আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
64 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (7 points)

অনেক প্রবাসী ভাইয়েরা দেখা যায় বিদেশে বিকাশের ব্যবসা করে থাকেন। তো তাদের ব্যবসার পদ্ধতিটা হলো, প্রবাসী ভাই দেশের একজন বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে বিদেশে ব্যবসা করে থাকে। প্রবাসে যেসব ভাইয়েরা কাজ করেন, তাদের অধিকাংশই দেখা যায় বিকাশের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে বিদেশের বিকাশ ব্যবসায়ী তার মাসিক লেনদেনের পুরো টাকাটা দেশের বিকাশ এজেন্টকে ব্যাংকে পাঠিয়ে দেয়। তো প্রবাস যেই বিকাশ ব্যাবসায়ী আছেন উনি দেশের বিকাশ এজেন্ট কে সেই নাম্বার গুলো দেন এবং টাকার পরিমান গুলো বলে দেন, যেসব ভাইয়েরা বিকাশের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাতে চান। তো এটা হচ্ছে ব্যবসার ধরন। এভাবে কাউকে কোন কিছু ঠকানো হচ্ছে না। বিকাশ কোম্পানি প্লাস উভয়পক্ষই লাভবান হচ্ছে। যেহেতু এখানে কাউকে ঠকানো হচ্ছে না সেজন্য এখানে শরীয়তের কোন বিধি নিষেধ থাকার কথা না।

তো এখন বিষয় হচ্ছে, এই ব্যবসায়ীর পদ্ধতির ব্যাপারে বিকাশ হেল্প লাইনের সাথে কথা হয়েছে। তারা বলেছে এ পদ্ধতিটি তাদের নিয়মবহির্ভূত হিসেবে বিবেচিত হবে। তারা যে বিষয়গুলো বলেছে তা নিচে দেওয়া হলো:


# দুঃখিত, আপনার উল্লেখিত পদ্ধতিটি নিয়ম বহির্ভূত বলে বিবেচিত হবে।
# আপনার সুবিধার্থে আবারো জানাচ্ছি, প্রবাসী বাংলাদেশীরা শুধুমাত্র অনুমোদিত এবং তালিকাভুক্ত ফরেইন ব্যাংক, মানি ট্রান্সফার অর্গানাইজেশন(এমটিও) এবং মানি এক্সচেইঞ্জ হাউজগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রিয়জনের বিকাশ একাউন্টে টাকা পাঠাতে পারবেন।
# উপরোক্ত পদ্ধতি ছাড়া অন্য যেকোন পদ্ধতিতে বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো নিয়ম বহির্ভূত বলে বিবেচিত হবে।

এখন আমার করা প্রশ্ন হচ্ছে যে:
১. প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে: যেহেতু আমার করা উপরুক্ত সিস্টেমে কাউকে প্রতারিত বা ঠকানো হচ্ছে না। কিন্ত বিকাশ কোম্পানি যেহেতু এটা তাদের নিয়মের বহির্ভূত বলছে এক্ষেত্রে এখানে শরীয়তের বিধান কি হবে?


২. দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে: একজন বিকাশ এজেন্ট যেহেতু বিকাশ কোম্পানির হয়ে কাজ করতেছে। এক্ষেত্রে কি তার উপরোক্ত পদ্ধতিতে লেনদেন করা জায়েজ হবে? তার ওপর কি বিকাশের প্রত্যেকটা নিয়ম মানায় ফরজ? বিকাশ এজেন্ট কি সৌদি বিকাশ ব্যবসায়ীদের সাথে এভাবে ব্যবসা করতে পারবে?? বিকাশ কোম্পানি নিয়মের বহির্ভূত বলা সত্ত্বেও??


৩. তৃতীয় প্রশ্ন হচ্ছে: প্রবাস বিকাশ ব্যবসায়ী কি এভাবে ব্যবসা কনটিনিউ করতে পারবে কিনা? এভাবে ব্যবসা কনটিনিউ করা কি তার জন্য হারাম হবে??


* প্রিয় উওরদাতা উস্তায,  আশা করি উপরে বিষয়গুলো একটু মনোযোগ দিয়ে পড়ে বুঝে আমার তিনটা প্রশ্নেরই জবাব দিবেন

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم


https://ifatwa.info/87892/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
মহান আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেনঃ-

ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ

তরজমাঃ-হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু।(সূরা নিসা(২৯)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত,
عن ابن عباس قال;قال رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه و سلم 
  " ﻻ ﻳﺤﻞ ﻣﺎﻝ ﺍﻣﺮﺉ ﻣﺴﻠﻢ ﺇﻻ ﺑﻄﻴﺐ ﻧﻔﺲ ﻣﻨﻪ "
নবী কারীম সাঃ বলেনঃ"কোন মুসলমানের জন্য  অন্য কোনো মুসলমানের মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত হালাল হবে না।(তালখিসুল হাবীর-১২৪৯)

https://ifatwa.info/86133/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

ব্যাংকের টেলিগ্রাফিক ট্রান্সফার (টিটি) এবং ডাক বিভাগের মানি অর্ডারের সহজ বিকল্প হিসেবে বর্তমান মোবাইল ব্যাংকিং সেন্ড মানি ও ক্যাশ আউটের কাজ করে থাকে। ফিকহে ইসলামীর দৃষ্টিতে এটি ‘আলইজারাহ’-এর অন্তর্ভুক্ত। এক্ষেত্রে টাকা জমা/উত্তোলনকারী হচ্ছে শ্রম/সেবা গ্রহীতা বা ‘মুসতাজির’।আর এজেন্ট হচ্ছে শ্রম/সেবাদাতা যাকে বলা হয় ‘আজীর’ (বা মূল‘আজীরে’র প্রতিনিধি)।
এক সময়ে ডাক বিভাগের মানি অর্ডারকেও তখনকার উলামায়ে কেরাম এভাবে বিশ্লেষণ করেছিলেন। ‘আলইজারা’এর মৌলিক শর্তগুলো পাওয়া যাওয়ায় বিকাশ ব্যবসা জায়েয বলা যায়। তবে বিকাশ ব্যবসায়ী বা এজেন্টের জন্য কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখা জরুরী।

১. পার্সোনাল একাউন্টের মাধ্যমে ব্যবসা করা যাবেনা, কেননা এটি আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ।
২. সেন্ড মানির সময় গ্রাহক থেকে কোন চার্জ নেয়া বা ক্যাশ আউটের ক্ষেত্রে নির্ধারিত হারের চেয়েও বেশি রাখা যেমন হাজারে ১৮.৫০ টাকার জায়গায় ২০/- টাকা বা তার চেয়ে বেশি রাখা কোনোক্রমেই জায়েয হবে না। কেননা এখানে এজেন্ট হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানির নিযুক্ত শ্রম/সেবাদাতা প্রতিনিধি (উকীল)।
কোম্পানি কর্তৃক নির্ধারিত চার্জের বেশি নেওয়ার অধিকার তার নেই।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/36025

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

(০১) প্রশ্নের বিবরন মতে বিকাশ কোম্পানি যেহেতু এটিকে তাদের নিয়মের বহির্ভূত বলছে,সুতরাং বিকাশের মাধ্যমে এভাবে টাকা পাঠানো জায়েজ হবেনা।

(০২) প্রশ্নের বিবরন মতে তার জন্য উপরোক্ত পদ্ধতিতে লেনদেন করা জায়েজ হবেনা।

বিকাশ এজেন্ট সৌদি বিকাশ ব্যবসায়ীদের সাথে এভাবে ব্যবসা করতে পারবেনা।

বিকাশ এজেন্টদের কেহ যদি এভাবে ব্যবসা করে,সেক্ষেত্রে সে এবং সৌদি বিকাশ ব্যবসায়ী কেহই কোনো লভ্যাংশ নিতে পারবেনা। এই লভ্যাংশ গ্রহন কোম্পানি কর্তৃক অনুমোদিত নয়। তাই এটি জায়েজ হবেনা।

(০৩) প্রবাস বিকাশ ব্যবসায়ী এভাবে ব্যবসা কনটিনিউ করতে পারবেনা।  এভাবে ব্যবসা কনটিনিউ করা তার জন্য হারাম হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...