বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
মুফতী শফী রাহ লিখেন,
সাধারণত জিহাদ করা ফরযে কেফায়া।
পরিভাষায় ফরযে কেফায়া ঐ ফরয বিধানকে বলা হয়,যার সম্পর্ক কোনো ব্যক্তি মুসলমানের সাথে হবে না।বরং যার সম্পর্ক থাকবে পুরো মুসলিম জাতীর সাথে। এমন ফরয বিধানকে কিছু লোক আদায় করে নিলে সকল মুসলমানের পক্ষ্য থেকে আদায় হয়ে যাবে।
যেমন, মৃত ব্যক্তির কাফন দাফন সহ জানাযার নামায নিকটাত্মীয়র উপর ফরযে কেফায়া।যদি নিকটাত্মীয়রা আদায় করে নেয়,তাহলে অাশপাশের অন্যান্য মুসলমানের পক্ষ্য থেকে ফরয আদায় হয়ে যাবে।যদি নিকটাত্মীয় বা আশপাশের মুসলমানরা সেই দায়িত্বকে আদায় না করে, তাহলে যতসামান্য দূরের যে সমস্ত মুসলমানের নিকট এই সংবাদ পৌছবে,তাদের উপরও দাফন কাফনে শরীক হওয়া ফরযে কেফায়া। যদি তারাও শরীক না হয়,তাহলে এর চেয়ে বেশী দূরের মুসলমানের উপরও ফরযে কেফায়া। এবং জিহাদের বিষয়টা ঠিক এরকমই।
তাছাড়া দাওয়াত ও তাবলীগ,মসজিদ নির্মান,দ্বীনী প্রতিষ্টান প্রতিষ্টা করা,ইয়াতিম এবং গরীবদের হাজত পূর্ণ করা ইত্যাদি বিষয়ও ফরযে কেফায়ার অন্তর্ভুক্ত।
এগুলাকে ফরযে আইন করা হয়নি যাতেকরে লোকজন ফরযে আইন যেমন নামায রোযা সহ নিজ যাবতীয় প্রয়োজন পূর্ণ করার সুযোগ পায়।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
لاَّ يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ غَيْرُ أُوْلِي الضَّرَرِ وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فَضَّلَ اللّهُ الْمُجَاهِدِينَ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ عَلَى الْقَاعِدِينَ دَرَجَةً وَكُـلاًّ وَعَدَ اللّهُ الْحُسْنَى وَفَضَّلَ اللّهُ الْمُجَاهِدِينَ عَلَى الْقَاعِدِينَ أَجْرًا عَظِيمًا
গৃহে উপবিষ্ট মুসলমান-যাদের কোন সঙ্গত ওযর নেই এবং ঐ মুসলমান যারা জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর পথে জেহাদ করে,-সমান নয়। যারা জান ও মাল দ্বারা জেহাদ করে, আল্লাহ তাদের পদমর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন গৃহে উপবিষ্টদের তুলনায় এবং প্রত্যেকের সাথেই আল্লাহ কল্যাণের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ মুজাহেদীনকে উপবিষ্টদের উপর মহান প্রতিদানে শ্রেষ্ঠ করেছেন।(সূরা নিসা-৯৫)
উক্ত আয়াতে জান মাল দ্বারা জিহাদ কারীর যদিও বেশী ফযিলত বুঝানো হয়েছে।তবে যারা জিহাদে যায়নি তাদের জন্যও আল্লাহ কল্যাণের ওয়াদা করেছেন।কাজেই বুঝা গেল জিহাদ সাধারণত ফরযে কেফায়া।
অন্য আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَمَا كَانَ الْمُؤْمِنُونَ لِيَنفِرُواْ كَآفَّةً فَلَوْلاَ نَفَرَ مِن كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَآئِفَةٌ لِّيَتَفَقَّهُواْ فِي الدِّينِ وَلِيُنذِرُواْ قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُواْ إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ
আর সমস্ত মুমিনের অভিযানে বের হওয়া সঙ্গত নয়। তাই তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হলো না, যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান করে স্বজাতিকে, যখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা বাঁচতে পারে।
ফরযে কেফায়া কখনো ফরযে আইন হয়ে যায়।
যদি কোনো কওম ফরযে কেফায়া আদায় করার ব্যাপারে গাফলতি করে,বা ঐ দায়িত্ব আদায়কারী তাদের মধ্যে কেউ না থাকে,বা ঐ দায়িত্ব আদায় করার মত সামর্থ্য তাদের নিকট না থাকে,তাহলে তখন পার্শবর্তী মুসলমানদের উপর সেই দায়িত্বকে আঞ্জাম দেয়া ফরযে আইন হয়ে যায়।
কোনো ধর্মই বিশেষত ইসলাম ধর্ম জঙ্গিবাদের শিক্ষা দেয় না।এমন উদ্দেশ্যে যদি কেউ উপরোক্ত কথাগুলো বলে,তাহলে কথাটা সত্য।বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের বেলায় কথাটা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট ও সত্য।
এমন উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়ে, এ কথা বলা যেতে পারে।