আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
125 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম.. সম্প্রতি আমাদের একজন আপুর বিয়ে হয়েছে। বিয়ের সময় ২ জন সাক্ষী সহ মোট ৮/৯ জন ব্যক্তি উপস্থিত ছিলো।

প্রশ্নটি হচ্ছে..
ছেলের ইজাব ও কবুলের সময় কাজী ২ বার প্রশ্ন করেছিলেন ছেলে রাজী কিনা এবং কবুল বলার জন্য। ছেলে রাজী হবার ভঙ্গিতে মাথায় নাড়িয়েছিল ঠিকই..তবে মুখে এতো আস্তে কবুল বলেছিল উপস্থিত বেশ কয়েকজন শুনতে পায় নি...তবে ছেলে পক্ষ থেকে আসা তথাকথিত উকিল বাপ কাজ যখন প্রশ্ন করেছিলেন যে কবুল শুনতে পেয়েছেন কিনা, তিনি উত্তর দেন তিনি শুনতে পেয়েছেন.. ফলে কাজী রেজিষ্ট্রেশন ফর্মে বর ও কনের সাক্ষর নিয়ে দোয়া করে বিয়ে সম্পন করে দেন।

এখন কোনোভাবে কথা উঠেছে যে ছেলের কবুল তো কেউ ঠিক মতো শুনতে পায় নি.. আস্তে বলার কারণে...

..তাহলে কি বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে কিনা?? বিয়ে আবার পড়াতে হবে কিনা?? এই সন্দেহ নিরসনে কি করতে হবে???

1 Answer

0 votes
by (566,280 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-
বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।

উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ اسۡتَشۡہِدُوۡا شَہِیۡدَیۡنِ مِنۡ رِّجَالِکُمۡ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُوۡنَا رَجُلَیۡنِ فَرَجُلٌ وَّ امۡرَاَتٰنِ مِمَّنۡ تَرۡضَوۡنَ مِنَ الشُّہَدَآءِ اَنۡ تَضِلَّ اِحۡدٰىہُمَا فَتُذَکِّرَ اِحۡدٰىہُمَا الۡاُخۡرٰی

আর তোমরা তোমাদের পুরুষদের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ, অতঃপর যদি দু’জন পুরুষ না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক যাদেরকে তোমরা সাক্ষী হিসেবে পছন্দ কর, যাতে স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুলে গেলে তাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
(সুরা বাকারা ২৮২)

হাদিস শরিফে এসেছে, 

لَا يَجُوزُ نِكَاحٌ، وَلَا طَلَاقٌ، وَلَا ارْتِجَاعٌ إِلَّا بِشَاهِدَيْنِ

‘রাসূল (সা.) বলেছেন, দুইজন সাক্ষী ছাড়া বিবাহ, তালাক ও ফিরিয়ে আনা বৈধ হবে না।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস: ১০২৫৪]

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 

রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী- “তোমরা বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা কর।”[মুসনাদে আহমাদ এবং সহীহ জামে গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলা হয়েছে (১০৭২)]
۔
ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষ্যি স্বকর্ণে শুনতে হবে।

উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।

উপরোক্ত তিনটি শর্ত  পাওয়া গেলে বিবাহ হবে,অন্যথায় বিবাহ হবেনা।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,    
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দুই জন মুসলিম স্বাক্ষের সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষে পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,    
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পাত্র যদি কাজী সাহেবকে উল্লেখিত মেয়ের সাথে নিজের বিবাহ করে দেয়ার উকিল বানিয়ে থাকেন,সেক্ষেত্রে উক্ত কাজি সাহেব মেয়েকে সেই পাত্রের পক্ষ হতে মেয়েকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়ার পর উক্ত মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক দুই জন স্বাক্ষীর সামনে কবুল বলে থাকলে এই বিবাহ হয়ে যাবে।

★যদি পাত্র কাজি সাহেবকে উল্লেখিত বোনের সাথে নিজের বিবাহ করে দেয়ার উকিল না বানিয়ে থাকেন,সেক্ষেত্রে কাজি সাহেব পাত্রের পক্ষ হতে মেয়েকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়ার পর উক্ত মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক দুই জন স্বাক্ষীর সামনে কবুল বলে থাকলে,সেক্ষেত্রে বিবাহ মওকুফ ছিলো বলে ধরা হবে,এক্ষেত্রে যেহেতু পাত্র আস্তে কবুল বলেছে (যদিও তাহা অনেকেই শুনতে পারেনি) ,হ্যাঁ সুচক মাথাও নাড়িয়েছে, স্ত্রীর সাথে স্বামী সুলভ আচরন করে বিবাহের প্রতি সম্মতিও প্রকাশ করেছে,সুতরাং সব দিক বিবেচনা করা উক্ত বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে। 

তাদের আর নতুন করে বিবাহ পড়াতে হবেনা।

★তবে তাদের বিবাহ নিয়ে সমাজে ফিতনা সৃষ্টি হলে ফতোয়া দেখানোর পরেও সমাজবাসী ফতোয়া না মানলে ফিতনা নিরসনের জন্য পুনরায় উক্ত বিবাহ পড়িয়ে নেয়ার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...