আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
147 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
আমার বেড়ে ওঠা আমার দাদা-চাচাদের কাছেই। প্রাপ্ত বয়স্ক হলে বাবা মা তাদের কাছে নিয়ে যান বাহিরের দেশে।
আমার দাদা আমার আপন চাচাতো ভাইয়ের সাথে আমার বিয়ে দিয়ে গিয়েছে আমার চাচা,চাচি,চাচাতো বোন,দাদা এদের অভিভাবক হিসেবে সাক্ষী রেখে। আমার বাবা এবং মা কেউই জানতো না একথা। আর এই বিয়ের কথা দাদার মৃত্যুর পরেই আমি এবং আমার সেই চাচাতো ভাই জানতে পারি। তিনি চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে গেছেন আর বাকিরাও একথার সাক্ষী ছিলেন সেই চিঠি দিয়ে গেছে যে। দাদা ওয়াছিয়ত করে গেছে তার নাতির কাছে আর কী আমাকে যাতে আগলে রাখে। সব জেনে বিয়ে কবুল করে নিয়েছি আমি মন থেকে। স্বামী স্ত্রীর মতো জীবনযাপন করতেছি। কবুল করে নেওয়ার সময় সাক্ষী ছিল না কেউ। এক্ষেত্রে কী বিয়ে বৈধ হবে? এমন বিয়ে কী আসলেই হতে পারে?

বি দ্র: আমার বাবা এই বিয়ে মানছে না। বাবা বেদ্বীন। মেয়ে ছেলের সাথেই থাকতেছে। বাবা মা জীবিত থাকতে দাদা চাচারা অভিভাবক হয়ে এইভাবে বিয়ে দিতে পারবে কি?( অন্য একজনের প্রশ্ন আমার মাধ্যমে জানতে চাওয়া হয়েছে)

1 Answer

0 votes
by (560,700 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-
বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।

উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ اسۡتَشۡہِدُوۡا شَہِیۡدَیۡنِ مِنۡ رِّجَالِکُمۡ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُوۡنَا رَجُلَیۡنِ فَرَجُلٌ وَّ امۡرَاَتٰنِ مِمَّنۡ تَرۡضَوۡنَ مِنَ الشُّہَدَآءِ اَنۡ تَضِلَّ اِحۡدٰىہُمَا فَتُذَکِّرَ اِحۡدٰىہُمَا الۡاُخۡرٰی

আর তোমরা তোমাদের পুরুষদের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ, অতঃপর যদি দু’জন পুরুষ না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক যাদেরকে তোমরা সাক্ষী হিসেবে পছন্দ কর, যাতে স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুলে গেলে তাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
(সুরা বাকারা ২৮২)

হাদিস শরিফে এসেছে, 

لَا يَجُوزُ نِكَاحٌ، وَلَا طَلَاقٌ، وَلَا ارْتِجَاعٌ إِلَّا بِشَاهِدَيْنِ

‘রাসূল (সা.) বলেছেন, দুইজন সাক্ষী ছাড়া বিবাহ, তালাক ও ফিরিয়ে আনা বৈধ হবে না।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস: ১০২৫৪]

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 

রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী- “তোমরা বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা কর।”[মুসনাদে আহমাদ এবং সহীহ জামে গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলা হয়েছে (১০৭২)]
۔
ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষ্যি স্বকর্ণে শুনতে হবে।

উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।

উপরোক্ত তিনটি শর্ত  পাওয়া গেলে বিবাহ হবে,অন্যথায় বিবাহ হবেনা।
,
বিস্তারিত জানুনঃ- 

ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছেঃ-
فتاوی ہندیہ  : وان زوج الصغیر و الصغیرۃ أبعد الاولیاء فان کان الاقرب حاضراً و ھو من اھل الولایۃ توقف نکاح الابعد علی اجازتہ۔

যদি ছোট ছেলে এবং ছোট মেয়েকে দূরবর্তী ওলি বিবাহ করিয়ে দেয়,সেক্ষেত্রে নিকটতম ওলি হাজির (জীবিত) থাকলে দূরবর্তী ওলির বিবাহটি নিকটতম ওলির অনুমতির উপর মওকুফ থাকবে।

হেদায়াহ গ্রন্থে আছেঃ- 

 ۔ ہدایہ  : فإن زوجھماالأب أو الجد فلاخیار لھما بعد بلوغھما۔( (
সারমর্মঃ-
যদি নাবালেগ ছেলে মেয়েকে তার বাবা বা তার দাদা বিবাহ করিয়ে দেয়,সেক্ষেত্রে তাদের প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর কোনো ইখতিয়ার থাকবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,    
প্রশ্নে উল্লেখিত বিবাহ শুদ্ধ হয়নি।
সেই ছেলে মেয়ে সংসার করতে চাইলে শরীয়তের নীতিমালা মেনে পুনরায় বিবাহ পড়িয়ে নিবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...