আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
137 views
in সালাত(Prayer) by (50 points)

আসসালামু আলাইকুম 
 

১) যেসকল নামায উচ্চ স্বরে পড়ার বিধান সেগুলোর কাযাও কি উচ্চ স্বরে আদায় করব? আর যদি উচ্চ স্বরে আদায় না করি তাহলে নামায  কি আদায় হবে? 

 

২) যেসকল নামায নিম্ন স্বরে পড়ার বিধান সেগুলোর কাযাও কি নিম্নস্বরে আদায় করব? আর যদি নিম্ন স্বরে আদায় না করি তাহলে নামায  কি আদায় হবে?

 

৩) কাযা ব্যাতীত ফজর, মাগরিব আর এশার সালাত উচ্চস্বরে আদায় না করে যদি নিম্নস্বরে আদায় করি তাহলে কি সাহু সিজদাহ্ দিতে হবে নাকি সাহু সিজদাহ্ না দিলেও সালাত আদায় হয়ে যাবে? 

 

৪) কাযা ব্যাতীত যোহর আর আসরের  সালাত নিম্নস্বরে আদায় না করে যদি উচ্চস্বরে আদায় করি তাহলে কি সাহু সিজদাহ্ দিতে হবে নাকি সাহু সিজদাহ্ না দিলেও সালাত আদায় হয়ে যাবে? 

 

৫) সালাতের শেষ বৈঠকে দরুদ শরীফ এবং দুয়া মাসুরা না পড়েও কি সালাম ফিরানো যাবে? 

 

৬) বিতিরের ও কি কাযা উঠাতে হয়? কুরআন হাদীসের আলোকে বললে উপকৃত হতাম। 


 

৭) পানি বা খাবার কি বসে বসে না খেলে গুনাহ হবে? কুরআন হাদীসের আলোকে বললে উপকৃত হতাম। 

 

৮) কাযা নামাযের পূর্বে কি  মুখে নিয়ত করতে হয় যদি সেটা কয়েকদিন আগের হয়?


 

জাজাকাল্লাহ খাইরান 

1 Answer

0 votes
by (566,280 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
উচ্চস্বর কিরাআত বিশিষ্ট নামাজের কাজা যদি উচ্চস্বর কিরাআত বিশিষ্ট নামাজের ওয়াক্ত (মাগরিব,ঈশা,ফজর) গুলোতে আদায় করে,তাহলে উচ্চস্বর কিরাআত পাঠ করা বা নিম্নস্বরে কিরাআত পাঠ করা উভয়টিরই ইখতিয়ার (ইচ্ছা) রয়েছে। 

তবে যদি নিম্নস্বর কিরাআত বিশিষ্ট নামাজের ওয়াক্ত গুলোতে তার কাজা আদায় করে,তাহলে সেক্ষেত্রে নিম্নস্বরেই কিরাআত পাঠ করবে।

ویخافت المنفرد حتما ای وجوبا ان قضی الجھر یۃ فی وقت المخافتۃ کان صلی العشاء بعد طلوع الشمس۔ (ردالمحتار، فصل فی القراءۃ 1/533)
সারমর্মঃ-
একাকী নামাজ আদায়কারী ব্যাক্তি যদি উচ্চস্বর কিরাআত বিশিষ্ট নামাজের কাজা নিম্নস্বর কিরাআত বিশিষ্ট নামাজের ওয়াক্ত গুলোতে আদায় করে,তাহলে নিম্নস্বরেই কিরাআত পাঠ করা তার উপর ওয়াজিব।

(০২)
যেসকল নামায নিম্ন স্বরে পড়ার বিধান সেগুলোর কাযাও নিম্নস্বরে আদায় করবেন। যদি নিম্ন স্বরে আদায় না করেন, তাহলে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে। 

(০৩)
জামাআতের সাথে নামাজ না হলে এক্ষেত্রে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবেনা।

সেজদায়ে সাহু না দিলেও নামাজ হয়ে যাবে।

কেননা সে যেহেতু একাকী নামাজ আদা করছে,তাই এক্ষেত্রে উচ্চস্বর কিরাআত পাঠ করা বা নিম্নস্বরে কিরাআত পাঠ করা উভয়টিরই ইখতিয়ার (ইচ্ছা) তার রয়েছে। 

(০৪)
এক্ষেত্রে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে। 

(০৫)
সালাতের শেষ বৈঠকে দরুদ শরীফ এবং দুয়া মাসুরা পাঠ করা সুন্নাত। 

তাই দরুদ শরীফ এবং দুয়া মাসুরা পাঠ না করেও সালাম ফিরানো যাবে।
তবে ইচ্ছাকৃতভাবে বিনা ওযরে এমনটি করলে সুন্নাতের খেলাফ হবে।

এক্ষেত্রেও নামাজ হয়ে যাবে।

(০৬)
হ্যাঁ, বিতিরের ও কাযা আদায় করতে হয়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « إِذَا رَقَدَ أَحَدُكُمْ عَنِ الصَّلاَةِ أَوْ غَفَلَ عَنْهَا فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ يَقُولُ أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِى

অনুবাদ-যখন তোমাদের কেউ নামায ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়ে, বা নামায থেকে গাফেল হয়ে যায়, তাহলে তার যখন বোধোদয় হবে তখন সে যেন তা আদায় করে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-আমাকে স্মরণ হলে নামায আদায় কর।
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬০১
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১২৯৩২
সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪১৮২)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,

وفي الفتاوى رجل يقضي الفوائت فإنه يقضي الوتر وإن لم يستيقن أنه هل بقي عليه وتر أو لم يبق فإنه يصلي ثلاث ركعات ويقنت ثم يقعد قدر التشهد ثم يصلي ركعة أخرى فإن كان وترا فقد أداه وإن لم يكن فقد صلى التطوع أربعا ولا يضره القنوت في التطوع

ফাতাওয়ার কিতাব সমূহে বর্ণিত রয়েছে,একজন ব্যক্তি সে তার জীবনের ছুটে যাওয়া নামায সমূহের কা'যা করতেছে।তাহলে সে বিতিরেরও কা'যা করবে।যদি নিশ্চিত না থাকে যে,তার উপর কোনো বিতির কা'যা রয়েছে কি না?তাহলে সে তিন রা'কাত কা'যা পড়বে,এবং কুনুত করবে।অতঃপর তাশাহুদ পরিমাণ সময় বৈঠক করবে।অতঃপর আরো এক রাকাত পড়বে।যদি সেটা বিতির হয়ে থাকে, তাহলে সেটা আদায় হয়ে যাবে।আর যদি বিতির না হয়ে থাকে,তাহলে তো সে চার রাকাত পড়েই নিয়েছে যা নফল হিসেবে গণ্য হবে।নফল নামাযে কুনুত করাতে কোনো সমস্যা নেই।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১২৫)

বিতির নামাজের কাযা সংক্রান্ত আরো জানুন 

(০৭)
ওযর ছাড়া দাঁড়িয়ে পানি পান করা মাকরূহে তানযিহি।
,
তবে ওযর বশত দাঁড়িয়ে পানি পান করলে কোনো সমস্যা নেই।

স্বাভাবিক অবস্থায় বসেই খাবার খেতে হবে। অবশ্য বিশেষ পরিস্থিতিতে যেখানে বসে খাবার খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই, কিংবা বসে খেতে সমস্যা, সেক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে খাবার খাওয়া যাবে। কেননা প্রয়োজনবশত দাঁড়িয়ে পানাহারের কথাও হাদীসে আছে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৮)
মনে মনে নিয়তই যথেষ্ট। 

এক্ষেত্রে নিয়ত সম্পর্কে জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 364 views
...