আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
304 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (67 points)
IOM এর নিয়ম মাসের 10 তারিখের ভিতরে বেতন পরিশোধ করা। যদি না করি তাহলে পরবর্তীতে 100 টাকা জরিমানা আদায় করতে হবে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে এটা কি রিবা হয়ে যাচ্ছে না?

1 Answer

0 votes
by (710,160 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
দ্বীন-শরীয়ত সম্পর্কে জানার আগ্রহ দেখে এবং i.o.m এর প্রতি আশ্বস্ত দেখে আমরা যারপরনাই আনন্দিত।আল্লাহ পাক আপনাকে দ্বীনের উপর সর্বদা অঠল-অবিচল থাকার তৌফিক দান করুক।আ'মলী জিন্দেগি গঠন করার তৌফিক দান করুক।সেই প্রত্যাশা ও কামনা আমরা হৃদয়ে লালন করি।

অবহেলাকারী ছাত্রের উপর আর্থিক জরিমানা ধার্য করা জায়েয নয়; চাই জরিমানার অর্থ প্রতিষ্টানের ফান্ডে জমা রাখা হোক বা ভাল ছাত্রদেরকে দিয়ে দেয়া হোক কিংবা দান করে দেয়া হোক। কেননা আর্থিক জরিমানার মাধ্যমে শাস্তি দেয়ার অধিকার শুধুমাত্র আইনানুগ শাসকের কিংবা তার স্থলাভিষিক্ত বিচারক ও কর্মকর্তাদের। উপরন্তু, আলেমদের মাঝে মূলত: আর্থিক জরিমানার মাধ্যমে শাস্তি দেয়া জায়েয কিনা তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে।

মূল বিধান হচ্ছে–
এক মুসলমানের জন্য অন্য মুসলমানের সম্পদকে অন্যায়ভাবে গ্রহণ করা হারাম।যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
قَالَ: «فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ، وَأَمْوَالَكُمْ، وَأَعْرَاضَكُمْ، بَيْنَكُمْ حَرَامٌ، كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا، فِي شَهْرِكُمْ هَذَا، فِي بَلَدِكُمْ هَذَا، لِيُبَلِّغِ الشَّاهِدُ الغَائِبَ، فَإِنَّ الشَّاهِدَ عَسَى أَنْ يُبَلِّغَ مَنْ هُوَ أَوْعَى لَهُ مِنْهُ»
“নিশ্চয় তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-সম্পদ, তোমাদের ইজ্জত-আব্রু তোমাদের পরস্পরের জন্য হারাম (পবিত্র) যেমনিভাবে তোমাদের এই দিনটি তোমাদের এই মাসে ও এই দেশে হারাম (পবিত্র)। এখানে উপস্থিত ব্যক্তি যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির নিকট এসব কথা পৌঁছে দেয়।”[সহিহ বুখারী (৬৭) ও সহিহ মুসলিম (১৬৭৯)]

''وفي شرح الآثار : التعزير بالمال كان في ابتداء الإسلام ثم نسخ .والحاصل أن المذهب عدم التعزير بأخذ المال''۔(الفتاوي الشامية4/61)
আর্থিক জরিমানা ইসলামের প্রাথমিক যগে ছিলো,কিন্তু পরবর্তীতে সেটাকে মানসুখ করা হয়েছে। মোটকথা, আর্থিক জরিমানা বর্তমানে গ্রহণযোগ্য নয়।(ফাতাওয়ায়ে শামী-৪/৬১)

দারুল উলূম দেওবন্দের একটি ফাতাওয়ায় বলা হয় যে,
Fatwa ID: 588-487/B=5/1435-U
 احناف کے نزدیک تعزیر بالمال یعنی مالی جرمانہ کسی پر لگانا یا کسی سے لینا جائز نہیں، خواہ وہ دینی علوم کا طالب علم ہو یا عصری علوم کا طالب علم ہو، اگر کسی نے ایسا جرمانہ وصول کیا ہے تو اسے واپس کرنا ضروری ہے: وفی شرح الآثار التعزیر بالمال کان فی ابتداء الإسلام ثم نسخ، والحاصل المذہب عدم التعزیر بالمال (شامي: ۳/۱۷۹)

সৌদী আরবের ফাতাওয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, এক গোত্রের কিছু লোক এই মর্মে একমত হয়েছে যে, যে ব্যক্তি কিছু কিছু বিষয়ে লিপ্ত হবে তার উপরে কিছু আর্থিক জরিমানা ধার্য করা কি জায়েয হবে?

জবাবে তাঁরা বললেন: “এ ধরণের পদক্ষেপ নাজায়েয। কেননা এটি এমন লোকদের পক্ষ থেকে আর্থিক জরিমানা ধার্য করা, যারা আইনগতভাবে (শরিয়ত মোতাবেক) সে ক্ষমতা রাখে না। বরং এ ক্ষমতার অধিকারী হচ্ছে- বিচার বিভাগ। তাই, এ ধরণের জরিমানা প্রত্যাহার করা কর্তব্য।”[ফাতাওয়াল লাজনাহ্ আদ্ দায়িমা (১৯/২৫২)]আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আর্থিক জরিমানা নাজায়েয ও হারাম।তবে iom যা করছে সেটা হারাম হবে না।কেননা iom আর্থিক জরিমানা নির্ধারণ করছে না।বরং IOM এর নিয়ম হচ্ছে, মাসের 10 তারিখের ভিতরে বেতন পরিশোধ না করলে ভর্তি প্রক্রিয়া বাতিল পূর্বক সমস্ত সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে দেয়া।পরবর্তীতে ভর্তি প্রক্রিয়াকে আবার রিনিউ করতে হলে ১০০ টাকা জমা দিয়ে বেতন পরিশোধ করা।

এ নিয়মে মূলত আর্থিক জরিমানা হচ্ছে না।বরং বেতন পরিশোধ না করার জন্য ভর্তি বাতিল করা হচ্ছে।এ অধিকার অবশ্যই প্রতিষ্টানের রয়েছে।এবং ভর্তি রিনিউ বাবৎ কিছু ফিস নির্ধারণ করার অধিকারও প্রতিষ্টানের রয়েছে।

সুতরাং iom যা করছে,সেটা আর্থিক জরিমানা হচ্ছে না।তাই এ নিয়ম নাজায়েযের আওতাধীন হচ্ছে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...