আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
108 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)

ছাত্রাবস্থায় কয়েক বছর নিয়মিত নামাজ পড়তাম। তারপর দুনিয়ার মোহে পড়ে অনেক বছর নামাজ-রোজা করা হয়নি। তবে  মানুষের হক নষ্টের ব্যাপারে সাবধান থাকতাম কারণ  এর জন্য ঐ ব্যক্তির কাছ থেকে মাফ নেয়া লাগবে-জানতাম।   আল্লাহর রহমতে এখন নিয়মিত নামাজ পড়ি। তবে অতীতের কিছু পাপ নিয়ে আমি দুঃশ্চিনতায় আছি:

১।ছাত্রাবস্থায় আমরা সংবাদপত্র বিছিয়ে খাওয়ার আয়োজন করতাম। পুরাতন পেপার ডাস্টবিনে ফেলা হতো।  অনেকসময় বাথরুমের কমোডে আটকে থাকা ময়লা পরিস্কারে এসব পেপার ব্যবহার করা হতো বা ফেলে দেয়া হতো।আমরা এখন জানি, সংবাদপত্রে কোরআনের আয়াত, হাদিস, আল্লাহ নাম থাকে। তখন দ্বিনের বিষয়ে সচেতন ছিলাম না বলে  এসব বিষয় মাথায় আসে নি। এসবের কারণে কি আমার   বড়  কোন  গোনাহ হয়েছে-যেমন: শির্ক/কুফুর বা অন্য কোন কবিরা গোনাহ?

 ২।বিয়ের কয়েকবছর আগে এক আত্নীয়ের জানাজায় গিয়েছিলাম। যেহেতু জীবনের একটা বড় সময়  ফরজ নামাজ  আদায় করা থেকে দূরে ছিলাম  তাই এখন আমার মনে সন্দেহ হচ্ছে  জানাজার নামাজ লোক দেখানো ছিল কি না? বিশেষ করে অযু ছাড়াই নামাজ পড়েছিলাম কি না? শরীরর/জামা পাক ছিল কি না ? কিছুই স্পষ্ট মনে করতে পারছি না। সন্দেহ হচ্ছে ।

৩।কলেজের পাঠ্য বইয়েয় একটা উপন্যাসে ইসলাম বিরোধী কথা ছিল অর্থাৎ নারীদের পর্দার বিরুদ্ধে বক্তব্য ছিল। আমরা এসব পড়েছি, পরীক্ষায় লিখেছি। তখন বুঝিনি। এখন মনে হচ্ছে, ইসলাম বিরোধী এসব কথা লিখে মহা ভূল করেছি। এখন আল্লাহর কছে এর জন্য মাফ চাচ্ছি। এছাড়া আরো পড়েছি/ বা খাতায় লিখে থাকতে পারি-বাংলাদেশের সংবিধানকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান বলা হয়। এতে কি গুনাহ হয়েছে?

৪।এমন একটা সমাজে বড় হয়েছি,  যেখানে ঈমানের জ্ঞান ছিল খুবই কম।  এসএসসি/এইচএসসি তে পড়ার সময় হতে পারে-গুরুজনেরা এমন বলতেছিল সব ধর্মই  ভালো, যে যেটা অনুসরণ করে( স্পষ্টভাবে মনে করতে পারছি না) । এখন আমার নিজের সন্দেহ হচ্ছে, আমি কি বন্ধুদের সাথে একই রকম ঈমান বিরোধী কথা সেসময় বলে ছিলাম? যদিও সন্দেহ, অনেক আগের ঘটনা ।  কিন্তু যদি বলে থাকি? তওবা তো করা হয়নি?  আমার বয়স এখন ৪০ এর উপরে। সবই বিয়ের আগের ঘটনা।  তাহলে  কি আবার কালেমা পড়ে ঈমান আনতে হবে, পুনরায় বিয়ে পড়তে হবে?-এমন প্রশ্ন মনে আসে।  আল্লাহর রহমতে এখন ইসলাম পালনের বিষয়ে সদা সতর্ক থাকি। জেনে বুঝে সব ধরনের বড় গোনাহ  থেকে বাঁচার চেষ্টা করি। ছাত্রাবস্থায়  অনেক ঘটানায় বড় গুনাহ হয়ে থাকতে পারে । অনেক কিছু হয়তো স্পষ্ট মনে করতে পারিনা। আবার কি ধরণের গুনাহ-শির্ক নাকি কুফুর , ফাসেকী নাকি ছোট গোনাহ বুঝতে পারি না (জ্ঞানের স্বল্পতার কারনে )।  তাই আমি এ  ভাবে তওবা করি: মহান আল্লাহ, অমুক ঘটনায়/কারণে (যেমন: পত্রিকা টয়লেটে ফেলা/ সব ধর্মই ভাল বলা (আমি বলে ছিলাম কি না মনে করতে পারছি না)/ লোক দেখানো নামাজ) শির্ক হয়ে থাকলে, কুফুর হয়ে থাকলে,  বা অন্য কোন গোনাহ(ছোট-বড়) হয়ে থাকলে আমাকে দয়া করে মাফ করে দিন। এসব ভয়াবহ পাপ থেকে মুক্ত থাকার তওফিক দান করুন । টেনশনে আছি।   দয়া করে পরামর্শ জানাবেন।

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/85619/?show=85619#q85619  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَٰئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا [٤:١٧] وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ وَلَا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا [٤:١٨

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী,রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে,এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়,তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}

عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ، كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ»

হযরত ইবাদা বিন আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, গোনাহ থেকে তওবাকারী গোনাহ করে নাই ব্যক্তির মত হয়ে যায়। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪২৫০]

খাঁটিভাবে তাওবা করলে আল্লাহ্ তাআলা অতীতের ছোট বড় সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেন। তবে বান্দার কোন হক নষ্ট করে থাকলে তাওবার পাশাপাশি তাকে তার হক তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া জরুরী।

 তওবা তিনটি জিনিসের সমন্বয়-

বান্দার হক থাকলে আগে সেটি আদায় করতে হবে বা তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে আসতে হবে।

এক. পূর্বের গোনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া। আর অপরের হক নষ্ট করলে তা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া।

দুই. ভবিষ্যতে গোনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করা।

তিন. আল্লাহ্ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/7936/

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. না জেনে এমন কাজ করেছেন। বিধায় উক্ত কৃত কাজের উপর তওবা করলেই আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করবেন ইনশাআল্লাহ। তবে উক্ত কাজটি ইচ্ছকৃত কুরআন অবমাননার উদ্দেশ্যে না করাই শিরক বা কুফুর হবে না।

২. উক্ত সন্দেহের শরীয়তে কোন ভিত্তি নেই। তবে যদি প্রবল ধারণা হয় যে, আপনি অপবিত্র অবস্থায় জানাযার সালাত আদায় করেছেন তাহলে স্বীয় গুনাহের উপর অনুতপ্ত হয়ে তওবা করতে হবে। অন্যথায় সন্দেহ বা দুশ্চিন্তা থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।

৩. ইসলাম বিরোধী কোন কাজকে সমর্থন করা হারাম। বিধায় উক্ত কৃতকর্মের উপর তওবা করা আবশ্যক।

৪. জ্বী পূর্বের যাবতীয় গুনাহ থেকে তথা শিরক-কুফুর, প্রকাশ্যে বা গোপনে, একাকী বা দলবদ্ধ ভাবে, ছগীরা বা কাবীরা গুনাহ ইত্যাদী থেকে খালেস অন্তরে তওবা করলে আল্লাহ তায়ালা পূর্বের সমুদয় গুনাহ মাফ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ। তবে অবশ্যই উপরে উল্লেখিত শর্তসমূহ মেনে তওবা করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
ধন্যবাদ স্যার। আবার কালেমা পড়ে ঈমান আনতে হবে, পুনরায় বিয়ে পড়তে হবে কি?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...