আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
174 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (23 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু,

আমি বেশ কয়েক মাস ধরে চাকুরিহীন অবস্থায় ছিলাম। অনেক খোঁজ করেও কোনো চাকুরির ব্যবস্থা হয়নি। সম্প্রতি একটি গার্লস কলেজে শিক্ষকতা করার সুযোগ এসেছে। কিন্তু শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে গার্লস কলেজে শিক্ষকতা করার বিধান আমি সবিস্তারে জানতে চাই। আমার প্রশ্ন হলো,

(১) গার্লস কলেজে শিক্ষকতা করা কি জায়েজ?

(২) গার্লস কলেজে শিক্ষকতা করলে কি কি বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখা উচিত?

(৩) গার্লস কলেজে শিক্ষকতার বেতন কি হালাল হবে?

(৪) যদি এই মুহূর্তে কোনো উপায় না পেয়ে গার্লস কলেজে জয়েন করি, সেটা ঠিক হবে? না-কি অন্য চাকুরির জন্য অপেক্ষা করা ভালো?

(৫) গার্লস প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করা হালাল কি না?

1 Answer

0 votes
by (566,640 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের বিধান মতে গায়রে মাহরাম বালেগাহ মহিলার দিকে ইচ্ছাকৃতভাবে  দৃষ্টিপাত করা নাজায়েজ। 
অনিচ্ছায় একবার দৃষ্টি চলে গেলে সাথে সাথেই চোখ ফিরিয়ে নিতে হবে,২য় বার আর  দৃষ্টিপাত করা যাবেনা।
কারন এতে ইচ্ছাকৃতভাবেই হয়ে যায়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عَنْ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” لَا تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ؛ فَإِنَّمَا  لَكَ الْأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الْآخِرَةُ “

হযরত বুরাইদা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ  হযরত আলী রাঃ কে বলেন, হে আলী! [সহসা] একবার দেখার পর পুনরায় [কোন বেগানা নারীকে] দেখো না। কারণ, তোমার জন্য প্রথমবারে অনুমতি রয়েছে [যখন তা অনিচ্ছায় হয়ে যাবে], কিন্তু দ্বিতীয়বারের অনুমতি নেই।
 {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২৯৭৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৭৫১, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৪৯, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৭৭৭}

عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَنْظُرُ إِلَى مَحَاسِنِ امْرَأَةٍ أَوَّلَ مَرَّةٍ، ثُمَّ يَغُضُّ بَصَرَهُ إِلَّا أَحْدَثَ اللهُ لَهُ عِبَادَةً يَجِدُ حَلَاوَتَهَا “

হযরত আবু উমামা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে কোন মুসলমান কোন নারীর সৌন্দর্যের প্রতি হঠাৎ দৃষ্টি পড়ে যায়, অতঃপর সে নিজ চক্ষু নিচু করে নেয়, তবে আল্লাহ তাআলা তার জন্য এক ইবাদতের সুযোগ সৃষ্টি করেন, যাতে সে তার স্বাদ পায়। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২২৭৮}

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُ زِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}

আরো জানুনঃ- 

https://ifatwa.info/36176/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

পড়ানোর বিনিময়ে বেতন দেওয়া হয়, তাই উনি যদি সহশিক্ষা সম্ভলিত কলেজ/ভার্সিটির নিয়ম অনুসারে কোনো প্রকার অবহেলা-অলসতা না করে ঠিকমত পড়ান,তাহলে যে বেতন পাবেন সেটা অবশ্য উনার জন্য হালাল হবে।তবে শরয়ী পর্দা না করলে সর্বদা পর্দা লঙ্গনের গোনাহে লিপ্ত থাকবেন।

চাকুরী করার ভীষণ প্রয়োজন থাকলে গোনাহমুক্ত কোনো চাকুরী খোঁজা উনার উপর ওয়াজিব।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
গার্লস কলেজে শিক্ষকতা করার ক্ষেত্রে পুরুষ শিক্ষকের শিক্ষকতা অনেক ইসলামী স্কলারদের মতে সম্পুর্ন নাজায়েজ। তবে কিছু কিছু ইসলামী স্কলারগন কতিপয় শর্তের ভিত্তিতে জায়েজ বলেছেন।

শর্তগুলি বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
নিম্নের লিংক দ্রষ্টব্য।

(০৩)
মূলত শিক্ষার্থীদের পড়ানোর বিনিময়ে বেতন দেওয়া হয়, তাই আপনি যদি উক্ত কলেজ/ভার্সিটির নিয়ম অনুসারে কোনো প্রকার অবহেলা-অলসতা না করে ঠিকমত পড়ান,তাহলে যে বেতন পাবেন সেটা অবশ্য আপনার জন্য হালাল হবে।

(০৪)
উপরোক্ত লিংকে দেয়া শর্তাবলী মানা সম্ভব হলে চাকুরী করতে পারেন,নতুবা অন্য চাকুরী খোজারই পরামর্শ থাকবে।

(০৫)
এক্ষেত্রে যেহেতু কোনো বালেগাহ মেয়েকে পড়াতে হচ্ছেনা,তাই গার্লস প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করা হালাল।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...