আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
114 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
closed by
স্কুল, কলেজে ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৫ আগস্টের মতো জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানমালার একটি প্রচলিত কাঠামো হলো অনুষ্ঠানের একেবারে শুরুতেই সূরা বাকারার ১৫২ থেকে ১৫৫ নম্বর আয়াতে তেলাওয়াত করা। এ সময় সকলে বসে থাকে। এরপর জাতীয় সংগীত বাজানো হয় এ সময় সবাই দাঁড়িয়ে, মাথার টুপি খুলে রেখে জাতীয় সঙ্গীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। এছাড়াও উপস্থাপকের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে দর্শকদের অনুরোধ করা হয় যাতে জাতীয় সংগীত বাজানো সময় সকলের নীরব থাকে। তবে কোরআন তেলাওয়াতের সময় এ ধরনের কোন অনুরোধ করা হয় না (অবশ্য  তা করা উচিতও না)। বিষয়টি স্পষ্টতই পবিত্র কোরআনের জন্য চরম অবমাননাকর।

আমার প্রশ্ন :

১।এসব অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করা কি কোন মুসলিমের জন্য জায়েজ?

২।যে আয়াতগুলো তেলাওয়াত করা হয় সেই আয়াতগুলো কতটুকু প্রাসঙ্গিক?
______________________

অন্যদের বোঝার সুবিধার্থে শুধু ১৫২-১৫৫ আয়াতের অনুবাদগুলো নিচে দেয়া হলো :

আল-বাকারাহ

(152) Bengali - Bayaan Foundation
অতএব, তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমি তোমাদেরকে স্মরণ করব। আর আমার শোকর আদায় কর, আমার সাথে কুফরী করো না।

(153) Bengali - Bayaan Foundation
হে মুমিনগণ, ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।*
*পবিত্র কুরআনের অনেক স্থানে আল্লাহ নেককারদের সাথে আছেন, ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন ইত্যাদি বলা হয়েছে। তিনি আরশের উপর থেকেও বান্দাকে সাহায্য সহযোগিতা করার মাধ্যমে তার সাথে রয়েছেন বলে বুঝে নিতে হবে।

(154) Bengali - Bayaan Foundation
যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদেরকে মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত; কিন্তু তোমরা অনুভব করতে পার না।
.

(155) Bengali - Bayaan Foundation
আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।
closed
by (11 points)
+1
আসসালামু আলাইকুম,

(১) মুসলিমদের যেকোনো হালাল অনুষ্ঠানে কোর'আন তিলাওয়াত করা যাবে, এতে প্রবলেম নেই কিন্তু কোর'আন তিলাওয়াত করার পর এই যে হারামে লিপ্ত হচ্ছে সবাই এটা আসলে ইসলামিক জ্ঞান কম থাকার ই ফল। মানেহ বিসমিল্লাহ বলে মদ খাওয়ার মত আর কি।

আর ইসলামে কোনো দিবস পালন জায়েজ ই নেই, যেমন ঃ ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৫ আগস্টের মতো জাতীয় দিবস গুলি পালন করা হারাম বা জায়েজ নেই। সুতরাং স্কুল কলেজে যেসব দিবস পালন করা হচ্ছে তা আসলে ইসলামের দৃষ্টিতে ঠিক হচ্ছে নাহ, এসব থেকে দূরে থাকাই উত্তম একজন মুমিনের।

(২) যেকোনো আয়াত তিলাওয়াত করা যাবে। যদি প্রশ্ন করেন তাদের কে তারা ও বলতে পারবে না মেবি কেন এই আয়াত গুলি পড়ে। আসলে সমাজ এতো টাই মূর্খ হয়ে গেছে যে, জাস্ট এক্টুর জন্য তিলাওয়াত করেই হারাম কাজ করা হয়।

যারা ইসলাম বুঝে নাগ, তারা মনে করে, তিলাওয়াত তো করা হয় তার মানে হালাল অনুষ্ঠান, নাহ কখনোই হালাল না এইগুলা। এইগুলা আসলেই কোর'আন কে ইনসাল্ট করা। কোর'আন পড়ার পর হালাল কিছু করা উচিত।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
selected by
 
Best answer
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
বৈধ কোনো অনুষ্ঠান ও দ্বীনী মাহফিল কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু করা জায়েয এবং বরকতপূর্ণ কাজ। তা সাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা প্রমাণিত।

এক হাদীসে আছে, আবু সাঈদ খুদরী রা. বলেন,
أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم إذا جلسوا كان حديثهم - يعني الفقه - إلا أن يقرأ رجل سورة أو يأمر رجلا بقراءة سورة.
রাসূলুল্লাহর সাহাবীগণ যখন পরস্পর একত্রে বসতেন (এবং তারা ফিকহ ও দ্বীনী বিষয়াদি নিয়ে কথাবার্তা বলতেন) তখন তারা কথাবার্তা শুরুই করতেন না যতক্ষণ না তাদের মাঝে কেউ কোনো সূরা তিলাওয়াত করতেন, অথবা তাদের মাঝে কাউকে আদেশ করতেন কুরআনের কোনো সূরা পাঠ করার জন্য। -মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৩২২; আততাবাকাতুল কুবরা, ইবনে সাআদ ২/৩৭৪; আলমাদখাল ইলাস সুনানিল কুবরা, বায়হাকী, হাদীস ৪১৯

খতীব বাগদাদী রাহ. ‘আলজামে লিআখলাকির রাবী ওয়া আদাবিস সামে’ কিতাবে হাদীস ইমলার মজলিসের আদব বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, হাদীস ইমলা শুরু করার আগে উচিত হল, মজলিসের শুরুতে কুরআন তিলাওয়াত করা। কেননা, মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ আমাদের নিকট বর্ণনা করেন ... আবু নাযরা রা. বলেন,
كان أصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا اجتمعوا تذاكروا العلم وقرءوا سورة.

রাসূলুল্লাহর সাহাবীগণ পরস্পর যখন একত্রিত হতেন তখন তাঁরা ইলমের মুযাকারা করতেন। এবং কুরআনের কোনো সূরা তিলাওয়াত তরতেন। -আলজামে লিআখলাকির রাবী ওয়া আদাবিস সামে ২/৬৪

নাচ গান হবে,এমন অনুষ্ঠান কুরআন তিলাওয়াত দিয়ে শুরু করা কুরআনের সাথে চরম বেয়াদবী।
এটা স্পষ্ট নাজায়েজ। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: إِنَّ اللهَ يَرْفَعُ بِهٰذَا الْكِتَابِ أَقْوَامًا وَيَضَعُ بِه اٰخَرِينَ
উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা এ কিতাব কুরআনের মাধ্যমে কোন কোন জাতিকে উন্নতি দান করেন। আবার অন্যদেরকে করেন অবনত।
(মুসলিম ৮১৭, ইবনু মাজাহ ২১৮, আহমাদ ২৩২, দারিমী ৩৪০৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫১২৫, শু‘আবূল ঈমান ২৪২৮, সহীহাহ্ ২২৩৯।)

وکذا قولہم بکفرہ، إذا قرأ القرآن في معرض کلام الناس، کما إذا اجتمعوا فقرأ فجمعناہم جمعًا، ولہ نظائر کثیرۃٌ في ألفاظ التکفیر کلہا ترجع إلی قصد الاستخفاف، بہ قال قاضیخان الفقاعی إذا قال عند فتح الفقاع للمشتري صل علی محمد ، قالوا: یکون آثمًا۔ (الأشباہ والنظائر ۱۰۴ زکریا)
যার সারমর্ম হলো কুরআনের অসম্মান হয়,অবমাননা হয়,এহেন জায়গায় কুরআন তেলাওয়াত করা গুনাহ। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

কুরআনকে অনুপযুক্ত স্থানে যেভাবে রাখা যাবে না, ঠিক তেমনি কুরআনকে অনুপযুক্ত স্থানে তিলাওয়াতও করা যাবে না।
সুতরাং যে মঞ্চে নাচগান হবে বলে নিশ্চিত, সেই মঞ্চে কখনো কুরআন তিলাওয়াত করাও যাবে না।


(০২)
হ্যাঁ, উক্ত আয়াত গুলি প্রাসঙ্গিক। 

যেহেতু শহীদদের স্বরনে আয়োজিত অনুষ্ঠান গুলোতে উক্ত আয়াত গুলি তিলাওয়াত করা হয়। আর উক্ত আয়াত গুলির মধ্যে ১৫৪ নং আয়াতে শহীদদের ব্যপারে বিশেষ ফজিলত উল্লেখ রয়েছে।

সুতরাং বলা যায় যে উক্ত আয়াত গুলি প্রাসঙ্গিক। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ لَا تَقُوۡلُوۡا لِمَنۡ یُّقۡتَلُ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ اَمۡوَاتٌ ؕ بَلۡ اَحۡیَآءٌ وَّ لٰکِنۡ لَّا تَشۡعُرُوۡنَ ﴿۱۵۴﴾

আর আল্লাহর পথে যারা নিহত হয় তাদেরকে মৃত বলো না, বরং তারা জীবিত; কিন্তু তোমরা উপলব্ধি করতে পার না।
(সুরা বাকারা ১৫৪)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...