আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
76 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।কিছু বিষয় জানার ছিল।

১.  শায়েখ মতিউর রহমান মাদানীর একটা ভিডিও তে দেখলাম যে বিয়ের ক্ষেত্রে মেয়ের অভিভাবক বাবা,বাবার অবর্তমানে দাদা,দাদা না থাকলে নিজের ছেলে,ছেলে না থাকলে ভাই ,ভাই না থাকলে চাচা হয়।আমার বাবা মারা গেছেন।আমার বিয়ের ওয়ালি ছিলো আমার এক চাচা(আব্বুর ছোট ভাই)। আমার বিয়ের সময় আমার দুই ভাইই সাবালক । কিন্তু তারা আমার থেকে বয়সে ছোট হওয়ায় আমার চাচা কে ওয়ালি করা হয়।ভাইকে রেখে চাচাকে ওয়ালি করা কি বিয়ের ত্রুটি হিসাবে ধরা হবে?আমাদের কি আবার বিয়ে করা লাগবে?

২.

ঘটনা -১: বিয়ের পরেই কোনো একদিন আম্মুকে বলি আমাদের ,এই বাড়ির গার্ডিয়ান তো তুমি।পরে মনে হয় বিয়ের পর তো গার্ডিয়ান হাসব্যান্ড হয়।

ঘটনা -২:  হাসব্যান্ড বলছিলো যে  পরীক্ষা শেষ করে যেনো তার ঐখানে যায়।হাসব্যান্ড কে বলছি তোমার বাড়ি(কারণ সে গার্ডিয়ান)।তুমি নিষেধ করলে আমি কি করে আসি(রাগ করে)।

ঘটনা -৩: আমার বিয়ে আগে হয়।পরে অনুষ্ঠান করে শশুরবাড়ি উঠায় নেই।অনুষ্ঠান এর আগে ডেকোরেশন থেকে জিজ্ঞেস করছিল কিসের অনুষ্ঠান? আমি বলছি বিয়ের(কারণ তখন অনুষ্ঠান করে শশুরবাড়ি নিয়ে যেতে চাইছিল).

ঘটনা -৪: আমাকে একজন বলে আমি সয়মবরা।তখন আমি জানতাম না এই শব্দের মানে কি? তো আমি বলছি আমি সোয়মবরা??কিন্তু কেনো??

ঘটনা -৫: আমাকে একজন বলে যে আমার গহনা গুলা বিক্রি করে দিতে।দিয়ে অন্য কাজে লাগাতে।আমি বলেছি না আরো ২-৫ বছর পর করবো(মনে মনে ভাবছি যে কোনো আত্মীয় দেখতে চাইলে/বাবার ঐখানে থেকে কি দিল বললো আমি কি দেখব,বিয়ে করলে)।আসলে আমি গহনা গুলা দেরিতে বিক্রি করতে চাইছি কারণ আমাদের এইখানে বাজে নিয়ম আছে শশুরবাড়ি যাওয়ার পর আত্মীয়রা বলে/দেখতে চাই কত কি দিল।কেনো যে বিয়ে করলে কথা টা মনে হলো জানি না।পরে মনে হলো আমার তো বিয়ে হয়ে গেছে।তাহলে আবার বিয়ের জন্য আমার গহনা লাগবে কেনো ?এই কথা আমি কি করে ভাবলাম।

হুজুর আমার কাবিন নামা তে ১৮ নম্বর এর উত্তর " হা" দিয়া আছে। উল্লেখিত ৫টা ঘটনার কোনো ঘটনা কি কেনায়া বাক্য ধরা হবে? এইসব ঘটনা দিয়ে আমার বিয়ের তো সমস্যা হবে না?

৩. যে সব স্বর্ণের অলংকার আমরা ব্যাবহার করি সেই অলংকার ধরে কি যাকাত হিসাব করতে হবে? ব্যাবহৃত অলংকারের কি যাকাত দিতে হয়?

৪. আমার হাসব্যান্ড আমাকে বলে যে দিন আমাদের ব্রেক আপ হয়(ফ্রেন্ডশিপ ভেঙে দেয় এই জন্য বলছে) ।আমি জিজ্ঞেস করি কবে ব্রেকআপ হলো? এইগুলা বিয়ের আগের ঘটনা।এইগুলা কি বিয়ের সমস্যা করবে/কেনায় বাক্য ধরা হবে?

৫. আমার নানা বেচেঁ নাই।দুই মামা আছে।কিন্তু তারা তেমন দায়িত্ব নিতে চাই না। আমার খালার বিয়ের ওয়ালি কি যদি মামারা না হতে চাই তাহলে কাকে ওয়ালি করা যাবে?(নানার ভাই/আমার মামাতো ভাই/আমার ভাই/আমার খালতো ভাই). নানার ভাই ও হতে চাইবে না ।আমার মামাতো ভাই গুলো সাবালক কিন্তু ছোট।

৬.আমার হাসব্যান্ড বলে আমার নাক তার দাদীর মত,আমার নানী শাশুড়ি আর আমার স্বভাব মুখ ডেকে রাখা করো সামনে।এইগুলা কি জিহার হিসাবে গণ্য হবে?মেয়েরা কি জীহার করতে পারে?বিয়ের আগে যদি কেউ ওয়াইফ কে তার মাহরাম কোনো মেয়ের সঙ্গে তুলনা করে সেইটাও যিহার হবে?যদি বিয়ের আগে করা /পরে করা যিহারের কথা মনে না থাকে তাহলে গুনাহ হবে?

৭.অনেকে বলে যে ফোনে বিয়ে হয় না।এক মজলিসে বর কনে/ওয়ালি কে উপস্থিত থাকতে হয় । বর এক রুমে আর কনে অন্য রুমে(একই বাসার) বসে থাকে ।এমন সময় ওয়ালি,সাক্ষী ও কাজী সহ যেয়ে  কনের সম্মতি নিয়ে আসে ।তারপর বরের কাছে যেয়ে সম্মতি নেই।এইভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়।এইটা কি ঠিক নিয়ম? নাকি যেহেতু এক মজলিস বলছে তাই এক ঘরে কন্যা,বর,আর অন্য সকলকে বসতে হতো?


৮. হুজুর বিয়ের সাক্ষী দুই জুন বলা হয়।এই ক্ষেত্রে কি ২ জন মেয়ে পক্ষের আর ২ জন ছেলে পক্ষের হতে হয়? মোট ৪ জন নাকি যে কোনো পক্ষের ২জন হলেই হয়

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 

রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

ফাতাওয়ার কিতাবে আছেঃ- 

وَاخْتَلَفُوا فِي تَرْتِيبِ الأَْوْلِيَاءِ فِي النِّكَاحِ وَذَلِكَ عَلَى التَّفْصِيل الآْتِي:
92 - قَال الْحَنَفِيَّةُ: الْوَلِيُّ فِي النِّكَاحِ الْعَصَبَةُ بِنَفْسِهِ وَهُوَ مَنْ يَتَّصِل بِالْمَيِّتِ حَتَّى الْمُعْتِقِ بِلَا تَوَسُّطِ أُنْثَى عَلَى تَرْتِيبِ الإِْرْثِ وَالْحَجْبِ، فَيُقَدَّمُ الاِبْنُ عَلَى الأَْبِ عِنْدَ أَبِي حَنِيفَةَ وَأَبِي يُوسُفَ خِلَافًا لِمُحَمَّدٍ حَيْثُ قَدَّمَ الأَْبَ، وَفِي الْهِنْدِيَّةِ عَنِ الطَّحَاوِيِّ: إِنَّ الأَْفْضَل أَنْ يَأْمُرَ الأَْبُ الاِبْنَ بِالنِّكَاحِ حَتَّى يَجُوزَ بِلَا خِلَافٍ، وَابْنُ الاِبْنِ كَالاِبْنِ، ثُمَّ يُقَدَّمُ الأَْبُ، ثُمَّ أَبُوهُ، ثُمَّ الأَْخُ الشَّقِيقُ، ثُمَّ لأَِبٍ، ثُمَّ ابْنُ الأَْخِ الشَّقِيقِ، ثُمَّ لأَِبٍ، ثُمَّ الْعَمُّ الشَّقِيقُ، ثُمَّ لأَِبٍ، ثُمَّ ابْنُهُ كَذَلِكَ، ثُمَّ عَمُّ الأَْبِ كَذَلِكَ، ثُمَّ ابْنُهُ كَذَلِكَ، ثُمَّ عَمُّ الْجَدِّ كَذَلِكَ، ثُمَّ ابْنُهُ كَذَلِكَ، كُل هَؤُلَاءِ لَهُمْ إِجْبَارُ الصَّغِيرَيْنِ وَكَذَا الْكَبِيرَيْنِ إِذَا جُنَّا، ثُمَّ الْمُعْتَقُ وَلَوْ أُنْثَى، ثُمَّ ابْنُهُ وَإِنْ سَفَل، ثُمَّ عَصَبَتُهُ مِنَ النَّسَبِ عَلَى تَرْتِيبِهِمْ
[«الموسوعة الفقهية الكويتية» (41/ 275)]
সারমর্মঃ-
বিবাহের ওয়ালি হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে অগ্রগামী হলো তার ছেলে, ছেলের ছেলেও ছেলের মতোই,অতঃপর বাবা,অতঃপর তার দাদা,অতঃপর নিজের ভাই,অতঃপর বৈপিত্রীয় ভাই, অতঃপর নিজের ভাইয়ের ছেলে,অতঃপর বৈপিত্রীয় ভাইয়ের ছেলে,অতঃপর নিজের চাচা,অতঃপর বৈপিত্রীয় চাচা,অতঃপর নিজের চাচার ছেলে,
অতঃপর বৈপিত্রীয় চাচার ছেলে,অতঃপর অনুরুপ ভাবে বাবার চাচা,অতঃপর অনুরুপ ভাবে তার ছেলে,,,,

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার বিবাহ মওকুফ থাকবে আপনার ভাইয়ের অনুমতির উপর।

যদি আপনার ভাই অনুমতি দেয়,তাহলে কোনো সমস্যা নেই।

উল্লেখ্য ইতিপূর্বে যেই মাসয়ালা আলোচনা করা হলো,তাহা ঐ ক্ষেত্রে, যদি আপনি বিবাহের সময় নাবালেগাহ থাকেন।

আর যদি আপনি বিবাহের সময় বালেগাহ হয়ে থাকেন,সেক্ষেত্রে তো কোনো সমস্যা নেই,এক্ষেত্রে সেই ভাইদের অনুমতি ছাড়া বিবাহ হলেও আপনি যদি ইজাব/কবুল করে থাকেন,তবুও বিবাহ শুদ্ধ। 

নিকটতম ওলি থাকা অবস্থায় দূরবর্তী ওলি বিবাহ দিলে তার হুকুম সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
না,এক্ষেত্রে কোনো কেনায়া বাক্য ব্যবহার করা হয়নি। 
এইসব ঘটনার দরুন আপনার বিয়ের কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৩)
সেসব অলংকার নেসাব পরিমান হলে অথবা তার সাথে নিজের কিছু টাকা থাকলে বা রুপা থাকলে সেক্ষেত্রে সবগুলোর মূল্য যোগ করে যদি সাড়ে ৫২ ভরি রুপার সমমূল্যে পৌছে,সেক্ষেত্রে এক বছর পূর্ণ হলেই যাকাত ফরজ হবে। ব্যাবহৃত অলংকারেরও যাকাত দিতে হবে।

(০৪)
এক্ষেত্রে বিয়ের সমস্যা হবেনা।

(০৫)
আপনার মামাতো ভাইয়েরা আপনার খালার ওয়ালি হবে।

(০৬)
এক্ষেত্রে যিহার হবেনা।
মেয়েদের কথায় কোনো যিহার হয়না।

(০৭)
এই নিয়মে বিবাহ শুদ্ধ হবে।
মেয়ের পক্ষ থেকে অনুমতি যে নিয়ে আসলো,সেই মেয়ের উকিল হয়ে মেয়ের পক্ষ থেকে ছেলেকে প্রস্তাব দেয়,তাই মেয়ের উকিলের সেই মজলিসে উপস্থিত থাকা মানেই মেয়েরই সেই মজলিসে উপস্থিত থাকা।

(০৮)
যে কোনো পক্ষের ২ জন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ (মুসলিম) হলেই হয়।
অথবা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুই জন প্রাপ্তবয়স্কা মহিলা হলেই হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (12 points)
মেয়ের উকিল আর ওয়ালি কি এক? বিয়ে তো কাজী পরাই। আমার ওয়ালি(চাচা তো) তো চুপ করে দাড়ায় শুধু শুনছিল আর কাজী বলছিলো(মানে প্রস্তাব দিচ্ছিল)
by (678,880 points)
শাব্দিক ভাবে উকিল আর ওয়ালি এক না হলেও যদি ওয়ালিকে উকিল বানানো হয়,সেক্ষেত্রে এটিও সহীহ হয়।
একই ব্যাক্তি ওকিল ও ওয়ালি হতে পারবে। 
by (678,880 points)
মেয়ে নাবালেগাহ হলে ওয়ালি উকিল না হয়েও বিবাহ দিতে পারবে। এক্ষেত্রে মেয়ের অনুমতির প্রয়োজন নেই। তার জন্য উকিল হওয়ার প্রয়োজন নেই।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...