বিসমিহি তা'আলা
সমাধানঃ-
মৃত্যু পরবর্তী স্বামী-স্ত্রী পরস্পর পরস্পরকে দেখা,স্পর্শ করা,গোসল দেয়া ইত্যদির পৃথক পৃথক বিধান রয়েছে।
লক্ষণীয় যে,
(ক)
স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর ইদ্দত শেষ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত, মৃত স্বামীর সাথে জীবিত স্ত্রীর সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে যায়নি। বরং ইদ্দত শেষ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মৃত স্বামীর সাথে উক্ত স্ত্রীর আংশিক সম্পর্ক এখনো বাকী রয়েছে।
যেজন্য স্ত্রী এ সময়ে অন্য কোথাও বিয়ে বসতে পারবে না।
যেহেতু মৃত স্বামীর সাথে জীবিত স্ত্রীর অাংশিক সম্পর্ক বাকী এখনো অবশিষ্ট রয়েছে। তাই স্ত্রী মৃত স্বামীকে দেখতে পারবে,স্পর্শ করতে পারবে,এমনকি প্রয়োজনে তাকে গোসল ও দিতে পারবে।
যেমন বর্ণিত রয়েছে,
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবু বকর রাযি থেকে বর্ণিত,
ﺭﻭﻯ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﻣﺎﻟﻚ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻮﻃﺄ ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﺑَﻜْﺮٍ ﺃَﻥَّ ﺃَﺳْﻤَﺎﺀَ ﺑِﻨْﺖَ ﻋُﻤَﻴْﺲٍ ﻏَﺴَّﻠَﺖْ ﺃَﺑَﺎ ﺑَﻜْﺮٍ ﺍﻟﺼِّﺪِّﻳﻖَ ﺣِﻴﻦَ ﺗُﻮُﻓِّﻲَ ﺛُﻢَّ ﺧَﺮَﺟَﺖْ ﻓَﺴَﺄَﻟَﺖْ ﻣَﻦْ ﺣَﻀَﺮَﻫَﺎ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻤُﻬَﺎﺟِﺮِﻳﻦَ ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ ﺇِﻧِّﻲ ﺻَﺎﺋِﻤَﺔٌ ﻭَﺇِﻥَّ ﻫَﺬَﺍ ﻳَﻮْﻡٌ ﺷَﺪِﻳﺪُ ﺍﻟْﺒَﺮْﺩِ ﻓَﻬَﻞْ ﻋَﻠَﻲَّ ﻣِﻦْ ﻏُﺴْﻞٍ ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ ﻻ )
আসমা বিনতে উমাইস রাযি, আবু বকর রাযি, কে মৃত্যু পরবর্তী গোসল দিয়েছিলেন।অতঃপর মুহাজির সাহাবাদের এক জামাতকে মাস'আলা জিজ্ঞেস করে বললেন,আমি রোযাদার, এবং আজকে প্রচন্ড শীত,আমার জন্য কি গোসল করা জরুরী?তারা উত্তরে বললেন,না, গোসল করা জরুরী না।
মুআত্তায়ে মালিক-৪৬৬
ﻳﺪﻝ ﻋﻠﻰ ﺟﻮﺍﺯ ﻏﺴﻞ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﺯﻭﺟﻬﺎ ﺑﻌﺪ ﻭﻓﺎﺗﻪ ، ﻷﻥ ﻫﺬﺍ ﻛﺎﻥ ﺑﺤﻀﺮﺓ ﺟﻤﺎﻋﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﺼﺤﺎﺑﺔ ... ﻻ ﺳﻴﻤﺎ ﺃﻥ ﺃﺑﺎ ﺑﻜﺮ ﺃﻭﺻﻰ ﺑﺬﻟﻚ ﻭﻟﻢ ﻳﻌﻠﻢ ﻟﻪ ﻣﺨﺎﻟﻒ ﻣﻦ ﺍﻟﺼﺤﺎﺑﺔ ﻓﺜﺒﺖ ﺃﻧﻪ ﺇﺟﻤﺎﻉ .
মু'আত্তায়ে মালিক গ্রন্থের ব্যখ্যা মুনত্বাকা নামক গ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে,
এই হাদীস এ কথার প্রমাণ করে যে,মহিলা তার মৃত স্বামীকে গোসল দিতে পারবে।কেননা এই ঘটনা সাহাবাদের একটি জামাতের সামনে ঘটেছিলো।এমনকি অন্য এক বিবরণ দ্বারা জানা যায় যে,আবু বকর উনার স্ত্রীকে গোসল দানের ওসিয়ত করে গিয়েছিলেন।ইতিহাসে আসমা বিনতে উমাইসের এ গোসল দানের বিরোধিতা কোথাও পাওয়া যায়নি।কাজেই বুঝা গেল এ বিষয়ে সাহাবাদের ইজমা হয়েছিলো।
হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,
ﻭﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﻗَﺎﻟَﺖْ ﻟَﻮْ ﻛُﻨْﺖُ ﺍﺳْﺘَﻘْﺒَﻠْﺖُ ﻣِﻦْ ﺃَﻣْﺮِﻱ ﻣَﺎ ﺍﺳْﺘَﺪْﺑَﺮْﺕُ ﻣَﺎ ﻏَﺴَّﻞَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻏَﻴْﺮُ ﻧِﺴَﺎﺋِﻪِ
তিনি বলেন,আমি পরে যা বুঝেছি, আগে যদি তা বুঝতাম! তাহলে রাসূলুল্লাহ সাঃ কে তার স্ত্রীগণ ব্যতীত অন্য কেউ মৃত্যু গোসল দিতে পারত না।
সুনানে ইবনে মা'জা-১৪৫৩ (আলবানী)১১৯৬
(খ)
কিন্তু স্ত্রীর মৃত্যুর পর জীবিত স্বামীর সাথে উক্ত স্ত্রীর সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
তাইতো স্ত্রীর মৃত্যুর পরপরই উক্ত মৃত স্ত্রীর বোনের সাথে স্বামীর বিবাহ বৈধ হয়ে যায়।
সুতরাং স্বামী তার মৃত স্ত্রীকে স্পর্শ করতে পারবে না,গোসল দিতে পারবে না।তবে প্রয়োজনে (খাহেশাতে নফসানী ব্যতীত)দেখতে পারবে।
কিতাবুল ফাতাওয়া৩/১৪০
হিন্দিয়া-১/১৬০
আদ্দুরুল মুখতার-৩/৯০
কেফায়াতুল মুফতি-৪/৩১
কিতাবুন-নাওয়যিল-৬/৫৪
ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৮/৪৮৫
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, IOM.