আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
386 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
1. আমাদের প্রতিবেশি বেশির ভাগ ফ্যামিলি সুদের উপরে অন্য দের কাছ থেকে টাকা আনে। আর প্রত্যেকেই ব্রাক বা এনজিও থেকে টাকা তুলে লোন হিসেবে যা পরবর্তীতে কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করে, যে টাকা লোন নেয় তার থেকে বেশি টাকা পরিশোধ করা লাগে। এটা সুদ আমি জানি।

১. আমার প্রশ্ন হচ্ছে এমন প্রতিবেশিদের সাথে আমাদের লেনদেন কি জায়েজ আছে? যেমন আমাদের কাছে ওরা টাকা ধার নিতে আসে বা সময়ে আমরা আনি, উল্লেখ্য যে এখানে সুদের সম্পর্ক না নরমাল ধার দেওয়া টাকা।
২. মাঝে মাঝে প্রতিবেশিদের মধ্যে কেউ কিস্তির টাকা পরিশোধ করার জন্য  ধার নিতে আসে, যেমন আমার আম্মার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে এখন কিস্তি দিবে,  তাদের ধার দেওয়া কি জায়েজ হবে? কিস্তির মাধ্যমে তো তারা সুদ দেয় ব্রাক বা এনজিও গুলোকে, এক্ষেত্রে তাদের সাহায্য করা কি জায়েজ হবে?
2. বিবাহের জন্যে যদি ছেলে পক্ষ মেয়ের ছবি দেখতে চায়, ছবি পাঠাতে বলে সেটা কি দেয়া জায়েজ আছে?

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
বিসমিহি তা'আলা

জবাবঃ-

(১)

আমরা ছোটবেলায় পড়েছি।এবং সত্য পড়েছি যে, মানুষ সামাজিক জীব।সে একা বাস করতে পারেনা।প্রতিবেশীদের সাথে মিলেমিশেই মানুষ তার সময় কে অতিবাহিত করে।এবং লেনদেন করেই তার প্রয়োজনকে পূর্ণ করে।

একটি সমাজ অনেক-কে নিয়ে গঠিত হয়।তাদের কেউ নেককার থাকে আবার কেউ বা বদকার।

পূর্ণ নেককার সমাজ রাসূলুল্লাহ সাঃএবং খেলাফতে রাশেদার সময়ে পৃথিবীতে ছিল।তারপর থেকে কিয়ামত পর্যন্ত আর আসবে কি না সেটা অনিশ্চিত।

কিন্তু কিয়ামত পর্যন্ত এই পৃথিবীতে মানুষকে বসবাস করতে হবে। নেককার বদকার উভয় মিলেই সমাজকে পরিপূর্ণতা দিতে হবে।এবং পরস্পর লেনদেন করেই প্রত্যেকে নিজ নিজ প্রয়োজনকে পূর্ণ করতে হবে।যে নেককাজে ব্রতী হবে সে পরকালে পুরুস্কার পাবে।আর যে বদ কাজের দিকে অগ্রসরমান থাকবে,তাকে পরকালে শাস্তি পেতে হবে।

কেউ কারো বোঝা সে দিন বহন করবে না।
এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন-
ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺰِﺭُ ﻭَﺍﺯِﺭَﺓٌ ﻭِﺯْﺭَ ﺃُﺧْﺮَﻯ ﻭَﺇِﻥ ﺗَﺪْﻉُ ﻣُﺜْﻘَﻠَﺔٌ ﺇِﻟَﻰ ﺣِﻤْﻠِﻬَﺎ ﻟَﺎ ﻳُﺤْﻤَﻞْ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْﺀٌ ﻭَﻟَﻮْ ﻛَﺎﻥَ ﺫَﺍ ﻗُﺮْﺑَﻰ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺗُﻨﺬِﺭُ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺨْﺸَﻮْﻥَ ﺭَﺑَّﻬُﻢ ﺑِﺎﻟﻐَﻴْﺐِ ﻭَﺃَﻗَﺎﻣُﻮﺍ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻭَﻣَﻦ ﺗَﺰَﻛَّﻰ ﻓَﺈِﻧَّﻤَﺎ ﻳَﺘَﺰَﻛَّﻰ ﻟِﻨَﻔْﺴِﻪِ ﻭَﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟْﻤَﺼِﻴﺮُ
কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও হয়। আপনি কেবল তাদেরকে সতর্ক করেন, যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখেও ভয় করে এবং নামায কায়েম করে। যে কেউ নিজের সংশোধন করে, সে সংশোধন করে, স্বীয় কল্যাণের জন্যেই আল্লাহর নিকটই সকলের প্রত্যাবর্তন।

সুপ্রিয় পাঠক! ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
আপনারা তাদের সাথে পরস্পর লেনদেন করতে পারবেন।তবে তাদের সুদী কোনো কাজে আপনি তাদেরকে সহযোগিতা করতে পারবেন না।

(২)
কোরআন এবং হাদীসের অকাট্য দলীল প্রমাণ দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে যে,সুদ এবং সুদী কারবারে সকল প্রকার সহযোগিতা হারাম।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻭَﺗَﻌَﺎﻭَﻧُﻮﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺒِﺮِّ ﻭَﺍﻟﺘَّﻘْﻮَﻯ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻌَﺎﻭَﻧُﻮﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺈِﺛْﻢِ ﻭَﺍﻟْﻌُﺪْﻭَﺍﻥِ ﻭَﺍﺗَّﻘُﻮﺍ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺷَﺪِﻳﺪُ ﺍﻟْﻌِﻘَﺎﺏِ
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা।(সূরা- মায়েদা-২)

আপনাদের এখানকার লোকজন সুদী কারবারে হর-হামেশা লিপ্ত রয়েছে।সুতরাং তাদের সুদী লেনদেনের কিস্তি বাবৎ টাকা ঋণ দেয়াও এক প্রকার সহযোগিতা। তাই এই সুদী লোকদেরকে ঋণ দেওয়া কখনো জায়েয হবে না।কেননা সুদী লেনদেনে সহযোগিতা করা সম্পূর্ণরূপে হারাম।

তবে যদি কেউ আপনার নিকট এ বলে তাওবাহ করে, যে ভাই আমি সুদী লেনদেনে জড়িত হয়ে ভূল করেছি।শেষবারের মত আমাকে ঋণ দিয়ে সাহায্য করো।আমি আর এই লেনদেন করবো না।তাহলে এমতাবস্থায় আপনি তাকে ঋণ দিতে পারবেন।

(৩)
পাত্র-পাত্রী পরস্পর পরস্পরকে সরাসরি দেখে নেয়াই নিয়ম।এবং সর্বাধিক সতর্কতা।ছবি-ভিডিও এর শরয়ী হুকুম সম্পর্কে বর্তমান দুনিয়ার উলামায়ে কেরামদের মতপার্থক্য থাকলেও অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম বিনা জরুরতে ফটো তোলাকে নাজায়েয বলে থাকেন।

যেখানে সরাসরি পাত্র-পাত্রী দেখা অনেক অনেক কল্যাণকর,সেখানে ছবি ছেয়ে পাঠানো কখনো উচিৎ নয়।এবং বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত ছবি তোলা জায়েযও নয়।

পাত্র-পাত্রী দেখাদেখির জন্য ছবি তোলা জরুরতের আওতাধীন হবে না।কেননা জরুরত বলা হয়, যা না হলেই নয়। অথচ এখানে ছবি তোলা ছাড়াও সরাসরি পাত্র-পাত্রীকে দেখা সম্ভব রয়েছে।

আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, IOM.
পরিচালক
ইসলামিক রিচার্স কাউন্সিল বাংলাদেশ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...