আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
74 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
edited by
আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

উস্তাদ গতকাল আমার এক ফ্রেন্ড পড়ার জন্য PDF চাইছেন। তাকে আমি বলছি আমার কাছে আইওএম এর PDF আছে শুধু। আর এগুলো বাইরে দিতে নিষেধাজ্ঞা আছে। তারপরেও বলছিলাম বই থেকে কিছু পিক দিবোনি ওখান থেকে পড়তে পারবেন। সুন্দর করে বুঝিয়ে বলছি।

উস্তাদ আমি তাকে এইটাও বলছি যে, এই বিষয়টা আমাদের মাদ্রাসার রুলসের মধ্যে। তাই এখানে আমার কিছু করার নেই।

সে ফ্রেন্ড আজকে বলতেছে আইওএমের অধঃপতন হোক, বিলুপ্ত হোক। ওনার ভাস্য মতে আইওএম ভুলের উপর আছে। ভিত্তি ঠিক নেই। ইলম ঘর বন্ধি করে রাখতেছি। রাসূলের সুন্নত ঠিক ঠাক ধরতে পারি নি। এরকম উল্টো পাল্টা কথা বলতেছে।

উস্তাদ আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমি কি ভুল কিছু বলেছি? আর ওনি যে অভিশাপ দিচ্ছেন তা কত টুকু কার্যকর হবে? আর এভাবেই কি অভিশাপ দেওয়া ঠিক হচ্ছে?

আমার সেই ফ্রেন্ড সম্পর্কে একটু বলি, সে জেনারেল পড়ুয়া কিন্তু পরিপূর্ণ ইসলাম মানার চেষ্টা করে। আইওএম ভর্তির পূর্বে সে আমাকে ইসলামের বিধিবিধান সম্পর্কে অনেক উপদেশ দিয়েছে। কিন্তু আইওএমে ভর্তির পরে তার সাথে কিছু বিষয়ে সংঘর্ষ লেগে যাচ্ছে। তার একটি উদাহরণ হলো মাযহাব। সে মাযহাব মানে না কিন্তু আমি মানি। এ রকম ছোট ছোট আরো অনেক মতের অমিল দেখা যাচ্ছে।

এই মূহুর্তে আমার করণীয় কি? তার সাথে যোগাযোগ রাখবো নাকি বিচ্ছিন্ন করবো উস্তাদ?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

আবিস্কার সত্ত্ব এমন একটি সত্ত্বকে বলা হয়, যা প্রচলিত নিয়মানুসারে কিংবা আইনগত দিক দিয়ে ওই ব্যক্তির অনুকূলে থাকে,যে ব্যক্তি নতুন কোনো জিনিষ আবিস্কার করেছে বা কোনো জিনিষের নতুন আকৃতি বা রূপ দান করেছে।আর আবিস্কার সত্ত্বের অর্থ হল,এককভাবে ওই ব্যক্তির জন্যই নিজের আবিস্কৃত জিনিষ বানানোর এবং বাজারজাত করার অধিকার থাকবে।আবার কোনো কোনো সময় আবিস্কারক তার আবিস্কার সত্ত্ব অন্য কারো কাছে বিক্রয় করে দিয়ে থাকে।আর সত্ত্ব ক্রয়কারী তখন আবিস্কারকের মত বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ওই জিনিষ প্রস্তুত করে থাকে।এমনিভাবে কোনো ব্যক্তি যদি কোনো কিতাব, বই লিখে কিংবা সংকলন করে, তাহলে ওই কিতাব-বই, প্রকাশ-প্রচার ব্যবসায়িক ভিত্তিতে বাজারজাত করার অধিকার লেখক বা সংখকলকের জন্য সংরক্ষিত থাকে।আবার কোনো কোনো সময় কিতাবের লেখক ওই সত্ত্ব অন্যের কাছে বিক্রয় করে দিয়ে থাকে।আর ওই সময় ক্রেতা এই কিতাবের প্রকাশ-প্রচার এবং ব্যবসা-বাণিজ্য করার সত্ত্বাধিকারী হয়ে যায়।যে অধিকার পূর্বে লেখকের ছিল,সেই অধিকার চলে আসে ক্রেতার নিয়ন্ত্রণে।

এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রশ্ন হল এই যে,
আবিস্কার সত্ত্ব, লেখার সত্ত্ব এবং প্রকাশনা সত্ত্বের ক্রয়-বিক্রয় শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েয হবে কি?
এই ব্যাপারে সমকালীন ফুকাহায়ে কিরামের মধ্যে দুইটি অভিমত পরিলক্ষিত হয়।কোনো কোনো ফুকাহায়ে কিরাম এ জাতীয় সত্ত্বের ক্রয়-বিক্রয় কে জায়েয বলেছেন।আবার কোনো কোনো ফুকাহায়ে কিরাম এ জাতীয় সত্ত্বের বেচাকেনাকে নাজায়েয বলেছেন।
এ ব্যাপারে মৌলিক প্রশ্ন হল এই যে,আবিস্কার লেখা ও প্রকাশনা সত্ত্বকে কি ইসলামী শরীয়ত সত্ত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে?

এই মৌলিক প্রশ্নের উত্তর হল এই যে,
যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম কোনো জিনিষ আবিস্কার করেছে,তার আবিস্কৃত জিনিষ অস্তিত্বমান বস্তু হোক বা অস্তিত্বহীন, নিঃসন্দেহে সেইব্যক্তি অন্যের তুলনায় তা থেকে উপকৃত হওয়ার, প্রস্তুত করার এবং মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বাজারজাত করার বেশী অধিকারী।কেননা, আবু দাউদ শরীফে হযরত আসমুর ইবনে মুদরাস (রা.) থেকে একটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, 'আমি নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে হাজির হয়ে তার হাতে বাইআত গ্রহণ করি।এ সময় নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,' যে ব্যক্তি ওই বস্তুর দিতে অগ্রসর হল, যে বস্তুর দিকে কোনো মুসলমান অগ্রসর হয় নাই,তাহলে ওই বস্তু ওই ব্যক্তির।(যে ওই দিকে প্রথম অগ্রসর হয়েছে।)আবু-দাউদ:৪/২৬৪ হাদীস নং২৯৪৭)

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1197

শরীয়তের বিধান মতে সংরক্ষিত প্রকাশনার কোনো বইয়ের পিডিএফ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ যদি বাহিরে দিতে নিষেধাজ্ঞা থাকে, সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যাতিত বাহিরে সেই পিডিএফ ছড়িয়ে দেয়া এটি উক্ত প্রকাশনীর সাথে ধোকা দেওয়া হবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি যে অভিশাপ দিচ্ছেন, কার্যকর হবেনা।
এভাবে অভিশাপ দেওয়া ঠিক হচ্ছেনা।

তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিবেননা,কথা বলা বন্ধ করবেননা।
একজন মুসলিম হিসেবে তার সাথে যোগাযোগ রেখে চলতে হবে।

তবে প্রয়োজনে কথা কম বলতে পারেন।
কথা কাটাকাটি লাগতে এহেন বিষয় এড়িয়ে চলতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...