আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,283 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ শায়েখ। আমি ২০১৮ সালে বিয়ে করি কিন্তু তখন আমি ঠিকমত দ্বীন চর্চা করতাম না।আমার বিয়ের সময় প্রচলিত নিয়মে ৮লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়।মোহরানা আদায়ের ব্যাপারে আমার সঠিক ইলম না থাকার কারণে তাতে আমি রাজি হয়ে যায়। পরে আমি কোন প্রকার মোহরানা আদায় না করেই আমার স্ত্রীর সাথে সংসার শুরু করি।পরে আলহামদুলিল্লাহ ২০২০সালে এপ্রিল মাসে আমার ঠনক নড়ে এবং সমস্ত গোনাহ থেকে বিরত থাকার এবং পরিপূর্ণ দ্বীন চর্চার চেষ্টা করি। ঐ মূহুর্তে মোহরানা আদায়ের বিষয়টি আমার মাথায় আসে। এবং মোহরানা আদায়ের ব্যাপারে শরয়ী বিধান জানার চেষ্টা করি। জানার পর বুঝলাম যে , মোহরানা আদায় ব্যতীত তার সাথে সংসার শুরু করা ঠিক হয়নি।

এমতাবস্থায় আমি মোহরানা আদায়ের চিন্তাভাবনা করি। যেহেতু এত টাকা আমার পক্ষে একবারে দেওয়া সম্ভব না।তাই এক/দুই মাস পরপর ৫০০/১০০/২০০০  যত পারি দিয়ে যাচ্ছি এবং দেওয়ার চেষ্টা করছি যতটুক পারি।

প্রশ্নঃ১/ এভাবে আদায় করলে কি মোহরানা আদায় হবে??

প্রশ্নঃ২/  আবার কয়েকদিন আগে মাথায় আসলো প্রচলিত নিয়মে বা কাগজ কলমে যা আছে থাক। আমি আমার স্ত্রীর সাথে কথা বলে ২০/৫০/৮০ হাজার পরিমাণ টাকা নির্ধারণ করে একবারে তাকে মোহরানা হিসেবে দিয়ে দি তাহলে কি মোহরানা আদায় হবে??

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে মোহরানা  আদায় করলে মোহরানা আদায় হবে।
তবে তার প্রয়োজনীয় খরচ দেওয়ার টাকাকে মোহরানার মধ্যে গন্য করা যাবেনা।
আর মোহরানা দেওয়ার সময় বলতে হবে যে এটি মোহরানার টাকা।
,
এখানে একটি মাসয়ালা স্পষ্ট করছিঃ
দেনমোহর বিয়ের আকদের পর প্রদান করাতে কোন সমস্যা নেই। তবে সহবাসের পূর্বে প্রদান করাই উত্তম। তবে যদি স্ত্রী দেনমোহর প্রদান করা ছাড়াই সহবাসের অনুমতি প্রদান করে তাহলে কোন সমস্যা নেই। বাকি স্ত্রী দেনমোহর প্রদান করা ছাড়া প্রথম সহবাসের পূর্বে বাঁধা প্রদান করতে পারবে। কিন্তু একবার সহবাস হয়ে গেলে আর বাঁধা দিতে পারবে না। কিন্তু স্বামীর জিম্মায় দেনমোহর আদায় না করলে তা ঋণ হিসেবে বাকি থেকে যাবে।

স্ত্রী যদি উক্ত দেনমোহর মাফ না করে, আর স্বামীও তা পরিশোধ না করে, তাহলে কিয়ামতের ময়দানে স্বামীর অপরাধী সাব্যস্ত হবে। তাই দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করে দেয়া জরুরী।

وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ الْمُؤْمِنَاتِ وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلِكُمْ إِذَا آتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ [٥:٥] 

তোমাদের জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে, যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর। [সূরা মায়িদা-৫] 

وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ أَن تَنكِحُوهُنَّ إِذَا آتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ  [٦٠:١٠] 

তোমরা, এই নারীদেরকে প্রাপ্য মোহরানা দিয়ে বিবাহ করলে তোমাদের অপরাধ হবে না। [সূরা মুমতাহিনা-১০]
,
(০২)
আপনি আপনার স্ত্রীর সাথে কথা বলে ২০/৫০/৮০ হাজার পরিমাণ টাকা নির্ধারণ করে নিলে এর অর্থ দাড়ায় যে আপনার স্ত্রী মোহরানা কমিয়ে দেয়।
,
এটা যদি আপনার স্ত্রী তার সন্তুষ্টি চিত্তে কমিয়ে দেয়,তাহলে তা জায়েজ হবে।
তার থেকে জোড় করে কমিয়া নেওয়া যাবেনা।
,    
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ  
واحل لكما ما وراء ذلكم ان تبتغوا باموالكم محصنين غير مسافحين فما استمتعتم به منهن فاتوهن اجورهن فريضة ولا جناح عليكم فيما تراضيتم به من بعد الفريضة ان الله كان عليما حكيما

উল্লিখিত নারীরা ছাড়া অন্যদেরকে তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে, যে স্বীয় সম্পদ দ্বারা প্রয়াসী হবে তাদের সাথে বিবাহবন্ধনে, ব্যভিচারে নয়। অতএব তাদের নিকট থেকে তোমরা যে আনন্দ উপভোগ করেছ (সে কারণে) তাদের ধার্যকৃত মোহর তাদেরকে প্রদান করবে। আর মোহর নির্ধারিত থাকার পরও কোনো বিষয়ে পরস্পর সম্মত হলে তাতে তোমাদের কোনো অপরাধ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।-সূরা নিসা : ২৪

واتوا النساء صدقاتهن نحلة فان طبن لكم عن شيئ منه نفسا فكلوا هنيئا مرئيا

এবং তোমরা নারীদেরকে দাও তাদের মোহর খুশিমনে। এরপর তারা যদি স্বেচ্ছায় স্বাগ্রহে ছেড়ে  দেয় কিছু অংশ তোমাদের জন্য তাহলে তা স্বচ্ছন্দে ভোগ কর।-সূরা নিসা : ৪

,
★সুতরাং এটি স্পষ্ট যে মহিলা যদি সন্তুষ্টি চিত্তে মাফ করে দেয়,বা কমিয়ে দেয়,তবে সেটা জায়েয হবে।
,
বিস্তারিত জানুনঃ  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...