আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
49 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম আমার কয়েকটি প্রশ্ন ছিল এগুলোর উত্তর দিলে উপকৃত হবো।

১.ফরজ গোসল করতেছিলাম । ফরজ গোসল শেষে কাপড় পরার সময় দেখলাম যে, আমার যৌনাঙ্গ দিয়ে প্রস্রাব এর ফোটা বের হচ্ছে। তবে গোসলের সময় প্রস্রাব বের হতে আমি দেখিনি। গোসলের পর দেখেছি। এখন আমি নিশ্চিত না যে ,প্রস্রাবের ফোটা গোসলের সময় বের হয়েছে নাকি গোসলের পর বের হয়েছে। তবে ‌সম্ভবত  গোসল শেষে  প্রস্রাবের ফোটা বের হচ্ছে আমি এমনটা অনুভব করেছিলাম।এখন কি আমার এই ফরজ গোসল আদায় হয়েছে নাকি আবার ফরজ গোসল করতে হবে?

২.আমার পায়ে ব্লাস্টার করানো বলে আমি বসে নামাজ পড়ি।প্রথম প্রথম আমি আমার ব্লাস্টার করা পা বালিশের উপর রেখে

সুস্থ পা বৈঠকে যেভাবে বসে সেভাবে রাখতাম।আর সিজদাহর সময় ব্লাস্টার করা পায়ের একপাশে ডান হাত ও আরেকপাশে বাম হাত রেখে ইশারায় সিজদাহ করতাম।কারণ আমার নাক তখন বালিশে লাগানো সম্ভব হতো না। এখন কি আমার নামাজগুলো আদায় হয়েছে?

৩.পরবর্তীতে আমি আমার ব্লাস্টার করা পা একসাইডে আলাদা এক বালিশে রেখে আমার সম্মুখে কয়েকটি বালিশের স্তূপ বানিয়ে বসে নামাজ পড়ি।আর আমি নামাজে  সুস্থ পা বৈঠকের মত করে রাখিনা বরং স্থাভাবিক ভাবে যেভাবে বসি সেভাবে রাখি।আর আমি এবার ঠিকমত বালিশের স্তূপে সিজদাহ করতে পারি।এখন ২ নং এ প্রশ্নে বর্ণিত নামাজ ও এই ৩ নং প্রশ্নে বর্ণিত নামাজ কি আদায় হয়েছে?

৪.জীবিত ব্যাক্তির নামে ঈসালে সওয়াব করা যাবে?

৫.আমি কাউকে আমল ঈসালে সওয়াব করার নিয়ত নিয়ে একটা আমল করলাম তাহলেই কি ঈসালে সওয়াব হয়ে যাবে? যেমন: অমুক  ব্যক্তির নামে ঈসালে সওয়াব এর জন্য আমি ঈসালে সওয়াব এর নিয়ত করে আমল করলাম তাহলেই কি ঈসালে সওয়াব হয়ে যাবে?আর এইটা জীবিত ব্যাক্তির ক্ষেত্রেও কি প্রযোজ্য?

৬.কারো হক নষ্ট করলাম।যেমন গীবত করা ও শোনার মাধ্যমে, গালিগালাজ করা, খারাপ আচরণ করার ইত্যাদি মাধ্যমে।এখন তার কাছে ক্ষমা চাইতে সংকোচ হলে আমি যদি তার নামে আমল ঈসালে সওয়াব করা তাহলে কি হক আদায় হবে?আর এক্ষেত্রে বাবা মায়ের সাথেও খারাপ আচরণ করে ক্ষমা চাইতে সংকোচ এর জন্য যদি তাদের নামে ঈসালে সওয়াব করি তাহলে কি হক আদায় হবে?

1 Answer

0 votes
by (677,280 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
https://ifatwa.info/65469/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
হাদীস শরীফে রাসুল সাঃ এর গোসলের পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে।     

حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ مَيْمُونَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم اغْتَسَلَ مِنَ الْجَنَابَةِ، فَغَسَلَ فَرْجَهُ بِيَدِهِ، ثُمَّ دَلَكَ بِهَا الْحَائِطَ ثُمَّ غَسَلَهَا، ثُمَّ تَوَضَّأَ وُضُوءَهُ لِلصَّلاَةِ، فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ غُسْلِهِ غَسَلَ رِجْلَيْهِ.

মাইমূনাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপবিত্রতার গোসল করলেন। তিনি নিজের লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেললেন। তারপর হাত দেয়ালে ঘষলেন এবং তা ধুলেন। তারপর সালাতের উযূর ন্যায় উযূ করলেন। গোসল শেষ করে তিনি তাঁর দু’পা ধুয়ে নিলেন। (বুখারী ২৬০২৪৯ ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৫৮)
,
حَدَّثَنَا مُوسَى، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَتْ مَيْمُونَةُ وَضَعْتُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَاءً لِلْغُسْلِ، فَغَسَلَ يَدَيْهِ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا، ثُمَّ أَفْرَغَ عَلَى شِمَالِهِ فَغَسَلَ مَذَاكِيرَهُ، ثُمَّ مَسَحَ يَدَهُ بِالأَرْضِ، ثُمَّ مَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ وَغَسَلَ وَجْهَهُ وَيَدَيْهِ، ثُمَّ أَفَاضَ عَلَى جَسَدِهِ، ثُمَّ تَحَوَّلَ مِنْ مَكَانِهِ فَغَسَلَ قَدَمَيْهِ

ইবনু ‘আববাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মাইমূনাহ্ (রাযি.) বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর জন্য গোসলের পানি রাখলাম। তিনি তাঁর হাত দু’বার বা তিনবার ধুয়ে নিলেন। পরে তাঁর বাম হাতে পানি নিয়ে তাঁর লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেললেন। তারপর মাটিতে হাত ঘষলেন। তারপর কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন, তাঁর চেহারা ও দু’হাত ধুয়ে নিলেন। অতঃপর তাঁর সারা দেহে পানি ঢাললেন। তারপর একটু সরে গিয়ে দু’পা ধুয়ে নিলেন। (বুখারী ২৫৭,২৪৯ ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৫৫)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই /বোন
গোসলের দ্বারা শরীর পাক হওয়ার ক্ষেত্রে উক্ত বায়ু বের হওয়া ও না বের হওয়ার কোন সম্পর্কই নেই। এর দ্বারা গোসলের মাঝে কোন প্রভাব সৃষ্টি করবে না। গোসলের ফরজ আদায় করে গোসল আদায় করলে গোসল আদায় হবে যাবে। বায়ু বের হওয়ার দ্বারা মানুষ হুকুমের দিক থেকে নাপাক হয়, শারিরিক দিক থেকে নাপাক হয় না।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার ফরজ গোসল আদায় হয়ে গিয়েছে।
এক্ষেত্রে লজ্জাস্থান ধুয়ে পুনরায় অযু করে নিবেন।
,
আরো জানুনঃ

(০২)
এক্ষেত্রে আপনার মাথা ও বুক কেবলার দিকে হয়ে থাকলে আপনার নামাজ গুলি আদায় হয়েছে।

(০৩)
আপনার নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
তবে এক্ষেত্রে আপনি বালিশের উপর সেজদাহ আর করবেননা।
আপনি আগের মতো মাথার ইশারায় সেজদাহ করবেন।

রুকুর ইশারার তুলনায় সেজদায় ইশারার সময় মাথা একটু (সামান্য হলেও) বেশি ঝুকাবেন।
,
ইশারায় সিজদার সময় সামনে কোন টেবিল, বালিশ বা অন্য কিছু রেখে তাতে সিজদা করবেন না। বরং শুধু মাথা দ্বারা ইশারা করে সেজদাহ করবেন।
,
হাদিস শরিফে এসেছে,

عن جابر بن عبد الله رضي الله عنه أنَّ النبيَّ ﷺ عاد مريضًا فرآهُ يصلي على وسادةٍ فأخذها فرمى بها فأخذ عودًا ليُصلي عليهِ فأخذَه فرمى بهِ وقال صَلِّ على الأرضِ إنِ استطعتَ وإلا فأَوْمِئْ إيماءً واجعل سجودكَ أخفضَ من ركوعِكَ

জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ একজন রোগী দেখতে গেলেন। তিনি তাকে একটি বালিশের উপর সিজদা করতে দেখলেন। তিনি তা (বালিশ) নিয়ে সরিয়ে রাখলেন। অতঃপর লোকটি একটি কাঠের টুকরা নিল তার উপর সিজদার জন্য। রাসূলুল্লাহ ﷺ তা নিয়ে ফেলে দিলেন এবং বললেন, তুমি সক্ষম হলে জমিনের উপর সিজদা করবে অন্যথায় ইশারা করবে। আর তোমার সিজদা রুকু থেকে বেশি ঝুঁকিয়ে করবে। (সুনানে বাইহাক্বী ৩৪৮৪)

(০৪)
হ্যাঁ, করা যাবে।

(০৫)
হ্যাঁ, তাহলেই ঈসালে সওয়াব হয়ে যাবে।
আর এইটা জীবিত ব্যাক্তির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

(০৬)
যতক্ষন সুযোগ আছে,যতক্ষন দেখা সাক্ষাৎ হয়,যোগাযোগ হয়,যোগাযোগের কোনো সুযোগ থাকে,এক্ষেত্রে তার কাছেই মাফ চাইতে হবে।
,
প্রয়োজনে যে হক নষ্ট করেছেন,সেটি না বলে এমনিতেই বলবে যে আমার দ্বারা ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে আমাকে ক্ষমা করে দিন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 146 views
0 votes
1 answer 70 views
...