জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,
إِذَا صَلَّتِ الْمَرْأَةُ خَمْسَهَا، وَصَامَتْ شَهْرَهَا، وَحَصَّنَتْ فَرْجَهَا، وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا، دَخَلَتْ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ.
‘‘রমণী তার পাঁচ ওয়াক্তের নামায পড়লে, রমযানের রোযা পালন করলে, ইজ্জতের হিফাযত করলে ও স্বামীর তাবেদারী করলে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছামত প্রবেশ করতে পারবে।
(মিশকাতুল মাসাবিহ ৩২৫৪।)
ব্যাখ্যা: মহিলার পাঁচ ওয়াক্ত সালাত তার রজঃকাল ছাড়া পবিত্র কালের সালাত। আর একমাস সওম হলো রমাযানের ফরয সওম! তাই তা রমাযান মাসেই আদায়ের মাধ্যমে পালন করা হোক অথবা অসুস্থাজনিত কারণে পরবর্তীতে কাযা আদায়ের মাধ্যমে পালন করা হোক।
(وَأَحْصَنَتْ فَرْجَهَا) এর অর্থ হলো যদি নারী তার যৌনাঙ্গকে হিফাযাত করে, অর্থাৎ নিজের ইজ্জত সম্ভ্রম ও সতীত্বকে রক্ষা করে। ব্যাখ্যাকারকগণ নিজের নফস্ বা প্রবৃত্তিকে সকল প্রকার অশ্লীলতা থেকে বিরত রাখার কথাও বলেছেন।
(وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا) ‘যদি সে স্বামীর ইত্বা‘আত বা আনুগত্য করে, স্বামীর আনুগত্য বলতে যা অবশ্য পালনীয় তা পালন করে। তাহলে সে জান্নাতের যে কোনো দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে। এর অর্থ হলো আটটি জান্নাতের যে কোনোটি সে প্রবেশ করতে পারবে। এখানে ইশারা রয়েছে জান্নাতের কোনো একটিতে যেতে তার বাধা নেই এবং সে দ্রুত তা অর্জন করতে পারবে এবং তাতে পৌঁছতে পারবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
সারাজীবন পরিপূর্ণ ভাবে নামাজ রোযা আদায় ও যাকাত হজ্জ (এ দুটি ফরজ হলে) পূর্ণ আদায় স্ত্রী হলে স্বামীর হক আদায়,স্বামী হলে স্ত্রীর হক আদায়,বান্দার হক আদায় ও শরীয়তের যাবতীয় বিধিনিষেধ মানার পাশাপাশি
https://ifatwa.info/54844 নং ফতোয়াতে উল্লেখিত চারটি গুন নিজের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।
তাহলেই মহান আল্লাহ তায়ালা বিনা হিসেবে জান্নাতে দিবেন,ইনশাআল্লাহ।
(০২)
হ্যাঁ ফিরিয়ে দেয়া যাবে।
তবে রুক্ষ ভাষা ব্যবহার করা যাবেনা।
উল্লেখ্য, উপার্জন অক্ষম কোনো ভিক্ষুককে (নিজের কাছে প্রয়োজন অতিরিক্ত টাকা থাকা অবস্থায় ও নিজে ধনী হলে) ফিরিয়ে দেয়া জায়েজ নেই।
বিস্তারিত জানুনঃ-
(০৩)
হ্যাঁ,ঢিলেঢালা হলে তাহা ব্যবহার করা জায়েজ আছে।
বিস্তারিত জানুনঃ-
(০৪)
হারাম নয়।
তবে পায়ের লোম কাটা অনুত্তম বলে বিবেচিত হবে।
বিস্তারিত জানুনঃ-
(০৫)
শরীয়তের বিধান হলো অভিজ্ঞ ডাক্তারের মতে যদি সেই ক্রীম,প্রসাধনী সামগ্রী শরীর ত্বকের জন্য ক্ষতিকর না হয়,এবং তাতে কোনো হারামের মিশ্রণ যদি না থাকে।
এবং তাতে কোনোপ্রকার নেশাজাত দ্রব্যাদি সংযুক্ত করা না হয় তাহলে ফর্সা হওয়ার জন্য তা ব্যবহার করা জায়েয হবে।
বিস্তারিত জানুনঃ-
(০৬)
পর্দার আড়ালে থেকে কথা বলা যাবে।
শর্ত হলো অপ্রয়োজনীয় কথা বলা যাবেনা,ফিতনার আশংকা থাকা যাবেনা।
(০৭)
পূর্ণ বিবাহের উদ্দেশ্য থাকলে ফেস দেখা যাবে।
তবে ছবি দেয়া জায়েজ হবেনা।
এ সংক্রান্ত জানুনঃ-
(০৮)
এতে আপনার কোনো দোষ নেই।
তাই এটি আপনার জান্নাতে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হবেনা।
তবে আপনি সময় সুযোগ মোতাবেক কয়েক মাস পর পর হলেও ফোন দেয়ার চেষ্টা করবেন।
দেখা হলে সালাম বিনিময় করবেন।
(০৯)
না,কিছু হবেনা।
(১০)
না,গুনাহ হবেনা।
(১১)
হ্যাঁ, তাদেরকে নফল দান সদকাহ করা যাবে।
(১২)
একাধিক বিবাহের উপর সক্ষম হলে,রাত্রি যাপন ও ভরনপোষণ এর ক্ষেত্রে সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারলে উল্লেখিত ব্যাক্তির জন্য ২য় বিবাহ জায়েজ আছে।
(১৩)
বিবাহ করা জায়েজ আছে।
তবে এক্ষেত্রে দ্বীনদারিত্ব এর দিক হতে স্বামী স্ত্রীর মাঝে মিল না হওয়ায় সাংসারিক জীবনে ঝামেলা হওয়ার প্রবল আশংকা রয়েছে।
(১৪)
জান্নাতে মহিলাকে তাদের স্বামীর হুরদের সর্দার বানানো হবে,মহিলারা জান্নাতে একজন স্বামী নিয়ে এতটাই সন্তুষ্ট থাকবে যে,তারা অন্য কাউকে চাইবেই না।
আল্লাহ তায়ালা তাদের এমনই সন্তুষ্ট বানাবেন।
বিস্তারিত জানুনঃ-
https://ifatwa.info/83972
(১৫)
এভাবে দোয়া করা যাবেনা।
বিস্তারিত জানুনঃ-
https://ifatwa.info/44421/
(১৬)
হারাম উপার্জন কৃত সম্পদ খাওয়া অবস্থায় যে সমস্ত নামাজ রোযা,হজ্জ,যাকাত,সদকাহ আদায় করেছে,কোনোটিই কবুল হবেনা।
সুতরাং আল্লাহ তায়ালা তাকে মাফ না করলে তার কঠিন শাস্তি হবে।
(১৭)
নারীদের মাহরাম পুরুষ।
১-বাপ, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।
২-সহোদর ভাই, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।
৩-শ্বশুর, আপন দাদা শ্বশুর ও নানা শ্বশুর এবং তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।
৪-আপন ছেলে, ছেলের ছেলে, মেয়ের ছেলে এবং তাদের ঔরষজাত পুত্র সন্তান এবং কন্যা সন্তানদের স্বামী।
৫-স্বামীর অন্য স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র।
৬-ভাতিজা, ভাগিনা তথা সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই ও বোনের ছেলে ও তাদের অধঃস্থন কোন ছেলে।
৭-আপন চাচা অর্থাৎ বাপের সহোদর, বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয় ভাই।
৮-আপন মামা তথা মায়ের সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।
৯-দুধ সম্পর্কীয় ছেলে, উক্ত ছেলের ছেলে, দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের ছেলে ও তাদের ঔরষজাত যে কোন পুত্র সন্তান এবং দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের স্বামী।
১০-দুধ সম্পর্কীয় বাপ, চাচা, মামা, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।
১১-দুধ সম্পর্কীয় ভাই, দুধ ভাইয়ের ছেলে, দুধ বোনের ছেলে এবং তাদের ঔরষজাত যে কোন পুত্র সন্তান।
১২-শরীয়ত অনুমোদিত বৈধ স্বামী।
১৩-যৌন শক্তিহীন এমন বৃদ্ধ, যার মাঝে মহিলাদের প্রতি কোন আকর্ষণ নেই আবার মহিলাদেরও তার প্রতি কোন আকর্ষণ নেই।
১৪-অপ্রাপ্ত বয়স্ক এমন বালক যার মাঝে এখনো যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয়নি।
(১৮)
না,গুনাহ হবেনা।
তবে নিয়ত পূর্ণ ভাবে শুদ্ধ করতে পারলে ছওয়াব বেশি পাবেন।
(১৯)
হ্যাঁ, এতে গুনাহ হবে।
(২০)
ভিন্ন লিঙ্গের কাহারো সাথে এ ধরনের আলোচনা করার ক্ষেত্রে ফিতনার আশংকা থাকে,তাই এটি শরীয়ত অনুমোদিত নয়।
(২১-৪১)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
অতীব জরুরী ও সাধারণ মাস'আলা মাসাঈল আয়ত্বে না থাকার কারণে দৈনন্দিন জীবনে দ্বীন-ইসলাম পালন করতে, যে সমস্ত দ্বীনি ভাই-বোন থমকে দাড়ান,এবং যাদের দ্বীনি ইলম অর্জনের কাছাকাছি কোনো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নেই, মূলত তাদেরকে দিকনির্দেশনা দিতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস .....
মুহতারাম/মুহতারামাহ!
দ্বীনের পরিধি অনেক ব্যাপক, সকল বিষয়ে আলোচনা করা বা দিকনির্দেশনা দেওয়া স্বল্প পরিসরের এই ভার্চুয়ালি মাধ্যম দ্বারা আমাদের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। চেষ্টা করলেও প্রশ্নকারীর পিপাসা মিটানো সম্ভব হবে না। প্রত্যেক বিষয়ে আমরা শুধুমাত্র সামান্য আলোকপাত করে থাকি।
উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তরের জন্য আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট উলামায় কেরামের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা আপনার জন্য কল্যাণকর হবে বলেই আমাদের ধারণা।
তাছাড়া ইলম অর্জনের জন্য সফর করা অত্যান্ত জরুরী। এবং কষ্ট করে ইলম অর্জন করাই আমাদের আকাবির আসলাফদের রীতি ও নীতি। এদিকেই কুরআনের এই আয়াত ইঙ্গিত দিচ্ছে,
ۚفَلَوْلَا نَفَرَ مِن كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَائِفَةٌ لِّيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ
তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হলো না, যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান করে স্ব-জাতিকে, যখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা বাঁচতে পারে।(সূরা তাওবাহ-১২২)
সুতরাং আপনাকে বলবো, আপনি বিস্তারিত জানতে স্ব-শরীরে কোনো দারুল ইফতায় যোগাযোগ করবেন।
প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।আল্লাহ তা'আলা আপনার ইলম অর্জনের স্পৃহাকে আরোও বাড়িয়ে দিক, আমীন!!
প্রত্যেকটা বিষয়ের সাথে নিম্নের হাদীসকে লক্ষ্য রাখবেন।
হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।
ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি।তিনি বলেন,সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো।(সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)