আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
168 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
আসসালামু 'আলাইকুম
একজন দ্বীনদার ছেলের বাবা ব্যাংকার। ছেলে টিচার, হালাল ইনকাম । একজন দ্বীনদার মেয়ের পক্ষে এরকম ছেলের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়াতে শরীয়তে কোন  নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা। কারণ একমাত্র ছেলের বউ হিসেবে তো এই দ্বীনদার মেয়েকে ব্যাংকার শ্বশুর বাড়িতে থাকতে হবে। আর ভবিষ্যতেও তো এই ছেলে ব্যাংকার বাবার সম্পত্তির মালিক হবে। যেহেতু  ব্যাংকের ইনকাম হালাল নয় এই ক্ষেত্রে মেয়ের পরিবার এই দ্বীনদার  ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ের ব্যাপারে শরীয়ত সম্মত কি সিদ্ধান্ত নিতে পারে?
মেহেরবানী  করে উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন।

1 Answer

0 votes
by (59,190 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

১.

https://ifatwa.info/80061/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

সুদ হারাম।আল্লাহ তা'আলা বলেন,

اَلَّذِیْنَ یَاْكُلُوْنَ الرِّبٰوا لَا یَقُوْمُوْنَ اِلَّا كَمَا یَقُوْمُ الَّذِیْ یَتَخَبَّطُهُ الشَّیْطٰنُ مِنَ الْمَسِّ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَالُوْۤا اِنَّمَا الْبَیْعُ مِثْلُ الرِّبٰوا ۘ وَ اَحَلَّ اللهُ الْبَیْعَ وَ حَرَّمَ الرِّبٰوا  فَمَنْ جَآءَهٗ مَوْعِظَةٌ مِّنْ رَّبِّهٖ فَانْتَهٰی فَلَهٗ مَا سَلَفَ  وَ اَمْرُهٗۤ اِلَی اللهِ  وَ مَنْ عَادَ فَاُولٰٓىِٕكَ اَصْحٰبُ النَّارِ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ.

যারা সুদ খায় তারা (কিয়ামতের দিন) সেই ব্যক্তির মতো দাঁড়াবে, যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে। এটা এজন্য যে, তারা বলে, ক্রয়-বিক্রয় তো সুদের মতোই। অথচ আল্লাহ ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম। যার নিকট তার প্রতিপালকের উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, তবে অতীতে যা হয়েছে তা তারই। আর তার ব্যাপার আল্লাহর এখতিয়ারে। আর যারা পুনরায় করবে তারাই জাহান্নামের অধিবাসী হবে। সেখানে তারা হবে চিরস্থায়ী। -সূরা বাকারা (২) :

ব্যাংকে চাকুরী করা সর্বক্ষেত্রে হারাম নয়।বরং কিছু কিছু কিছু ক্ষেত্রে বৈধ রয়েছে।যদি ব্যাংকের এমন কোনো সেক্টরের কাজ হয়,যাতে  সুদী কাজে জড়িত হতে হয় না।যেমনঃ ড্রাইভার, ঝাড়ুদার, দারোয়ান, জায়েজ কারবারে বিনিয়োগ ইত্যাদি সেক্টর হয়,তাহলে যেহেতু এসবে সরাসরি সুদের সহায়তা নেই তাই এমন সেক্টরে কাজ করার সুযোগ অবশ্যই রয়েছে।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/398

পাত্রর বাবা যদি ব্যাংকের সূদী সেক্টরে চাকুরী করে,এবং ব্যাংকের টাকায় বাড়ী গাড়ী করা হয়,তাহলে এসব হারাম হিসেবে বিবেচিত হবে।পাত্রর বাবার জন্য ওয়াজিব ঐ সমস্ত মাল সদকাহ করে দেয়া।বাবার মৃত্যুর পর পাত্র উক্ত মালের মালিক হবে না।কেননা হারামের মালের মালিক কেউ হয় না।বরং এগুলো সদকাহ করতে হয়।

من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে সে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেবে।যদি ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব না হয়,তাহলে গরীবদেরকে সদকাহ করে দেবে।(মা'রিফুস-সুনান১/৩৪)

ছেলের যদি আলাদা ইনকাম সোর্স থাকে এবং সে আলাদা বাড়ীতে রাখার ওয়াদা করে, বাবার হারাম কোনো টাকা সংসারে খরচ করবে না বলে ওয়াদাবদ্ধ হয়, তাহলে এমন পাত্রের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে বাধা নয়। নতুবা এমন পাত্রের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ না হওয়াই উচিত। হ্যা, কারো হয়ে গেলে, তার জন্য ঐ পাত্রের বাড়ীতে থাকা খাওয়া নাজায়েয হবে না। তবে হারাম সম্পদ থাকার কারণে পাত্র গোনাহগার হবে।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/4247

দারুল উলুম দেওবন্দের ফাতওয়া:

ব্যাংকে কর্মরতদেরকে বিয়ে না করাই ভাল’ বলে ফতোয়া দিল ভারতের ঐতিহ্যবাহী ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ। সম্প্রতি এক ফতোয়ায় বলা হয়েছে, ব্যাংকের আয়ের উৎস হল সুদ। আর ইসলামে সুদ গ্রহণ ও প্রদান করা হারাম। ফলে ব্যাংকে কর্মরতদের উপার্জন হালাল নয়। এ কারণে এ পেশার কাউকে বিয়ে না করে অন্য ধার্মিক পরিবার খোঁজা উচিত। এমনকি ব্যাংকে চাকরি করেন এমন পরিবারের কারো সাথে বিয়ের পীড়িতে বসার ব্যাপারেও নিরুৎসাহিত করেছে দেওবন্দ।

সম্প্রতি ভারতের এক ব্যক্তি তার মেয়েকে এক ব্যাংক কর্মকর্তার ছেলের সাথে বিয়ে দেয়ার আগে দেওবন্দ কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে ইসলামের বিধান জানতে চান। এর উত্তরে উল্লেখিত ফতোয়া দেয় প্রতিষ্ঠানটি। দেওবন্দ জানিয়েছে, ‘যারা হারামের অর্থে প্রতিপালিত হন, তারা নৈতিকভাবে ভাল হন না। তাই এমন পরিবারের বদলে কোনও ধার্মিক পরিবার খুঁজে বিয়ে করা উচিত।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে ছেলের যেহেতু হালাল পেশা রয়েছে এবং সে নিজেও দ্বীনদার বিধায় এমন পাত্রের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে বাধা নেই। তবে শর্ত হলো, বাবার হারাম কোনো টাকা আপনার সংসারে খরচ করবে না ও বাবার হারাম উপার্জনের টাকা দিয়ে আপনার কোন জরুরত পূর্ণ করবে না বলে ওয়াদাবদ্ধ হয়। ভবিষ্যতে সে যদি কোন মীরাছ পায় তাহলে গ্রহণ করবে না বা সেগুলি দান করে দিবে। তবে আমাদের পরামর্শ থাকবে যদি দ্বীনদারীর দিক থেকে এর চেয়ে ভালো পরিবার পাওয়া যায় তাহলে তাদেরকেই প্রাধাণ্য দেওয়া উচিত হবে। অন্যথায় এমন পরিবারে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াতে কোন প্রবলেম নেই যদি উপরেল্লিখিত শর্তসমূহ বিদ্যমান থাকে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...