মুহতারাম মুফতি সাহেব,
আসসালামু আলাইকুম ।
১.
নিজের শখ পূরণের জন্য কারো কাছ থেকে বিড়াল, খরগোশ, কবুতর,ঘুঘু, কোয়েল, বিভিন্ন শৌখিন পাখি, অ্যাকুয়ারিমের মাছ ৭ দিন/ ১০ দিন বা কোন একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভাড়া করে এনে নিজের কাছে এনে রাখা জায়েয হবে কী না? আমার বাসায় স্থায়ীভাবে বিড়াল, খরগোশ, পাখি এগুলো পুষতে দেয় না । ভেবেছি কয়েকদিনের জন্য কারো পোষা বিড়াল, খরগোশ, টিয়া পাখি ইত্যাদি বিনা মূল্যে না পেলে প্রয়োজনে ভাড়া করে এনে পুষব শখ পূরণের জন্য ।
এটা আমার জন্য জায়েয হবে কী?
২.
ধরুন, আমার স্ত্রীর কাছে আমি বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজনবশত ৯৭৮ টাকা পর্যন্ত নিয়েছি । টাকাটা তাকে ফেরত দেয়ার সময়ে পূর্ণ ১০০০ টাকা দিয়েছি । তিনি বেশি টাকা দাবী করেননি । এই যে ২২ টাকা তাকে বেশি দিয়েছি এটা কী সুদ হবে? আমি মনে মনে এরকম নিয়্যাত করেছিলাম যে, তাকে ৯৭৮ টাকাই ফেরত দিলাম আর এই ২২ টাকা তাকে উপহার হিসেবে দিলাম । এরকম নিয়্যাত কী গ্রহণযোগ্য?
৩.
অনেক সময়ে রিকশাওয়ালাগণ ৮০/ ৯০ টাকার ভাড়া একটু বাড়িয়ে দেয়ার অনুরোধ করেন । যদিও ঐ দূরত্বে ৮০/৯০ টাকাই ন্যায্য ভাড়া । এখন কোন ব্যাক্তি যদি ঐ রিকশাওয়ালাকে বলেন যে, আমি আপনাকে ৮০ বা ৯০ টাকাই ভাড়া দিব ৷ রিকশাওয়ালাও দর কষাকষিতে এক পর্যায়ে রাজি হন ।
কিন্তু পরে ভাড়া দেয়ার সময়ে মানবিক কারণে প্যাসেঞ্জার ১০০ টাকাই দেন এ নিয়্যাতে যে, ৮০ টাকা বা ৯০ টাকা পারিশ্রমিক হিসেবে এবং অতিরিক্ত টাকাটি তিনি সাদাকাহ হিসেবে দিচ্ছেন ।
ক. এরূপ নিয়্যাতের কারণে প্যাসেঞ্জার কী সাদাকাহর কোন সওয়াব পাবেন?
খ. ৮০/৯০ টাকা দিতে চেয়ে ১০০ টাকা দিলে কী এক্ষেত্রে বিষয়টি কী ওয়াদার খেলাফ বলে সাব্যস্ত হবে?
৪.
কী রকম শব্দ বা বাক্য দ্বারা ওয়াদা সাব্যস্ত হয়?
যেমন: নিচের কোন বাক্য বা কথাগুলোর ক্ষেত্রে ওয়াদা সাব্যস্ত হবে?
ক. আমি আপনাকে আগামীকালকে অমুক বিষয়ে জানাবো ,
খ. আমি আপনাকে আগামীকালকে অমুক বিষয়ে জানাবো ইনশা আল্লাহ ,
গ. আশা করছি যে আমি আপনাকে আগামীকালকে অমুক বিষয়ে জানাবো ,
ঘ. ওয়াল্লাহি/ আল্লাহর শপথ, আমি আপনাকে আগামীকালকে অমুক বিষয়ে জানাবো ,
ঙ. শপথ করলাম/ ওয়াদা করলাম, আমি আপনাকে আগামীকালকে অমুক বিষয়ে জানাবো,
চ. আমি আপনাকে আগামীকালকে অমুক বিষয়ে জানাবোই জানাবো ।
৫.
নিউ ইয়ার, থার্টি ফার্স্ট নাইট, ভ্যালেন্টাইন ডে, বাংলা নববর্ষ, পহেলা ফাল্গুন, ব্ল্যাক ফ্রাইডে, মুশরিকদের কোন পুজা ইত্যাদি উপলক্ষে বিভিন্ন পণ্যে যেসব ডিসকাউন্ট বা অফার দেয়া হয়, টাকা বাঁচানোর উদ্দেশ্যে কোন মুসলিম কী সেসব ডিসকাউন্টের সুযোগ/ অফার নিতে পারবে?
৬.
উপরের ৫ নং প্রশ্নে উল্লিখিত ভিন্ন ধর্মাবলম্বী / বিজাতীয়দের বিভিন্ন উৎসবের দিন বা ঐ উৎসবগুলোর আগের দিন কোন মুসলিম যদি তাঁর দোকান (ফুলের, কেক, মিষ্টির দোকান, গিফট শপ, হোটেল, খাবারের দোকান, অনলাইন ডেলিভারি) এ উদ্দেশ্যে বন্ধ রাখেন যে তাঁর দোকান থেকে ক্রয়কৃত পণ্য দ্বারা মুশরিকরা / পথভ্রষ্টরা হয়তো তাদের উৎসব আরো ভালোভাবে উদযাপনের সুযোগ পাবে তবে -
ক. এটা কী তাঁর তাকওয়া বলে বিবেচিত হবে না কী তা বাড়াবাড়ি বলে বিবেচিত হবে?
খ. যেহেতু দোকান চালু রাখলে মুসলিম ক্রেতারাও উপকার পাওয়ার সুযোগ রাখেন সেক্ষেত্রে দোকানগুলো আমভাবে চালু রাখলে কী গুনাহে সহযোগিতা করা হবে?