আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
121 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (55 points)
১/এক বোনের প্রশ্ন

আমি  খোলা তালাক নিছিলাম।এখন ইদ্দত পালন না করে আবার বিয়ে করছি।ওইসময় ইদ্দত সম্পর্কে না জানার কারনে এমন ভুল হয়ছে।বিয়ের ২ দিন পর হাসবেন্ড প্রবাসে চলে যায়।বিয়ে হয়ছে এখন ৬ মাস চলতেছে।এখন আমি শরীয়ত মোতাবেক আবার বিয়ে পরতে চাচ্চি।এখন আমাকে কি ইদ্দত পালন করতে হবে?


২/ আমাদের গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুরে আমএয়া থাকি রংপুর বিভাগে।আমার আব্বু এখানে চাকরীর জন্য থাকেন প্রায় ৩২ বছর থেকে রংপুরে আছেন।লক্ষীপুরে ৩ বছর পর পর বা অনেক বছর পর পর যাওয়া হয় ৭/৮ দিনের জন্য পরে আবার চলে আসি।আমাদের জমি এবং বাসা রংপুরে আছে আর লক্ষীপুরেও কিছু জমি আছে বাড়ি বলতে আমার চাচা আর আব্বু মিলে ঘর করেছে আমার আব্বুর ২ টা রুম আর আমার চাচার বাকি গুলা।কিন্তু বলতে গেলে ওটা আমার চাচার ই ঘর।আমাদের নাম তেমন নাই।আমরা গেলে ওখানে থাকি একটা ঘরে চাচাদের মাঝে খাই ৭ দিন ই তো থাকি।আমরা আর কখনো লক্ষীপুরে একেবারে থাকবো কি না জানিনা।তবে ৯০% যে রংপুরেই সারাজীবনের জন্য থেকে যাবো এখন বলা যায়না কখন কি হয়। তাহলে এখন আমরা লক্ষীপুরে গেলে কি কসরের সালাত পড়তে হবে?

৩/আমার আরেকটা প্রশ্ন- উপরে তো বললামই আমরা রংপুর বিভাগে থাকি আর আমাদের গ্রামের বাসা লক্ষীপুরে।আমার জন্মের আগ থেকে আমার বাবা মা রংপুরে থাকে আমি জন্মের পর থেকে রংপুরেই মানুষ কখনই লক্ষীপুরে থাকিনি জীবনে ৩/৪ বার গেছি ঘুরতে ৭/৮ দিন থেকে চলে এসেছি।আমার কোনো ইচ্ছেই নেই সেই জায়গায় বিয়ে করার।আমি আমার বাবা নায়ের একমাত্র মেয়ে তাই আমাদের পরিবারের অনেকেরই টাকার লোভ টা আমার উপরে যার কারণে ওরা আমার ভালো মন্দ বুঝেনা ওদের টা বুঝে।আমার বাবা ওদেরকে অন্ধের মত মানে ভালো মন্দ বুঝেনা আর অনেম রাগি।তাই আমাকে জোর করে সেকহানে বিয়ে দিতে চেয়েছিল আমি করিনি। এখন আবার বিয়ে দিতে চাইতেছে কিন্তু আমি করতে চাইনা অনেক জটিলতার কারণে আমার ফ্যামিলির ওরা জাদু টোনা করে একটু হলেই মানুষকে ওই জায়গায় আমার বিয়ে হলে আমাকে তারা বাচতে দিবেনা+আমি ওখানে বড় হইনি তাই আমার ইচ্ছে নেই।এটা তো আমার বাবা বুঝেনা।এখন উনি অনেক রাগ হয় বলে যে আমি যদি রংপুরে বিয়ে করি তাহলে আমার আব্বু আমাদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখবেনা।অনেক কথা বলে।আমার জন্য এখানে একটা প্রস্তাব ও এসেছে।ছেলেটা হাফেজ+দ্বীনদার আমি যেমনটা চাই।আমাদের দুজনেরই দুজনকে পছন্দ হয়েছে তাই এখানেই বিয়ে করতে চাই কিন্তু ওই যে আমার বাবা কে তার ভাইয়েরা উলটা বুঝিয়েছে যার কারনে এখন আর উনি চাচ্ছেই না আমাকে রংপুরে বিয়ে দিতে।কিন্তু আমি এটা মেনে নিতে পাচ্ছিনা।অনেক সমস্যার কারণে উপরে কিছু বলেছি।আর আমি বেদ্বীন কে বিয়ে করতেও পারব না।এখন আমার বাবা যদি আমার উপরে রাগ হয়ে আমাকে রংপুরে বিয়ে দেয় তাহলে কি আমার পাপ হবে?আমার আম্মু ও আমাকে অনেক কথাই বলতেছেন যে তোর বাবার কথায় রাজি হয়ে যা আমাদের জীবনটাই এমন অন্যের সুখের জন্য নিজের সুখ বিসর্জন দিতে হবে।রংপুরে বিয়ে করলে দেখবি তোর সংসার টিকবেনা মানে অভিশাপ ও দেয় হুদাই।

এখন আমি কি করব শায়েখ?আমি বেদ্বীন কে বিয়ে করতে পারব না।নিজের মনের বিরুদ্ধে কিভাবে যাব?জোর করে কি বিয়ে হয়?আমার রংপুরে এখানে বিয়ে হতে হতেই হলোনা আমারও একটা মায়া জন্মে গিয়েছে+উনি দ্বীনদার।আমাকে একটা সমাধান দিন।আমার বাবা হয়ত একদিন বুঝবে তাকে তার ভাইয়েরা ঠকাচ্ছে কিন্তু ততদিনে দেরি হয়ে যাবে।আমি কিভাবে তাদেরকে বুঝাব যে আমি কি চাই?আমি রংপুরেই থাকতে চাই।

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
খোলা তালাক গ্রহণের পর যে বিবাহ হয়েছে,সেই বিবাহ শুদ্ধ হয়নি। খোলা তালাক গ্রহণের তারিখ থেকে ৩ মাস পর আপনাকে আবার বিয়ে করতে হবে। তবে যদি ঐ বোনের গর্ভে সন্তান থাকে, তাহলে সন্তান প্রস্রবের পর তাকে বিয়ে করতে হবে। দ্বিতীয় ঐ ব্যক্তি যার সাথে ইদ্দতে বিয়ে হয়েছিলো,সে প্রবাসে থাকলে যথাযথ নিয়ম অনুসারে আবার বিয়ে হতে হবে।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/2679


(২)
আপনার পিত্রালয় লক্ষপুরে যেহেতু এখনো আপনার বাবার দুইটি রুম রয়েছে, এবং জায়গাজমি রয়েছে, তাই আপনার জন্য রংপুর এবং লক্ষীপুর উভয়টিই ওয়াতানে আসলি। সুতরাং যেভাবে রংপুরে আপনি মুকিম ঠিক তেমনি লক্ষীপুরেও আপনি মুকিম হিসেবে বিবেচিত হবেন।
الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (2/ 132):
"(قوله: والأصل أن الشيء يبطل بمثله) كما يبطل الوطن الأصلي بالوطن الأصلي، و وطن الإقامة بوطن الإقامة، و وطن السكنى بوطن السكنى". فقط واللہ اعلم
فتوی نمبر : 144105200979
دارالافتاء : جامعہ علوم اسلامیہ علامہ محمد یوسف بنوری ٹاؤن


(৩)

চার মাযহাবের গ্রহণযোগ্য ফেকহী গ্রন্থ 'আল-মা'সুআতুল ফেকহীয়্যায়(২৮/৩২৭)' বর্ণিত রয়েছে,
"طاعة المخلوقين - ممّن تجب طاعتهم – كالوالدين ، والزّوج ، وولاة الأمر : فإنّ وجوب طاعتهم مقيّد بأن لا يكون في معصية ، إذ لا طاعة لمخلوق في معصية الخالق" انتهى
শরীয়ত কর্তৃক যাদের বিধিনিষেধের অনুসরণ করা ওয়াজিব।যেমনঃ মাতাপিতা,স্বামী,এবং রাষ্ট্রীয় প্রধান বা তাদের আদেশপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ।তাদের বিধিনিষেধ আমলে নেয়া তখনই ওয়াজিব যখন তা শরীয়ত বিরোধী হবে না।কেননা 'সৃষ্টিকর্তার নাফরমানীতে কোনো সৃষ্টজীবের অনুসরণ করা যায় না'(মর্মে হাদীসে বর্ণিত রয়েছে)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1707

আরো জানুন -https://www.ifatwa.info/1722
 
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ( تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا ، وَلِحَسَبِهَا ، وَلِجَمَالِهَا ، وَلِدِينِهَا ، فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ) 
চারটি জিনিস দেখে মহিলাকে সাধারণত বিয়ে করা হয়,(১)সম্পদ(২)বংশ(৩)সুন্দর্য্য (৪)দ্বীনদারী
তুমি দ্বীনদারীকে অগ্রাধিকার দাও।{যদি তা না করো তবে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে(تَرِبَتْ يَدَاكَ এর অনেক ব্যাখার একটি ব্যাখা)}(সহীহ বুখারী-৪৮০২,সহীহ মুসলিম-১৪৬৬)


সম্মাণিত দ্বীনী বোন!
দ্বীনদার পাত্র পাত্রী বাঁচাই করা এবং জীবনে পাওয়া আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় একটি নিয়ামত। সুতরাং মাতাপিতাকে দ্বীনদার পাত্রর ফযিলত সম্পর্কে বুঝাতে থাকুন। মাতাপিতাকে সাথে নিয়েই কিছু করার চেষ্টা করুন। মাতাপিতাকে অগ্রাহ্য না করে বরং মাতাপিতার পরামর্শেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাই কল্যাণজনক। প্রয়োজনে চাচাতো ভাইদের মধ্য থেকে তুলনামূলক কাউকে কিছু পছন্দ হলে তাকে তাবলীগে তিন চিল্লা ও দাড়ি টুপি পরিধানের কথা বলে দেখতে পারেন। অথবা চাচাতো ভাইদের সাথে সারাসরি আলাপ করুন যে,আপনি আপনার সম্পত্তি কাউকে দিবেন না বরং আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে দিতে পারেন। হয়তো এইসব শুনে তারা চাপ প্রয়োগ বন্ধ করে দিতে পারে। আল্লাহ আপনার সহায় হোক।আমীন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,140 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 160 views
...