ওয়া আলাইকুমুস
সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/4794/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী কুনুতে নাজেলাহ
মহিলা,এবং মুনফারিদ (একাকি নামাজ আদায় কারীরা)ও পড়তে পারবে। তবে মহিলারা জোড়ে আওয়াজ পারবে না। (ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়্যাহ ৬/২৪)
মহিলারা ইমাম হয়ে
জামাতের সহিত কুনুতে নাজেলাহ পড়বে না। কারণ মহিলাদের ইমামতি মাকরুহে তাহরিমি।
তাই তারা একাকি নামাজেই
কুনুতে নাজেলাহ পড়তে পারবে।
মুসলমানদের উপর কোন
বিপদ আপদ আসলে, ইসলামের শত্রুদের জন্য হেদায়াতের
দুআ বা বদদুআ করার জন্য ফজরের নামাযের দ্বিতীয় রাকাতে রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে কুনুতে
নাজেলা পড়া মুস্তাহাব।সর্বদা ফজরের নামাযের সময় এমনটি করবে না। বাকি যদি কেউ করে, তাহলে সেটিকে বাতিল বলে বাঁধা দেবারও প্রয়োজন নেই।
তবে কথা হল, কুনুতে নাজেলা শুধু বিশেষ
মুহুর্ত তথা ব্যাপক বিপদ, যুদ্ধকালীন সময় ইত্যাদি
মুসিবতের সময় পড়াই মুস্তাহাব।
أَبُو مَالِكٍ، قَالَ: قُلْتُ لِأَبِي:
يَا أَبَتِ إِنَّكَ قَدْ ” صَلَّيْتَ
خَلْفَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ “، وَأَبِي بَكْرٍ،
وَعُمَرَ، وَعُثْمَانَ، وَعَلِيٍّ هَاهُنَا بِالْكُوفَةِ، قَرِيبًا مِنْ خَمْسِ سِنِينَ، أَكَانُوا يَقْنُتُونَ؟
قَالَ: أَيْ بُنَيَّ، مُحْدَثٌ
হযরত আবু মালিক থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে বললাম, হে আমার পিতা! নিশ্চয় আপনি রাসূল সাঃ, হযরত আবু বকর রাঃ, হযরত উমর রাঃ, হযরত উসমান রাঃ ও
হযরত আলী রাঃ এর পিছনে কুফায় প্রায় পঞ্চাশ বছর নামায পড়েছেন, তারা কি ফজরের নামাযে সর্বদা কুনুত [নাজেলাহ] পড়তেন? তিনি বললেন,
হে আমার বৎস! না এটি
নতুন করে শুরু হয়েছে। [আগে পড়া হতো না]। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৫৮৭৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১২৪১, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৪০২, তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-১৪৭৪, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং-১২৯২} হাদীসটি সহীহ।
কুনুতে নাজেলা পড়ার
পদ্ধতি:
ফজরের নামাযের ফরজের
দ্বিতীয় রাকাতে রুকু থেকে উঠে ইমাম আওয়াজ করে দু’আ পড়বেন, আর মুসল্লিগণ আস্তে আস্তে আমীন বলবেন। দুআ শেষে
নিয়ম মোতাবিক সেজদা, শেষ বৈঠক ইত্যাদির মাধ্যমে
নামায শেষ করবেন। (এলাউস সুনান – ৬/৮১)
★কুনুতে নাজেলা
اللَّهُمَّ اهْدِنَا فِيمَنْ هَدَيْتَ ،
وَعَافِنَا فِيمَنْ عَافَيْتَ ، وَتَوَلَّنَا فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ ، وَبَارِكْ
لَنَا فِيمَا أَعْطَيْتَ ، وَقِنَا شَرَّ مَا قَضَيْتَ ، إِنَّكَ تَقْضِى وَلاَ
يُقْضَى عَلَيْكَ ، إِنَّهُ لاَ يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ تَبَارَكْتَ رَبَّنَا
وَتَعَالَيْتَ (سنن البيهقى الكبرى، رقم الحديث-2960)
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَنَا ، وَلِلْمُؤْمِنِينَ
وَالْمُؤْمِنَاتِ وَالْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ ، وَأَلِّفْ بَيْنَ
قُلُوبِهِمْ ، وَأَصْلِحْ ذَاتَ بَيْنِهِمْ ، وَانْصُرْهُمْ عَلَى عَدُوِّكَ
وَعَدُوِّهِمْ ، اللَّهُمَّ الْعَنْ كَفَرَةَ أَهْلِ الْكِتَابِ الَّذِينَ
يَصُدُّونَ عَنْ سَبِيلِكَ ، وَيُكُذِّبُونَ رُسُلَكَ ، وَيُقَاتِلُونَ
أَوْلِيَاءَكَ اللَّهُمَّ خَالِفْ بَيْنَ كَلِمَتِهِمَ ، وَزَلْزِلْ أَقْدَامَهُمْ
، وَأَنْزِلْ بِهِمْ بَأْسَكَ الَّذِى لاَ تَرُدُّهُ عَنِ الْقَوْمِ
الْمُجْرِمِينَ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ اللَّهُمَّ إِنَّا
نَسْتَعِينُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُثْنِى عَلَيْكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ ، وَنَخْلَعُ
وَنَتْرُكُ مَنْ يَفْجُرُكَ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ اللَّهُمَّ
إِيَّاكَ نَعْبُدُ ، وَلَكَ نُصَلِّى وَنَسْجُدُ ، وَلَكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ ،
نَخْشَى عَذَابَكَ الْجَدَّ ، وَنَرْجُو رَحْمَتَكَ ، إِنَّ عَذَابَكَ
بِالْكَافِرِينَ مُلْحَقٌ. (سنن البيهقى الكبرى، رقم الحديث-2962
★ইমাম তহাবী রহঃ এবং অন্যান্য মুহাক্কিক উলামায়ে কেরামদের মতে কুনুতে নাজেলাহ ফজরের নামাজের সাথেই খাছ।
ফাতাওয়ায়ে শামীতে
এসেছেঃ
ان قنوت النازلۃ عندنا مختص بصلوٰۃ الفجر دون غیر
ھا من الصلوٰۃ الجھریۃ اوالسریۃ
(ج۱ ص۶۲۸باب متفرقات صلوٰۃ مطلب فی قنوت النازلۃ)
নিশ্চয়ই কুনুতে নাজেলাহ
আমাদের নিকটে ফজরের নামাজের সাথে খাছ,,অন্যান্য নামাজে নয়,, ,,।
তবে কিছু উলামায়ে কেরামগণ
বলেছেন যে এটা ফজরের নামাজের সাথে খাছ নয়। বরং ফজর, মাগরিব,ঈশা,জুমআর নামাজেও পড়া
যাবে।
এই জন্য অন্যান্য
নামাজেও পড়া যাবে, নিষেধ নেই। (ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়্যাহ ৬/২০)
আরো বিস্তারিত
জানুন- https://ifatwa.info/4794/
★
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই/বোন!
উপরের আলোচনার
দ্বারা বুঝে আসে যে, কুনুতে নাজেলাহ
নামাজের মধ্যে পড়ার বিশেষ একটা আমল। তাই আপনি আস্তে আস্তে তা শিখে নিবেন। তবে এটা
নামাজের বাইরে দুআ হিসেবে পড়তে পারবেন এবং এতে আপনার সওয়াবও হবে ইনশাআল্লাহ।