আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
248 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (-1 points)
আসসালামু আলাইকুম,

কোনো মুসলিম যদি না বুঝে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে তাহলে আমরা তার অপরাধের দায় এড়ানোর জন্য তার দিকে ইঙ্গিত করে বলে থাকি-
'সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নেই।'
প্রশ্ন: এরকম কোনো কথা বলা কী ঠিক হবে?
by
জঙ্গিবাদ বলতে আপনি কি বুঝেন? আপনার কাছে জঙ্গিবাদের সংজ্ঞা কি? 
by (-1 points)
জিহাদ ছাড়া বাকি সব সন্ত্রাসীমূলক কর্মকান্ডকে জঙ্গিবাদ বলা হয়। 
আর জিহাদ বলা হয় আল্লাহর জমিনে তার দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করা বা দ্বীনের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য তাগুতী-কুফরি-শিরকি শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করা।

1 Answer

0 votes
by (589,620 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ- 
মুফতী শফী রাহ লিখেন,
সাধারণত জিহাদ করা ফরযে কেফায়া।
পরিভাষায় ফরযে কেফায়া ঐ ফরয বিধানকে বলা হয়,যার সম্পর্ক কোনো ব্যক্তি মুসলমানের সাথে হবে না।বরং যার সম্পর্ক থাকবে পুরো মুসলিম জাতীর সাথে। এমন ফরয বিধানকে কিছু লোক আদায় করে নিলে সকল মুসলমানের পক্ষ্য থেকে আদায় হয়ে যাবে।
যেমন, মৃত ব্যক্তির কাফন দাফন সহ জানাযার নামায নিকটাত্মীয়র উপর ফরযে কেফায়া।যদি নিকটাত্মীয়রা আদায় করে নেয়,তাহলে অাশপাশের অন্যান্য মুসলমানের পক্ষ্য থেকে ফরয আদায় হয়ে যাবে।যদি নিকটাত্মীয় বা আশপাশের মুসলমানরা সেই দায়িত্বকে আদায় না করে, তাহলে যতসামান্য দূরের যে সমস্ত মুসলমানের নিকট এই সংবাদ পৌছবে,তাদের উপরও দাফন কাফনে শরীক হওয়া ফরযে কেফায়া। যদি তারাও শরীক না হয়,তাহলে এর চেয়ে বেশী দূরের মুসলমানের উপরও ফরযে কেফায়া। এবং জিহাদের বিষয়টা ঠিক এরকমই।

তাছাড়া দাওয়াত ও তাবলীগ,মসজিদ নির্মান,দ্বীনী প্রতিষ্টান প্রতিষ্টা করা,ইয়াতিম এবং গরীবদের হাজত পূর্ণ করা ইত্যাদি বিষয়ও ফরযে কেফায়ার অন্তর্ভুক্ত।
এগুলাকে ফরযে আইন করা হয়নি যাতেকরে লোকজন ফরযে আইন যেমন নামায রোযা সহ নিজ যাবতীয় প্রয়োজন পূর্ণ করার সুযোগ পায়।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,
لاَّ يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ غَيْرُ أُوْلِي الضَّرَرِ وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فَضَّلَ اللّهُ الْمُجَاهِدِينَ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ عَلَى الْقَاعِدِينَ دَرَجَةً وَكُـلاًّ وَعَدَ اللّهُ الْحُسْنَى وَفَضَّلَ اللّهُ الْمُجَاهِدِينَ عَلَى الْقَاعِدِينَ أَجْرًا عَظِيمًا
গৃহে উপবিষ্ট মুসলমান-যাদের কোন সঙ্গত ওযর নেই এবং ঐ মুসলমান যারা জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর পথে জেহাদ করে,-সমান নয়। যারা জান ও মাল দ্বারা জেহাদ করে, আল্লাহ তাদের পদমর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন গৃহে উপবিষ্টদের তুলনায় এবং প্রত্যেকের সাথেই আল্লাহ কল্যাণের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ মুজাহেদীনকে উপবিষ্টদের উপর মহান প্রতিদানে শ্রেষ্ঠ করেছেন।(সূরা নিসা-৯৫)

উক্ত আয়াতে জান মাল দ্বারা জিহাদ কারীর যদিও বেশী ফযিলত বুঝানো হয়েছে।তবে যারা জিহাদে যায়নি তাদের জন্যও আল্লাহ কল্যাণের ওয়াদা করেছেন।কাজেই বুঝা গেল জিহাদ সাধারণত ফরযে কেফায়া।

অন্য আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَمَا كَانَ الْمُؤْمِنُونَ لِيَنفِرُواْ كَآفَّةً فَلَوْلاَ نَفَرَ مِن كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَآئِفَةٌ لِّيَتَفَقَّهُواْ فِي الدِّينِ وَلِيُنذِرُواْ قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُواْ إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ
আর সমস্ত মুমিনের অভিযানে বের হওয়া সঙ্গত নয়। তাই তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হলো না, যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান করে স্বজাতিকে, যখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা বাঁচতে পারে।


ফরযে কেফায়া কখনো ফরযে আইন হয়ে যায়।
যদি কোনো কওম ফরযে কেফায়া আদায় করার ব্যাপারে গাফলতি করে,বা ঐ দায়িত্ব আদায়কারী তাদের মধ্যে কেউ না থাকে,বা ঐ দায়িত্ব আদায় করার মত সামর্থ্য তাদের নিকট না থাকে,তাহলে তখন পার্শবর্তী মুসলমানদের উপর সেই দায়িত্বকে আঞ্জাম দেয়া ফরযে আইন হয়ে যায়।

বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/1889


কোনো ধর্মই বিশেষত ইসলাম ধর্ম জঙ্গিবাদের শিক্ষা দেয় না।এমন উদ্দেশ্যে যদি কেউ উপরোক্ত কথাগুলো বলে,তাহলে কথাটা সত্য।বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের বেলায় কথাটা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট ও সত্য।


এমন উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়ে, এ কথা বলা যেতে পারে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...