আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
66 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম হুজুর
১) আমি জীবনে অনেক বড় পাপ করেছি,অনেক পাপ করছি,আমি খুবই আতঙ্কিত হুজুর, এবং প্রতিনিয়ত আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইছি আর বলি যে আল্লাহ যেনো আমাকে নিস্পাপ করে ইমানের সহিত শহীদি মৃত্যু দেন,এবং বিনা হিসাবে জান্নাতে দিয়ে দেন,আল্লাহ কি আমাকে ক্ষমা করে দিয়ে আমার এই দোয়া কবুল করবেন না হুজুর, আমি কি এরপরেও নিজের কৃতকর্মের শ্বাস্তি পাবো হুজুর!?
২) আমার বাবা মায়ের ডিভোর্স হয়েছে অনেক আগেই, আমি আমার ফুপিদের সাথে বছরে একবার হলেও কল দিয়ে কথা বলি,কিন্তু তারা আমাকে পছন্দ করেনা,আমি যদি আর কল না দেই, তবেকি আমার জান্নাতে যাওয়া হবেনা হুজুর!?
৩) কেওযদি এমন করে বলে যে আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে তোমার বাবার রক্ত খাবে নাউজুবিল্লাহ!  তবেকি সেই সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিৎ?!
৪)হুজুর আমার ভবিষ্যতের কথা ভাবলে খুব ভয় হয়, মনেহয় যে আমাি যদি প্রকৃত দ্বীনদার,তাকওয়াবান কাওকে না পাই,অথবা বিয়ের পর ভালোভাবে স্বামীর হক পূরণ করতে না পারি তখনতো আমার জান্নাতে যাওয়া হবেনা হুজুর আমি যদি ঠিকভাবে বিয়ের পর আল্লাহর এবাদত করতে না পারি !  আবার মনে হয় আমার সন্তাদের যদি আমি ভালোভাবে লালন পালন করতে না পারি, ওরা যদি মুত্তাকী না হয় তখনতো আমার মৃত্যুর পরেও আজাব হবে, এগুলো মনে করলে আমার মনে হয় যে আমি কোনোদিন বিয়ে না করে বরং একাই থেকে যাই,যেনো জান্নাতে যাওয়া সহজ হয়!

বর্তমানে আমি আল্লাহর রহমতে মায়ের সাথে খুবই সহজ সরল জীবন যাপন করছি হুজুর, তখন যদি আমার জীবন কঠিন হয়ে পরে!  হুজুর বিয়ে করা কি বাধ্যতামূলক!!!?

 ৫) অতিতে আমি অনেক গীবত করেছি,   মিথ্যা বলেছি হুজুর, তাদের কাছে গিয়ে ক্ষমা চাওয়ার কোনো উপায় নেই হুজুর!  আমি কি ক্ষমা পাবোনা হুজুর!??  আল্লাহ কি আমাকে এরজন্য শ্বাস্তি দিবেনিই!!?? হুজুর আমি আল্লাহকে অনেক বলেছি যে আমি আর কোনোদিন এমন করবোনা,আমি প্রতিনিয়ত ক্ষমা চাইছি!!  এখন আমার কি উপা হুজুর!  আমি মৃত্যুর কথা স্মরণ হলেই আর ঠিক থাকতে পারছিনা! হুজুর দয়াকরে সমাধান দিন।
closed

1 Answer

0 votes
by (680,960 points)
selected by
 
Best answer
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
    
إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَٰئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا [٤:١٧] وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ وَلَا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا [٤:١٨

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী,রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে,এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়,তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}

عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ، كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ»

হযরত ইবাদা বিন আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, গোনাহ থেকে তওবাকারী গোনাহ করে নাই ব্যক্তির মত হয়ে যায়। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪২৫০] 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
খাঁটিভাবে তাওবা করলে আল্লাহ্ তাআলা অতীতের ছোট বড় সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেন। তবে বান্দার কোন হক নষ্ট করে থাকলে তাওবার পাশাপাশি তাকে তার হক তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া জরুরী।

 তওবা তিনটি জিনিসের সমন্বয়-
(বান্দার হক থাকলে আগে সেটি আদায় করে আসতে হবে,বা তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে আসতে হবে।)

এক. পূর্বের গোনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া। আর অপরের হক নষ্ট করলে তা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া।

দুই. ভবিষ্যতে গোনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করা।

তিন. আল্লাহ্ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।

আরো জানুনঃ 
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
উপরে উল্লেখিত শর্তাবলী মেনে তওবা করলে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে ক্ষমা করবেন। 
আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করলে আপনার কৃত কর্মের শাস্তি ভোগ করতে হবেনা।
আপনার দোয়া আল্লাহ তায়ালা কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। 

(০২)
সামনা-সামনি দেখা সাক্ষাৎ হলে বা তারা কল দিলে সালাম দিবেন,কথা বলবেন।

প্রয়োজনে কল দিতে হলে কল দিয়ে কথা বলবেন। 

সামনা-সামনি দেখা না হওয়ায় কথা না বলা হলে সমস্যা হবেনা।

(০৩)
তবুও সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিৎ নয়।
জায়েজ নয়।
সামনা-সামনি দেখা না হওয়ায় কথা না বলা হলে সমস্যা হবেনা।
সামনা-সামনি দেখা সাক্ষাৎ হলে বা তারা কল দিলে কমপক্ষে সালাম দিবেন।

(০৪)
ব্যাক্তি বিশেষ বিবাহের হুকুম বিভিন্ন হয়।
কাহারো জন্য ওয়াজিব,কাহারো জন্য সুন্নাত,কাহারো জন্য মাকরুহ,কাহারো জন্য হারাম।

বিবাহ না করে গুনাহে জড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকলে বিবাহ করা ওয়াজিব।

বিবাহ না করে গুনাহে জড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকলে বিবাহ করা সুন্নাত।

(০৫)
তাদেরকে কাছে গিয়ে/ফোনে/অন্যের মাধ্যমে শুধু এতটুকু বলবে যে চলতে ফিরতে,উঠা বসায়,কথাবার্তায় হক নষ্ট করে থাকতে পারি,আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন।

স্পষ্ট আকারে গীবতের কথা না বললেও চলবে।

এরপর তারা ক্ষমা করে দিলে আর কোনো সমস্যা থাকবেনা।

তাদের সাথে যোগাযোগ করার কোনো মাধ্যম না থাকলে হাজারো চেষ্টার পরেও তাদের খোজ না পেলে সেক্ষেত্রে নিজের ও তাদের জন্য ইস্তেগফার পাঠ করবেন। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: "إِنَّ مِنْ كَفَّارَةِ الْغِيبَةِ أَنْ تَسْتَغْفِرَ لِمَنِ اغْتَبْتَهٗ تَقُولُ: اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لَنَا وَلَهٗ. رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ الدَّعَوَاتِ الْكَبِيرِ".

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ গীবতের কাফফারাহ্ হলো, গীবতকারী যার গীবত করেছে, তার জন্য মাগফিরাত প্রার্থনা করবে এবং এভাবে বলবে, হে আল্লাহ! আমাকে এবং তাকে ক্ষমা করো।
(আদ্ দা‘ওয়াতুল কাবীর লিল বায়হাক্বী ৪৭৮,মেশকাত ৪৮৭৭)

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (11 points)
আলহামদুলিল্লাহ! জাযাকাল্লাহু খাইরান হুজুর!  আপনাদের কাছে চিরকাল ঋণী হুজুর! আপনাদের জন্য দোয়া ছাড়া আর কোনো কিছু দেবার ক্ষমতা নেই হুজুর! আমার জন্যেও  অনুগ্রহ করে দোয়া  করবেন হুজুর আমি যেন আল্লাহর রহমতে জাহান্নাম ও আল্লাহ তায়ালার শ্বাস্তি থেকে বাচতে পারি!
by (680,960 points)
ফি আমানিল্লাহ 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...