যদি কোনো ব্যক্তি ফরজ হজ্জ আদায় করতে অক্ষম হয় তাহলে তার পক্ষ থেকে দায়িত্ব নিয়ে অন্য কোনো ব্যক্তির হজ্জ পালনকে বদলি হজ্জ বলে।
খাছআম গোত্রের জনৈকা মহিলা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)কে বললেন,
يارسول الله إن فريضة الله على عباده ، أدركت أبي شيخا كبيرا لا يثبت على الراحلة ، أفأحج عنه ؟ قال: نعم ، وذلك في حجة الوداع
‘ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ)আল্লাহ তার বান্দাদের ওপর যে ফরজ আরোপ করেছেন তা আমার পিতাকে খুব বৃদ্ধ অবস্থায় পেয়েছে। তিনি বাহনের ওপর স্থির হয়ে বসতে পারেন না। তবে কি আমি তার পক্ষ থেকে হজ্জ আদায় করে দেব? তিনি বললেন, হাঁ। ঘটনাটি ছিল বিদায় হজ্জের সময়কার।
(বুখারি : হাদিস নং ১৪১৭)
আবু রাযিন আল আকিলি থেকে বর্ণিত। তিনি এসে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)কে জিজ্ঞাসা করে বললেন,
قال يا رسول الله إن أبي شيخ كبير لا يستطيع الحج والعمرة والظعن فقال حج عن أبيك واعتمر
আমার পিতা খুব বৃদ্ধ, তিনি হজ্জ ও উমরা পালন করতে পারেন না। সওয়ারির ওপর উঠে চলতেও পারেন না। রাসূলুল্লাহ (সাঃ)বললেন, তোমার পিতার পক্ষ থেকে হজ্জ ও উমরা করো।
(তিরমিযী : হাদিস নং ৮৫২)
★বদলী হজ্ব এমন লোককে দিয়ে করানো উচিত, যিনি নিজের ফরয হজ্ব আদায় করেছেন। যে ব্যক্তি নিজের হজ্ব আদায় করেনি সে যদি এমন হয় যে, তার উপর হজ্ব ফরয নয় তাহলে তাকে দিয়েও বদলী করানো জায়েয আছে। তবে তা মাকরূহ তানযীহি। আর যদি তার উপর হজ্ব ফরয হয়ে থাকে, কিন্তু সে এখনও তা আদায় করেনি তাহলে তার জন্য বদলী হজ্ব করা মাকরূহ তাহরীমী তথা নাজায়েয। তবে কেউ এমন ব্যক্তির দ্বারা বদলী হজ্ব করালে প্রেরণকারীর হজ্ব আদায় হয়ে যাবে। পুনরায় তাকে বদলী করাতে হবে না।
عن ابن عباس أن رسول الله سمع رجلا يقول لبيك عن شبرمة فقال من شبرمة؟ قال أخي أو قريب لي. قال :هل حججت؟ قال لا قال حج عن نفسك ثم حج عن شبرمة
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)এক ব্যক্তিকে বলতে শুনলেন, لَبَّيْكَ عَنْ شُبْرَمَةَ- শুবরামার পক্ষ থেকে লাববাইক। তিনি বললেন, শুবরামা কে? লোকটি বললেন, আমার ভাই বা আত্মীয়। তিনি বললেন, তুমি কি নিজের হজ্জ করেছ? লোকটি বললেন, না। তিনি বললেন, আগে নিজের হজ্জ করো। তারপর শুবরামার হজ্জ।
(আবুদাউদ : হাদিস নং ১৪২৪)
★কোনো ব্যক্তির উপর হজ্ব ফরয ছিল, কিন্তু সে তা আদায় করেনি এবং তার পক্ষ থেকে আদায়ের অসিয়তও করেনি। এ অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। তার পক্ষ থেকে ওয়ারিশদের বদলী হজ্ব করা বা করানো জরুরি নয়। তবে কোনো ওয়ারিশ বা অন্য কেউ স্বেচ্ছায় তার পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করলে এর দ্বারা ঐ মৃত ব্যক্তির ফরয হজ্ব আদায় হয়ে যাওয়ার আশা করা যায়।
হযরত বুরাইদাহ রা. বলেন, জনৈক মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার মা ইন্তিকাল করেছেন। তিনি হজ্ব করেননি। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ্ব করতে পারি?’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘হ্যাঁ, তুমি তার পক্ষ থেকে হজ্ব করো।’ (সহীহ মুসলিম ১/৩৬২)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মাইয়্যিতের পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব আদায় হয়ে যাবে। তবে যেহেতু সেই ব্যাক্তির উপর হজ্ব ফরজ নয়,তাই তাকে দিয়ে বদলি হজ্ব করানো মাকরূহ তানযীহি তথা অনুত্তম।