আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
140 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)

আসসালামু আলাইকুম হুজুর আমার কিছু প্রশ্ন ছিল।

১. মাঝেমাঝে এমনিই এক হাতের দুই আঙ্গুল লাগিয়ে ঘষা দিই,কারণ ছাড়াই এক হাত দিয়ে অন্য হাতের আঙ্গুল ধরি, বসার সময় পা দুইটা ভালো লাগে বলে নাড়াতে থাকি, হাত পায়ের আঙ্গুল এমনিতেই নাড়াতে থাকি তবে কি গুণাহ হবে?কারণ, এগুলো তো সম্ভবত অনর্থক কাজ।

২. জামায়াতে ইমামতিতে ভুল করে আস্তে আল্লাহু আকবার বলার পর আবার যদি আবার জোরে আল্লাহু আকবার বলি তবে কি সাহু সিজদা দিতে হবে?

৩.নামাজে ৩ বার হাত শুধু নাড়ালে নামাজ কি ভেঙ্গে যাবে?

৪.কয়েকজন মিলে যদি গুণাহ বিষয়ে যেমন গান বাজনা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করলে কেউ যদি তা শুনে তবে কি তার গুণাহ হবে?

৫.নামাজে সুরা,দুআ এগুলোর বাংলা অর্থ কল্পনা করা যাবে? উত্তর হ্যা বা না হলে তা কি জামায়াতের নামাজের সময় একই বিধান হবে?

৬.জামাআতে নামাজে তেলাওয়াত কৃত সুরা শুনে বাংলা উচ্চারণ মনে মনে কল্পনা করা যাবে?
৭.একাকী নামাজে কি সুরা, দুআর বাংলা উচ্চারণ মনে মনে কল্পনা করা যাবে?

৮.নামাজে "রা" এর উচ্চারণ এর ক্ষএত্র জিহ্বার আগা যদি তালুতে লাগিয়ে উচ্চারিত করি তবে কি নামাজে সমস্যা হবে?

৯.আম্মু বা আব্বুর সাথে কথা বলার সময় অনেক ক্ষেত্রে ভুল করে রাগে একটু শক্ত ভাষায় কথা বলি তবে তারা তা আমলে নেয় না অর্থাৎ কষ্ট পায় না আমিও বুঝার পর তা থেকে বিরত থাকি এক্ষেত্রে কি গুণাহ হবে ?আর গুণাহ হলে বাবা মার কাছে মাফ চেতে হবে?

১০.ধরুন নামাজে সুরা বুরুজ এর ৫ আয়াত পড়ার পর ভুল করে বা ইচ্ছা যদি সুরা ত্বরিক এর কোন আয়াত তেলাওয়াত করি নামাজে কি সমস্যা হবে? উত্তর হ্যা বা না হলে এটি কি সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
এক্ষেত্রে গুনাহ হবেনা।
এগুলো অনার্থক কাজ।

(০২)
এক্ষেত্রে সেজদায়ে সাহু দিতে হবেনা 

(০৩)
নামাজের ভিতর নড়াচড়া করা যাবেনা।
এক রুকন সমপরিমাণ এমনটি করলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ    
সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের নবীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন সাতটি (অঙ্গের) ওপর সিজদা করে এবং নামাজে চুল বা কাপড় না গুটায়। -সুনানে আবু দাউদ: ২/১৪

নির্ভরযোগ্য বর্ণনায় এসেছে, বিখ্যাত তাবেয়ি মুজাহিদ (রহ.) বলেন, হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) ও হজরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রা.) যখন নামাজে দাঁড়াতেন তখন মনে হত একটি কাঠ মাটিতে গেড়ে দেওয়া হয়েছে। -মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৭৩২২

প্রখ্যাত তাবেয়ি আমাশ (রহ.) থেকে নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) যখন নামাজে দাঁড়াতেন তাকে দেখে মনে হত যেন একটি পড়ে থাকা কাপড়। -মুসান্নাফ আবদুর রাজ্জাক: ৩৩০৩।

আমলে কাসীরের অনেক সংজ্ঞা রয়েছে,তার মধ্যে একটি হলোঃ-
ধারাবাহিক তিনবার হারকাত (নড়াচড়া, চুলকানো,কাপড় বা অঙ্গ নিয়ে খেলায় মত্ত হওয়া) অর্থাৎ এই তিন হারকাত ধারাবাহিক ভাবে কোনো এক রুকুনের মধ্যে না হওয়া।যদি এমন হয় তাহলে এটা 'আ'মলে কাছির'।নতুবা সেটা আ'মলে ক্বালীল। 

আমলে কাছির সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
নামাজে ৩ বার হাত শুধু নাড়ালে নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।

এখানে মাসয়ালা হলোঃ-
আপনি যদি তিনবার سبحان ربي الأعلي  বলা সমপরিমাণ সময়ের মাঝেই তিন বার হাত দিয়ে একটি স্থান বা একাধিক স্থান না চুলকান,বরং এক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশি সময় হয়,সেক্ষেত্রে আপনার নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।
নামাজ শুদ্ধ হয়ে যাবে।

তিনবারের অধিকবার চুলকানোর ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখবেন যে ধারাবাহিক চুলকানোর সময়ে  سبحان ربي الأعلي  বলা সমপরিমাণ সময়ের মাঝেই যেনো তিনবার চুলকানো না হয়। তাহলে নামাজ হবে।

(০৪)
গুনাহ হবেনা।
এক্ষেত্রে কেউ যেনো নিজ গুনাহ প্রকাশ না করে। গানের অংশ না গায়।

(০৫)
হ্যাঁ, কল্পনা করা যাবে।
জামায়াতের নামাজের সময় একই বিধান হবে।

(০৬)
হ্যাঁ, মনে মনে কল্পনা করা যাবে।

(০৭)
হ্যাঁ, মনে মনে কল্পনা করা যাবে।
তবে চুপ থাকা যাবেনা।

(০৮)
এক্ষেত্রে নামাজের সমস্যা হবেনা। 

(০৯)
এক্ষেত্রে ধমকের স্বরে কথা বললে গুনাহ হবে।
তাদের থেকে মাফ চেয়ে নিতে হবে।

(১০)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে নামাজের সমস্যা হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...