আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
82 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (5 points)
আস সালামু আলাইকুম।মুহতারাম আমার এক নিকটাত্মীয়ার স্বামী অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার। বর্তমানে তিনি পেনশন পান। তার দুই ছেলের বড় ছেলে ব্যাংকের আইটি সেক্টরে কাজ করে। কিন্তু ছোট ছেলের উপার্জন হালাল। বিভিন্ন সময়ে ঐ আত্মীয়া আমাদের হাদিয়া দেন ও কুরবানীর গোশত দেন।
এখন কি এসব গ্রহণ হালাল হবে?

আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য তাদের বাসায় যেতে হয়, এক্ষেত্রে কি করণীয়?  যদিও কম যাওয়া হয়।

নামাজের মধ্যে যদি সন্দেহ হয় কোন রাকাতে এক সিজদা দেয়া হয়েছে তবে কি সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে নাকি নামাজ পুনরায় পড়তে হবে?

নফল বা সুন্নাত নামাযে যদি ভুলবশত কোন বাড়তি দোয়া যেমন দরুদ শরীফের পর আযানের পরের দোয়া পড়ে ফেললে কি করণীয়?

1 Answer

0 votes
by (561,180 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

https://www.ifatwa.info/1900 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে  যে,

فى الفتاوى الهندية- أهدى إلى رجل شيئا أو أضافه إن  كان غالب ماله من الحلال فلا بأس إلا أن يعلم بأنه حرام ، فإن كان الغالب هو الحرام ينبغي أن لا يقبل الهدية ، ولا يأكل الطعام إلا أن يخبره بأنه حلال ورثته أو استقرضته من رجل ، كذا في الينابيع

যদি এমন কেউ কাউকে কিছু হাদিয়া দেয়,যার অধিকাংশ সম্পত্তি হালাল,তাহলে সেই মালকে গ্রহণ করা নাজায়েয নয়।তবে যদি সে জানতে পারে যে,দাতা হারাম থেকে দিচ্ছে তাহলে এমতাবস্থায় সেটা জায়েয হবে না।আর যদি তার মালের অধিকাংশই হারাম থাকে,তাহলে এমন ব্যক্তির হাদিয়া গ্রহণ জায়েয হবে না।এমন ব্যক্তির ওখানে আহার করাও যাবে না, যতক্ষণ না সে হালাল খাবারের সংবাদ দিচ্ছে বা এটা বলছে যে,সে ধার করে নিয়ে এসে আহার করাচ্ছে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪২)

হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
 (معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34، الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে সেটি ফকিরদেরকে সদকাহ করে দিতে হবে।
(মাআরিফুস সুন্নাহ ১/৩৪)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির ছোট ছেলের উপার্জন যেহেতু হালাল।  সুতরাং তার বাসায় গেলে শর্ত দিবেন যে ছোট ছেলের উপার্জন থেকেই যেনো আপনাদের খাওয়ানো হয়। ছোট ছেলের উপার্জন থেকেই যেনো আপনাদের হাদিয়া দেয়া হয়।

নতুবা তাদের বাসায় দাওয়াত খাওয়া জায়েজ হবেনা।  এমতাবস্থায় খাবার খেলে বা হাদিয়া নিলে সমপরিমাণ টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।

★তারা কুরবানীর গোশত দিলে জেনে নিতে হবে যে সেই কুরবানীতে ঐ মহিলার স্বামী ও বড় ছেলের টাকা ছিলো কিনা?
যদি না থাকে,সম্পূর্ণ ছোট ছেলের টাকা থাকে,তাহলে সেই গোশত নিতে পারবেন।

সেই কুরবানীতে ঐ মহিলার স্বামী ও বড় ছেলের টাকা থাকে,তাহলে সেই গোশত নিতে পারবেননা।

নিলে সমপরিমাণ টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।

(০২)
নামাজে সেজদার সংখ্যা নিয়ে কোনো ব্যাক্তির যদি সাধারণত সন্দেহ হয়েই থাকে,তাহলে শরীয়তের বিধান হলোঃ
কম সংখ্যাকে ধরে নিয়ে সে উক্ত সেজদাহ মনে পড়ার সাথে সাথেই আদায় করে নিবে এবং শেষে সেজদায়ে সাহু দিবে।

আর যদি প্রথমবার এমন সন্দেহ হয়ে থাকে, তাহলে তিনি আবার প্রথম থেকে শুরু করে নতুনভাবে নামাজ পড়ে নিবেন।

বিস্তারিত জানুনঃ 

(০৩)
উক্ত নামাজ হয়ে যাবে।
তবে জেনে বুঝে আর এমনটি করবেননা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...