আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
256 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
reshown by

আসসালামু আলাইকুম।

আমার স্ত্রী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে। নবম শ্রেনীতে পড়ার সময় সে একটা সাধারন পারিবারিক ব্যাপার নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরে যায়। এবং প্রায় ৫-৬ মাস এভাবে থাকার পরে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যায়।

কলেজে পড়ার সময় সে আরও একটি বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরে। এবারে সে কয়েকমাস এভাবে যাওয়ার পরে পরিবারকে জানায়। তার বাবা তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তারের চিকিৎসায় আলহামদুলিল্লাহ ভালো হয়ে যায়। 

বিয়ের কিছুদিন পরে ঝগড়ার এক পর্যায়ে আমি বলি,

আমি তোমার সাথে সংসার করতে চাচ্ছিনা।

সে এটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরে যায় যে আমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে। আমি স্থানীয় মসজিদের ইমাম সাহেবের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হই তালাক হয়নি। এটা ওকে বলার পরেও ওর দুশ্চিন্তা যায় না। পুর্বের ডাক্তারের প্রেসক্রাইব করা ওষুধ খেয়ে ভালো হয়।এভাবে মাঝে মাঝেই আমার স্ত্রী নানা বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে। মাঝে মাঝে ওষুধ খায়। অনেক সময়ই খায়না।

আমার স্ত্রী এখন গর্ভবতী আলহামদুলিল্লাহ। সে এখনও এসব বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে। সে ফেসবুক, গুগল, ইউটিউবে তালাক বিষয়ে সার্চ করে, আর্টিকেল পড়ে ভিডিও দেখে। এতে করে তার টেনশন আরও বাড়ে। আমি ওকে বুঝানোর উদ্দেশ্যে এসব আর্টিকেল ও ভিডিও দেখি। আমার মতামত জানাই। এই বোঝানো বা আলোচনার সময়ে স্বভাবতই তালাক বা ডিভোর্স শব্দ চলে আসে। সে এটা নিয়েও দুশ্চিন্তায় পরে যায় যে আমি বোঝানোর সময় তালাক শব্দ বলায় তালাক হয়ে গেছে কিনা? উল্লেখ্য পেটে বাচ্ছা থাকায় ও এখন ডিপ্রেশন এর ওষুধ খেতে পারছেনা। 

এমতাবস্থায় কয়েকদিন আগে ও আমাকে একটা আর্টিকেল দেখায় যেখানে তালাক বিষয়ে প্রচলিত কিছু ফতোয়া (আর্টিকেলের ভাষায় হুজুরদের বক্তব্য) এর বিপক্ষে যুক্তি দেখানো হয় কুরআনের আয়াতের (সম্ভবত সুরা বাক্বারা এবং আত-ত্বলাক) মাধ্যমে। সেই আর্টিকেল নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে আমি বলি,

ওইসব হুজুরদের কথা বিশ্বাস করলে আমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে, চলে যাও।

এই কথা দ্বারা উদ্দেশ্য ছিলো ওই কথাগুলো (প্রচলিত ফতোয়া) ভুল এটা বোঝানো। রেফারেন্স হিসেবে কয়েকটি ফতোয়া দিয়ে দিচ্ছি।

  • বিয়ের আগে তালাক দিলে তালাক হয়ে যাবে।
  • নির্জনে বসে মনে মনে তালাক দিলে তালাক হয়ে যাবে।
  • অধ্যয়নের সময় স্ত্রীর কথা মনে করে তালাক বললে তালাক হয়ে যাবে।

আমি ওকে বোঝানোর জন্য এই কথাটা ব্যাখ্যা করে বলি। এরপর ওর ধারনা হয় এই কথার দ্বারা আমাদের তালাক হয়ে গেছে। আমি বর্তমানে যেখানে আছি সেখানকার বড় মসজিদের ইমাম ও খতিব সাহেবের কাছে এই ব্যাপারে কথা বলি। ওনারা আমাকে আশ্বস্ত করেন এই দ্বারা তালাক হয়নি। এরপরও আমার স্ত্রীর সন্দেহ যায়না। এবারে সে বলে ওই কথার দ্বারা এক তালাক হয়েছে এবং আমি কয়েকবার ওই কথাটা বলেছি (প্রকৃতপক্ষে আমি একবারই বলেছি এবং বোঝানোর নিয়তে বলেছি), তাই যতবার বলেছি ততবার তালাক হয়েছে। এরপরে আমি আবারও ইমাম সাহেবের কাছে যাই। উনি আমাকে আবারও বলেন এই কথায় তালাক হয়নি। এবং পানি পরে দেন ও বেশি বেশি জিকির করতে বলেন যাতে এসব মনে না আসে।

এতকিছুর পরেও আমার স্ত্রীর দুশ্চিন্তা যাচ্ছেনা। মুফতি সাহেব দয়া করে উত্তর দিবেন। খুবই পেরেশানির মধ্যে আছি।

ধন্যবাদ।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
يشترط بالاتفاق القصد فى الطلاق، وهو إرادة التلفظ به ولو لم ينو فلا يقع طلاق فقيه يكره ولا طلاق حاك عن نفسه أو غيره لأنه لام يقصد معناه، بل قصد التعليم والحكاية، (الفقه الاسلام وادلته، كتاب الطلاق، باب شروط الطلاق-7/368)
সর্বসম্মতিক্রমে তালাকের জন্য নিজের ইচ্ছা বা দৃঢ় মনোভাব থাকা শর্ত। অর্থাৎ এমন শব্দ উচ্ছারণ করা শর্ত যাতে নিজের ইচ্ছার কথা প্রতিফলিত হয়।যদি তালাকের নিয়ত না থাকে, তাহলে তালাক পতিত হবে না। সুতরাং তালাকের অপছন্দকারী ব্যক্তির তালাক শব্দ বলার দ্বারা তালাক হবে না।
অন্তরের প্ররোচিকা বা অন্তরের প্ররোচিকা দ্বারা তালাক হবে না।কেননা এখানেতো তালাক শব্দের অর্থকে উদ্দেশ্য নেয়া হচ্ছে না।বরং শিক্ষা বা কাহিনি বর্ণনার উদ্দেশ্যে তালাক শব্দ উচ্ছারণ করা হয়েছে। (আল ফিকহুল ইসলামি ওয়া আদিল্লাতুহু-৭/৩৬৮)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
খতিব সাহেবের বক্তব্য সঠিক।আপনার প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার পরিবারে কোনো সমস্যা হয়নি। তালাক হয়নি। আপনারা নিঃসন্দেহে সংসার করতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...