আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
88 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম হুজুর আমার কিছু প্রশ্ন ছিল।

১.আমার ফজরের নামাজ কাযা হয়েছিল।পরে যোহরের নামাজ পড়ার পর আমার গোসল ফরজ হয়। কিন্তু বিষয়টি ভুলে গিয়ে আমি আসর,মাগরিব,এশার নামাজ পড়ে ফেলি । এরপরের দিন ফজরের নামাজ কাযা হলে।আমি যোহরের আগে তা আদায় করি তবে ঐ নামাজে সাহু সিজদাহর সময় সম্ভবত কাপড় পিঠ থেকে সড়ে যায় পরবর্তীতে আমি তা ঠিক করি তবে কাপর ঠিক হয়েছে কি না তা নিয়ে সন্দেহে আছি।আর কাপড় পিঠ থেকে সড়ে যাওয়ায় আমার সতর খুলে গেছে কিনা সন্দেহ হয়েছে। তবে নামাজ টি আদায় করেছি।

এই নামাজ টি আদায় হয়েছে?

২.এর পরের দিন আবারো ফজর কাযা হয়ে যায় যা আদায় করেনি। তারপর আবারো কাযা হয়ে যায়।এই কাযা নামাজ আদায় করা হয়নি।এরপরের দিন ফজর ঠিকমত পড়ি । কিন্তু আবার আজকে ফজরের নামাজ কাযা হয়ে যায়।আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কালকে যোহরের আগে প্রথম দিনের কাযা হওয়া ফজর ও ফরজ গোসল না করায় যে নামাজ কাযা হয় তা প্রথমে পড়ব।আর ২য় দিনের নামাজ টি আদায় না হলে আমি কাযা পড়ে ফেলব।আর ৩য় দিনের ও ৫ম দিনের কাযা করা নামাজটি আমি কাযা আদায় করব। আমার প্রশ্ন হল এভাবে করলে কি আমার সব নামাজ আদায় হবে?আর এর আগে যে নামাজগুলো পড়ে ফেলেছি সেগুলোও কি আদায় হবে?

৩.আমরা জানি ফরজে আমালীর ব্যাপারে জানতে না চাইলে তা কুফরে আকবার।এখন কেউ যদি ফরজে আমালির ব্যাপারে জানতে চায় কিন্তু অলসতা বা গুণাহে লিপ্ত থাকার কারণে জানার চেষ্টা করেনি এরজন্য কি তার কুফরে আকবার হয়ে সে কাফের হয়ে যাবে?

৪.আমি নামাজ সম্পর্কে,রোজা সম্পর্কে যে মাসায়েল জানতে চাই তা কি ফরজে আমালীর অন্তর্ভুক্ত?

৫.এখানে ফরজে  আমালি বলতে কি শুধু নামাজ রোজা,হজ ইত্যাদি এর নিয়ম নাকি এর সাথে সংশ্লিষ্ট মাসায়েল ফরজে আমালীর অন্তর্ভুক্ত? যেমন নামাজ পড়ার নিয়ম নীতি সম্পর্কে জানে। কিন্তু নামাজ সংশ্লিষ্ট মাসায়েল যেমনটা আমি ১ ও ২ নং প্রশ্নে জিজ্ঞাসা করলাম তা ফরজে আমালীর অন্তর্ভুক্ত হবে?

৬.ফরজে আমালির কিছু বিষয় যা আমার প্রয়োজন নয় যেমন হজের নিয়ম।তা আমার আপাতত প্রয়োজন নেই কারণ আমার উপর সম্ভবত হজ ফরজ নয়। এরকম কোন ফরজে আমালীর বিষয় না জানতে চাওয়া কি কুফরে আকবার?

৭. কবিরা গুনাহ,সগীরা গুণাহ,ইত্যাদি বিষয় কি ফরজে আমালীর অন্তর্ভুক্ত?

৮.কোন কিছু হারাম , নাজায়েজ বলতে  কি তা কবিরা গুনাহ কে বুঝানো হয় ?

৯.নামাজে সিজদা দেওয়ার পর মাথায় ঘাম থাকার কারনে যদি মাথা একটু সামনে চলে যায় নামাজ কি ভেঙ্গে যাবে?

১০.নামাজের সময় আজকে ডান পায়ে ব্যাথা থাকায়  ও ক্ষতি হবে এই আশংকায় ডান পা একটু উপরে উঠিয়ে অর্থাৎ আঙুলের উপর ভর করে দাঁড়িয়েছি ও বৈঠকে ডান পা বাঁকিয়ে বসেছিলাম। এতে নামাজ কি আদায় হয়েছে?

১১.পায়ে ব্যাথা থাকার কারণে একবার এশার নামাজ শুয়ে পড়ে ফেলেছি। কিন্তু পড়ে বুঝতে পেরেছি যে আমি চাইলে বসেও নামাজ পড়তে পারতাম তাই আমার নামাজ কি আদায় হয়েছে?

১২. নামাজে কোন কারণ ছাড়া সাহু সিজদা দিলে নামাজে কোন সমস্যা বা গুণাহ হবে?

১৩.শিরকের আকবার  কি কুফরে আকবার এর অন্তর্ভুক্ত?

১৪. লোক দেখানো ইবাদত- আমল শিরকে আকবার। এখন একবার আমি ভুল করে লোক দেখানো আমল হিসেবে দৃষ্টি সংযত রেখেছিলাম। তখন আমি গুণাহে লিপ্ত ছিলাম। কিন্তু সবাই আমাকে ভালো হিসেবে চিনে থাকায় আমি তখন নিন্দা থেকে বাঁচতে দৃষ্টি সংযত করেছি। কিন্তু পরবর্তীতে মনে হল যে তা তো শিরকে আকবার তাই আমি তা থেকে বিরত থাকি।এর ফলে কি আমার শিরকে আকবার হয়েছে?

১৫.কোন আমল ইবাদত আল্লাহ তায়ালার জন্য ও লোক দেখানোর জন্য করলে তা কি শিরকে আকবার হবে নাকি ছোট শিরক রিয়া হবে?

1 Answer

0 votes
by (675,800 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنِ ابْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ قَفَلَ مِنْ غَزْوَةِ خَيْبَرَ فَسَارَ لَيْلَةً حَتَّى إِذَا أَدْرَكَنَا الْكَرَى عَرَّسَ وَقَالَ لِبِلَالٍ " اكْلأْ لَنَا اللَّيْلَ " . قَالَ فَغَلَبَتْ بِلَالاً عَيْنَاهُ وَهُوَ مُسْتَنِدٌ إِلَى رَاحِلَتِهِ فَلَمْ يَسْتَيْقِظِ النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم وَلَا بِلَالٌ وَلَا أَحَدٌ مِنْ أَصْحَابِهِ حَتَّى إِذَا ضَرَبَتْهُمُ الشَّمْسُ فَكَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَوَّلَهُمُ اسْتِيقَاظًا فَفَزِعَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " يَا بِلَالُ " . فَقَالَ أَخَذَ بِنَفْسِي الَّذِي أَخَذَ بِنَفْسِكَ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللهِ فَاقْتَادُوا رَوَاحِلَهُمْ شَيْئًا ثُمَّ تَوَضَّأَ النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم وَأَمَرَ بِلَالاً فَأَقَامَ لَهُمُ الصَّلَاةَ وَصَلَّى بِهِمُ الصُّبْحَ فَلَمَّا قَضَى الصَّلَاةَ قَالَ " مَنْ نَسِيَ صَلَاةً فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللهَ تَعَالَى قَالَ (أَقِمِ الصَّلَاةَ لِلذِّكْرَى) " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বার যুদ্ধ হতে প্রত্যাবর্তনের একরাতে বিরতিহীনভাবে সফর করতে থাকলে আমাদের ক্লান্তি ভাব দেখা দেয়। ফলে শেষ রাতে তিনি যাত্রা বিরতি করেন এবং বিলাল (রাঃ)-কে বলেনঃ তুমি জেগে থাকবে এবং রাতের দিকে লক্ষ্য রাখবে। কিন্তু বিলাল (রাঃ)-ও নিদ্রাকাতর হয়ে তার উটের সাথে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ফলশ্রুতিতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, বিলাল এবং তাঁর সাহাবীদের কারোরই ঘুম ভাঙ্গল না। অতঃপর সূর্যের তাপ তাদের গায়ে এসে পড়লে সর্বপ্রথম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাগলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অস্থির হয়ে বললেনঃ কি হলো বিলাল! বিলাল বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! যে সত্তা আপনাকে অচেতন রেখেছেন, আমাকেও তিনিই অচেতন রেখেছেন। অতঃপর তারা নিজেদের বাহন নিয়ে কিছু দূর অগ্রসর হওয়ার পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অযু করলেন এবং বিলালকে নির্দেশ করলে বিলাল ইক্বামাত দিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকলকে নিয়ে ফজরের সলাত আদায় শেষে বললেনঃ কেউ সলাত আদায় করতে ভুলে গেলে যেন স্মরণ হওয়া মাত্রই উক্ত সলাত আদায় করে নেয়। কেননা আল্লাহ বলেন, ‘‘আমার স্মরণার্থে সলাত প্রতিষ্ঠা কর।’’ (সূরা ত্ব-হা ১৪)
(আবু দাউদ ৪৩৫)

https://ifatwa.info/5512/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
বালিগ হওয়ার পর যার জীবনে ছয় ওয়াক্তের বেশী নামায কা'যা হয়নি, সেই ব্যক্তিই সাহেবে তারতীব। সুতরাং কেউ যদি টানা কয়েক বছর নামায না পড়ে তাকে এবং পরবর্তীতে নিয়মিত নামায পড়া শুরু করে, এবং তখন ১/২ ওয়াক্ত নামায কা'যা হয়,তাহলে ঐ ব্যক্তি সাহেবে তারতীব হবে না। কেননা ঐ ব্যক্তির অধীনে বা জিম্মায় অসংখ্যাত  নামায কা'যা রয়েছে। তাই ঐ ব্যক্তিকে সাহেবে তারতীব বলা যাবে না। সাহেবে তারতীব হওয়ার জন্য ছয় ওয়াক্তের বেশী নামায কাযা হতে পারবে না বা জিম্মায় থাকতে পারবে না।
 
যদি কারো অনেক নামায কা'যা থাকে, এবং ঐ ব্যক্তি কা'যা আদায় করতে করতে ছয় ওয়াক্তের কম নামায তার জিম্মায় বাকী থাকে, তাহলে কি সে সাহেবে তারতীব হবে?
এ সম্পর্কে দু ধরণের বক্তব্য পাওয়া যায়, বিশুদ্ধ কথা হল, ঐ ব্যক্তিও সাহেবে তারতীব হিসেবে গণ্য হবে।
 
সাহেবে তারতীব ব্যক্তির জন্য তারতীব রক্ষা করা ওয়াজিব। অর্থাৎ প্রথমে কাযা নামায গুলো ধারাবাহিক আদায় করতে হবে। তারপর ওয়াক্তের নামায আদায় করতে হবে। উল্টো করলে ওয়াজিব তরকের গোনাহ হবে।
 
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
আপনি সাহেবে তারতিব না হয়ে থাকলে আপনার নামাজ আদায় হয়ে গিয়েছে। 

(০২)
হ্যাঁ,এভাবে সব নামাজের কাজা আদায় করে নিলে সব নামাজ আদায় হবে।

(০৩)
সে কাফের হয়ে যাবেনা।

(০৪)
ফরজ নামাজ ও ফরজ রোযা সম্পর্কে জানা ফরজ আমলের অন্তর্ভুক্ত । 

(৫. ৬.৭)
ফরজে আমালীর ব্যাপারে জানতে না চাইলে তা কুফরে আকবার নয়।

(০৮)
যেগুলোর নাজায়েজ হওয়ার বিষয়টু কুরআন হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত, সেগুলো করা কবিরা গুনাহ।

(০৯)
এতে নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।

(১০)
এতে নামাজ হয়েছে।

(১১)
হ্যাঁ, নামাজ হয়েছে।

(১২)
সাহু সেজদাহ ওয়াজিব না হওয়া সত্ত্বেও সাহু সেজদাহ দেয়া যাবেনা।

তবে এক্ষেত্রেও সেই নামাজ আদায় হয়ে যাবে।

(১৩)
হ্যাঁ। 

(১৪)
না,এতে শিরকে আছগার হয়েছে।
ছোট শিরক।

এক্ষেত্রে তওবা যথেষ্ট। 

(১৫)
এতে ছোট শিরক রিয়া হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...