পাক-পবিত্রতা নিয়ে প্রশ্ন

Question

আসসালামু আলাইকুম।
 

১) বারান্দায় কাপড় মেলে দিয়েছিলাম সেখান থেকে পাখির বিষ্ঠা লাগে কাপড়ে। কোন পাখি বিটেছে তা অজানা। তবে বারান্দার রেলিং এ ছোট পাখিকে বসে থাকতে দেখেছিলাম একবার। বড় পাখি তো তেমন আমাদের এলাকায় দেখা যায় না। আর বড় পাখি বসার সম্ভাবনা কম। এই কাপড়ে বিষ্ঠা লাগানো অংশ নাপাক নাকি পাক?

 

২) মুরগির ডিমে অনেক সময় কিছুটা বিষ্টার মতন লেগে থাকে। যদিও বেশিরভাগ সময় একটা সাদা রেখা বা দাগ বাহিরের অংশে থাকে। এটা কে কি নাপাক ধরবো?  

 

৩) ঘরে হাইকমোড আছে। হাই কমোডের সিটে পেশাব থাকতে পারে। দেখা গেলো কেউ দাড়িয়ে পেশাব করলো বা বসে করলেও ছিটা হাই কমোডের সিটে পড়তে পারে। তবে ঘরের সবাই বলে যে তারা দাঁড়িয়ে কেউ পেশাব করা না বরং বসে করে। কিন্তুু অনেকসময় বাথরুমের বাহির থেকে শব্দ শুনে মনে হয় যে দাঁড়িয়ে প্রসাব করছে। এখন প্রতিবার বাথরুমে গেলে হাই কমোডের সিট কি ধুয়ে বসতে হবে? 

 

৪) পাবলিক প্লেসে টয়লেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কি ধরে নেব আশে পাশে নাপাক লেগে আছে? নাকি নিজে জানিনা দেখে সবকিছুকে পাক ধরে নেব?

 

জাযাকাল্লাহু খাইরান। 

Answer 1

জবাবঃ-

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 

بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)

https://ifatwa.info/67375/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

বিশিষ্ট তাবেয়ি শুবাহ (রহ.) বলেন-

عَنْ شُعْبَةَ ، قَالَ : سَأَلْتُ الْحَكَمَ ، وَحَمَّادًا عَنْ خُرْءِ الطَّيْرِ ؟ فَقَالاَ : لاَ بَأْسَ بِهِ

‘আমি হাকাম ও হাম্মাদ (রহ.)কে পাখির বিষ্ঠা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি বলেছেন: কোন সমস্যা নেই।’ [মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস: ১২৬৬]

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

পাখির ক্ষেত্রে তাদের বিষ্ঠা নাপাক হওয়ার মূলনীতি হলোঃ

যেসব পাখির গোশত খাওয়া হালাল এবং উড়ে বেড়ায় সেগুলোর বিষ্ঠা নাপাক নয়।

রদ্দুল মুহতার ১/৩২০.আহসানুল ফাতওয়া ২/৮৪.ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ ১/৩২২)

,

ফাতাওয়ায়ে শামীর ইবারতঃ

وفي “الدر المختار” مع “رد المحتار” 577:1، ط: الأزهر، ( وخرء ) كل طير لا يذرق في الهواء كبط أهلي (ودجاج ) أما ما يذرق فيه ، فإن مأكولا فطاهر وإلا فمخفف. وقال ابن عابدين رح تحت قوله: ( قوله : فإن مأكولا ) كحمام وعصفور .اهـ. 

সারমর্মঃ যেসব পাখি হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়,সেগুলোর গোশত খাওয়া যদি হালাল হয়,তাহলে তার বিষ্ঠা পাক।

অন্যথায় নাজাসাতে খফিফাহ।

গৃহপালিত হাঁস মুরগী এগুলো উড়তে পারেনা,এগুলোর বিষ্ঠা নাপাক।

বিস্তারিত  জানুনঃ

https://ifatwa.info/9976/

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ كُلِّ ذِي نَابٍ مِنَ السِّبَاعِ وَعَنْ كُلِّ ذِي مِخْلَبٍ مِنَ الطَّيْرِ

ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল প্রকার হিংস্র পশু এবং নখর ধারী পাখি (খেতে) নিষেধ করেছেন।”

[সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: ৩৫/ শিকার ও জবেহ কৃত জন্তু এবং যে সব পশুর গোশত খাওয়া হালাল]

সুতরাং যে সব পাখি পাঞ্জা দ্বারা শিকার ধরে খায় তা খাওয়া জায়েজ নয়। যেমন: শকুন, চিল, ঈগল, কাক, বাজ ইত্যাদি।

আরো জানুনঃ- 

https://ifatwa.info/60281/

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

আপনি বারান্দার রেলিং এ যে ছোট পাখিকে বসে থাকতে দেখেছিলেন,সেগুলোর গোশত খাওয়া কি হালাল?

যদি হালাল হয়,তাহলে প্রশ্নে উল্লেখিত বিষ্ঠা নাপাক নয়।

আর যদি যেসব পাখির গোশত খাওয়া হারাম,সেসব পাখি হয়ে থাকে,তাহলে উক্ত বিষ্ঠা নাজাসাতে খফিফাহ।

কাপড়ের যে অংশে নাপাকি লেগেছে,তার এক চতুর্থাংশের কম হলে মাফ।

নতুবা মাফ হবেনা।

কাপড়ের এক চতুর্থাংশ বলতে জামার হাতা ইত্যাদি প্রত্যেক অংশ আলাদা গননা করা হবে।

(০২)

হ্যাঁ, এটি নাপাক।

(০৩)

ঘরের সবাই যেহেতু বলেছে যে তারা দাঁড়িয়ে কেউ পেশাব করা না বরং বসে পেশাব করে,সুতরাং প্রমান ছাড়া অহেতুক টেনশন না করার পরামর্শ থাকবে। 

হ্যাঁ, যদি আপনি কমোডের উপর পেশাবের অস্তিত্ব (রঙ/গন্ধ) পান,সেক্ষেত্রে তাহা ধুয়ে বসবেন।

পরামর্শ থাকবে, যদি কমোডের সিট ভেজা থাকে,আর আপনার সন্দেহ হয় যে তাতে পেশাব আছে,তাহলে সেটি ধুয়ে বসবেন।

আর যদি কমোডের সিট শুকনো থাকে,সেক্ষেত্রে ধোয়ার প্রয়োজন নেই,এমনিতেই বসবেন।

(০৪)

আপনি একবার ফ্লোরে পানি ঢেলে দিয়ে টয়লেট ব্যবহার করবেন।