নির্মাণকারী এর সওয়াব পেতে থাকে। ইরশাদ হয়েছে, ‘সাত ধরনের আমলের প্রতিদান মৃত্যুর পর কবরেও জারি থাকে। ১. যে ব্যক্তি কাউকে দ্বিনি ইলম শিক্ষা দেবে। ২. যে নদী প্রবাহিত করতে সহযোগিতা করবে। ৩. অথবা কূপ খনন করবে। ৪. অথবা গাছ রোপণ করবে। ৫. অথবা মসজিদ নির্মাণ করবে। ৬. অথবা কোরআন বিতরণ করবে। ৭. অথবা সুসন্তান রেখে যাবে যে তার মৃত্যুর পর তার জন্য দোয়া করবে। (আল বাহরুজ জাখখার : ১৩/৪৮৪)
(০৩)
মাটির নিচ থেকে পাওয়া সম্পদ তিন প্রকার।
এক, যদি সেটায় কুফরীর কোনো নিশানা থাকে,তাহলে বাইতুল মাল তথা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে এক পঞ্চমাংশ দিতে হবে।
বাকিটা সেই নিবে।
قوله صلى الله عليه وسلم : ( فِي الرِّكَازِ : الْخُمْسُ ) رواه البخاري (1499) .
রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, রিকাযের ক্ষেত্রে এক পঞ্চমাংশ।
,
দুই,
যদি সেটায় ইসলামের কোনো নিদর্শন পাওয়া যায়,তাহলে সেটি কুড়িয়ে পাওয়া সম্পদের বিধানের ন্যায় হবে।
,
الموسوعة الفقهية" (23/102) : " لاَ خِلاَفَ بَيْنَ الْفُقَهَاءِ فِي أَنَّ دَفِينَ أَهْل الإْسْلاَمِ لُقَطَةٌ .
কুড়িয়ে পাওয়া সম্পদের বিধান সম্পর্কে জানুনঃ
,
তিন,
যদি কোনো নিদর্শনই না পাওয়া যায়,তাহলে সেটির মালিক কি যে পেয়েছে সেই হবে,নাকি জমিনের মালিকই তার মালিক হবে,এক্ষেত্রে ফুকাহায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে।
,
يميل إليه الشيخ ابن عثيمين ، حيث قال رحمه الله : " الظاهر في هذه المسألة أن يكون لمن وجده ...؛ وذلك لأنه منفصل عن الأرض فلا يدخل في ملكها ، فيكون ملكاً لواجده ، كما لو وجد فيها كمأة أو شيئاً يخرج من الأرض فهو لواجده " . انتهى من تعليقه على كتاب "الكافي" (3/108) .
সারমর্মঃ যে পেয়েছে,সেই এটার মালিক হবে।
جمهور أهل العلم على أن ما وُجد في الأرض من ركاز يكون لمالك الأرض، وليس لواجده
জমহুররা বলেছেন যে জমিনের মালিম এর মালিক হবে।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত জমিনের মালিকই উক্ত খনির মালিক হবে।
,
(০৪)
কুরআন ভুলে যাওয়ার আশংকা রোধ করার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিয়মিত কুরআন পড়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন। অর্থাৎ মুখস্থকৃত অংশ নিয়মিত পুনঃপাঠ করা ও বারবার তেলাওয়াত করা। অন্যদিকে কুরআন ভুলে যাওয়া গর্হিত কাজ। কারণ এতে আল্লাহর কিতাব থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া ও এ কিতাবকে পরিহার করার আলামত পাওয়া যায়।
,
,
এ বিষয়টি নিয়ে ফুক্বাহায়ে কেরামের মাঝে মতভেদ আছে। হানাফী মাযহাব মতে কোন ব্যক্তি যদি তিলাতওয়াতই ভুলে যায়, তাহলে তার জন্য হাদীসে বর্ণিত গোনাহের অধিকারী হবে।
,
কিন্তু ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর মতে মুখস্ত করা অংশ ভুলে গেলেই সেই গোনাহের অংশিদার হবে।
সতর্কতা স্বরূপ ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর বক্তব্যের উপর আমল করা উচিত বলেই মনে হয়। তাই হাফেজ সাহেবগণ কুরআন মুখস্ত করার পর ভুলে যাওয়া থেকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিত।
,
عن انس بن مالك، قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ” عرضت على اجور امتي حتى القذاة يخرجها الرجل من المسجد وعرضت على ذنوب امتي فلم ار ذنبا اعظم من سورة من القران او اية اوتيها رجل ثم نسيها ”
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মাতের সাওয়াবসমূহ (কাজের বিনিময়গুলো) আমার সামনে পেশ করা হয়েছে, এমনকি কোন ব্যক্তি কর্তৃক মাসজিদ থেকে ময়লা-আবর্জনা দূর করার সাওয়াবও। অপরদিকে আমার উম্মাতের পাপরাশিও আমাকে দেখানো হয়েছে। আমি তাতে কুরআনের কোন সূরাহ বা আয়াত শেখার পর তা ভুলে যাওয়ার চাইতে বড় গুনাহ আর দেখিনি। [সূনানে আবূ দাউদ, হাদীস নং-৪৬১]
ثم النسيان عند علمائنا محمول على حال لم يقدر عليه بالنظر سواء كان حافظا ام لا (مرقاة شرح مشكاة، كتاب فضائل القرآن، باب آداب التلاوة ودروس القرآن، الفصل الأول-5/72)
সারমর্মঃ যদি দেখেও না পড়তে পারে,তাহলে সেটাকে ভুলে যাওয়া বলা হবে।
ما من امرئ يقرأ القرآن ثم ينساه اى بالنظر عندنا وبالغيب عن الشافعى (مرقاة شرح مشكاة،كتاب فضائل القرآن، باب آداب التلاوة ودروس القرآن، الفصل الثانى-5/81)
সারমর্মঃ আমাদের নিকটে যদি দেখেও না পড়তে পারে,তাহলে সেটাকে ভুলে যাওয়া বলা হবে।
,
(ফাতওয়া বিভাগ জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
,
কিছু ইসলামী স্কলারদের মত হলোঃ
কুরআন ভুলে যাওয়ার হুকুম কি এ ব্যাপারে আলেমগণ মতানৈক্য করেছেন: কেউ বলেন: কুরআন ভুলে যাওয়া কবিরা গুনাহ। কোন কোন মতে, গুনাহর কাজ; তবে কবিরা গুনাহর পর্যায়ে পৌঁছবে না। কারো কারো মতে, এটি এমন একটি মুসিবত যা বান্দার অন্তর ও দ্বীনদারিকে আক্রান্ত করে। এর ফলে বান্দার কোন কোন আমলের উপর আল্লাহর শাস্তি নামতে পারে। যদিও এটি কবিরা গুনাহ নয় বা পাপ নয়।
,
(০৫)
এ সংক্রান্ত জানুনঃ
,
(০৬)
ইমামের প্রথম তাকবীর বলার সাথে সাথে তাকবীর বলে নামায শুরুকরলে তাকবীরে উলা পাবে। সুতরাং ইমামের তাকবীরে তাহরীমার সাথেই নামাযে শরিক হওয়ারচেষ্টা করতে হবে। প্রকাশ থাকে যে, সূরা ফাতেহা শেষ হওয়ার আগে জামাতে শরিক হতে পারলেওকোনো কোনো ফকীহ তাকবীরে উলার সওয়াব হাসিল হয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেছেন।
-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫৪; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১০৭; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী ১৪০; রদ্দুল মুহতার ১/৫২৬
বিস্তারিত জানুনঃ