আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
111 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (14 points)
আসসালামুআলাইকুম,

১)তাক্বলীদ গায়র শাখসী কখন জায়েজ হয়?

২)তাক্বলীদ গায়র শাখসী করা কি কবিরা গুনাহ?

৩)তাক্বলীদ গায়র শাখসী করে যে নামাজ,রোজা,হজ্জ ইত্যাদি পালন করা হয় তা কি কবুল হওয়ার সম্ভাবনা আছে?

৪)কেউ যদি সকল বিষয়ে হানাফি মাযহাব ফলো করে কিন্তু পানির পবিত্রতা ও কাপড় পবিত্র করার পদ্ধতি মালেকি মাযহাব অনুযায়ী অনুসরণ করে তাহলে কি তার কবিরা গুনাহ হবে?এক্ষেত্রে কি তার নামাজ,রোজা ও অন্যান্য ইবাদত আদায় হবে?

৫)একজনের পরিবারের লোকজন পবিত্রতার বিষয়ে হানাফি মাযহাবকে যথাযথ ফলো না করায় এবং দায়সারাভাবে পবিত্রতা অর্জন করায় সে অনেক বিপদে পড়েছে এমনকি সে তার ফরজ নামাজগুলো ও আদায় করতে পারছে না ।এমতাবস্থায় সে দেখে যে মালেকি মাযহাবের পবিত্রতার অংশটি মেনে চললে তার পরিবারের সাথে মিলে চলা সহজ হয়।এক্ষেত্রে কি সে কেবল পবিত্রতার ক্ষেত্রে মালেকি মাযহাব অনুসরণ করে তাহলে কি তার গুনাহ হবে এবং তার ইবাদতগুলো শুদ্ধ হবে?

বিষয়গুলো একজন ভাইয়ের জানা প্রয়োজন

1 Answer

0 votes
by (708,320 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহাম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/1936 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
তাকলীদ(মুজতাহিদের অনুসরণ) করা ফরয।এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
فَاسْأَلُواْ أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ
জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে।(সূরা নাহল-৪৩)

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَأُوْلِي الأَمْرِ مِنكُمْ
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। (সূরা নিসা-৫৯)
উক্ত আয়াতে اولي الامرউলূল আমর এর ব্যখ্যায় হযরত জাবের রাযি, হযরত ইবনে আব্বাস রাযি,আ'তা রাহ,মুজাহিদ রাহ,যাহহাক,আবুল আলিয়া রাহ,হাসান বসরি রাহ সহ অসংখ্য সাহাবা, তাবেঈন ও তাবে তাবেঈন উল্লেখ করেন যে,এখানে উলূল আমর দ্বারা খুলাফা,উলামা,ফুকাহা উদ্দেশ্য।স্বয়ং আহলে হাদীসদের ইমাম নাওয়াব সিদ্দিক হাসান খান রাহও এ ব্যখ্যাকে নিজ তাফসীরের কিতাবে উল্লেখ করেছেন।
তাছাড়া হাদীসে এসেছে,
انما شفاء العي السوال
বক্রতা বা অজ্ঞদের শে'ফা হল,তারা জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা করবে।
এখন প্রশ্ন হল জ্ঞানী কারা?সমাজে যাদেরকে আলেম বলা হয়,তারাই কি জ্ঞানী?না এর জন্য বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যর প্রয়োজন রয়েছে? বিস্তারিত জানতে উপরের লিংকে ক্লিক করুন।

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১)
যাদের ইজতেহাদের যোগ্যতা রয়েছে, তাদের জন্য তাকলীদে গায়রে শাখসী করা জায়েয হবে।

(২)
জনসাধারণ যদি তাকলীদে গায়রে শাখসীর অনুসরণ করে, তাহলে এটা প্রবৃত্তির অনুসরণ হবে।আর প্রবৃত্তির অনুসরণ গোনাহ। সুতরাং জনসাধারণের জন্য তাকলীদে গায়রে শাখসী কবিরাহ গোনাহ।

(৩)
কবুল হবে না, এরকম বলা যাবে না। কবুল হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে।কবুল হওয়া বা না হওয়া, সম্পূর্ণ আল্লাহর ইচ্ছা।

(৪)
https://www.ifatwa.info/402 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছিলাম যে,
মুজতাহিদ নয় এমন সবার জন্য মাযহাব মানা ফরয।বিস্তারিত জানতে দেখুন!জাস্টিস আল্লামা তাক্বী উসমানী রচিত"মাযহাব কি ও কেন?"

মাযহাব অর্থ হল,কুরআন-হাদীসের ব্যাখা জানতে কারো সাহায্য গ্রহণ করা।অর্থাৎ যারা নিজে সরাসরি কুরআনের আয়াত বা হাদীসে রাসূল এর মর্মার্থ বুঝতে পারেন না, তারা অন্যর সাহায্য নিয়ে কুরআন-হাদীস এর মর্মার্থ বুঝবেন,এবং সে অনুযায়ী আ'মল করবেন।

সুতরাং কোনো এক আলেম বা মৌলিক মূলনীতি এক এমন একদল আলেমের কুরাআন-সুন্নাহ অনুসৃত মত ও পন্থাকে অনুসরণ করার নামই হল মাযহাব। এক্ষেত্রে সকল মাস'আলায় শুধুমাত্র একজনকেই অনুসরণ করতে হবে।নতুবা একেকজনকে একেক মাস'আলা অনুসরণ মূলত প্রবৃত্তির অনুসরণ হবে,।এজন্য এমন কোনো এক আলেম বা মূলনীতি এক এমন একদল আলেমকে অনুসরণ করতে হবে যাদের প্রায় সকল বিষয়ে ইজতেহাদ রয়েছে।এই হল মাযহাব এর তাৎপর্য।

সুতরাং
হানাফি হয়ে নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে মালিকি মাযহাবের অনুসরণ করা যাবে না। করলে গোনাহ হবে।ইবাদত কবুল হবে কি না? তা অাল্লাহই ভালো জানেন।

(৫)
নিজ সুবিধা অসুবিধার জন্য ভিন্ন মাযহাবকে গ্রহণ করা যাবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (708,320 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...