আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
107 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
আমাদের দৈনন্দিন কাজে অনেক ক্ষেত্রেই ঘরির প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে ঘুম থেকে সঠিক সময়ে উঠবার জন্য অনেকেরই ঘরির এলার্ম এর প্রয়োজন। এক্ষেত্রে প্রায় সব ঘরিতেই এলার্ম হিসেবে নানান ধরনের শব্দ ব্যাবহার করা হয়।

প্রশ্ন ০১: ইসলামে যে মিউজিককে হারাম বলা হয়েছে তা কি কি ধরনের মিউজিক?
প্রশ্ন ০২: ঘরির এলার্মের শব্দ মিউজিক এর অন্তর্ভুক্ত কিনা?

1 Answer

0 votes
by (63,440 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

১.

https://ifatwa.info/40968/  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

ইসলামের দৃষ্টিতে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার হারাম। যদি কেউ বৈধ কিছুর  সঙ্গে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক হিসেবে বাদ্যযন্ত্রের বিভিন্ন সুর বসিয়ে দেয়, সেটাও গুনাহ হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত নাফে’ রাহ. থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার চলার পথে আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বাঁশির আওয়াজ শুনলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি দুই কানে আঙ্গুল দিলেন। কিছু দূর গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, হে নাফে’! এখনো কি আওয়াজ শুনছ? আমি বললাম হ্যাঁ। অতঃপর আমি যখন বললাম, এখন আর আওয়াজ শোনা যাচ্ছে না তখন তিনি কান থেকে আঙ্গুল সরালেন এবং বললেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলার পথে বাঁশির আওয়াজ শুনে এমনই করেছিলেন। -মুসনাদে আহমদ হাদীস : ৪৫৩৫; সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ৪৯২৪ বিখ্যাত তাবেয়ী মুজাহিদ রাহ. থেকেও এমন একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে।-ইবনে মাজাহ হাদীস : ১৯০১

নাসাঈ ও সুনানে আবু দাউদে বর্ণিত আছে, একদিন হযরত আয়েশা রা.-এর নিকট বাজনাদার নুপুর পরে কোনো বালিকা আসলে আয়েশা রা. বললেন, খবরদার, তা কেটে না ফেলা পর্যন্ত আমার ঘরে প্রবেশ করবে না। অতঃপর তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

যে ঘরে ঘণ্টি থাকে সেই ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না।-সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ৪২৩১; সুনানে নাসাঈ হাদীস : ৫২৩৭

সহীহ মুসলিমে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ঘণ্টি, বাজা, ঘুঙুর হল শয়তানের বাদ্যযন্ত্র।-সহীহ মুসলিম হাদীস : ২১১৪

 মৃদু আওয়াজের ঘণ্টি-ঘুঙুরের যদি এই অবস্থা হয় তাহলে আধুনিক সুরেলা বাদ্যযন্ত্র,মিউজিকের বিধান কী হবে তা খুব সহজেই বুঝা যায়।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত ভিডিওতে যে মিউজিক এএ ব্যবহার আছে,এটি শোনা জায়েজ নেই। তাই এধরনের মিউজিক কোনো ভিডিওতে যুক্ত করাও জায়েজ হবেনা। যে ধরনের  Background সাউন্ডে মিউজিক নেই তথা বাদ্য-বাজনার ব্যবহার নেই,সেগুলো আপনি সেই ভিডিও গুলোতে  ব্যবহার করতে পারেন।

বাদ্য-বাজনার ব্যবহার আছে কিনা, সেই বিষয়টি সাউন্ড এনালিস্ট নির্ধারন করবে।   

আরো জানুনঃ

 https://ifatwa.info/16375/

https://ifatwa.info/13605/

২.

মোবাইলের রিংটোনকে মৌলিক ভাবে তিন ভাগে বিভক্ত করা যায় :

(ক) সম্মানিত বস্তুর আওয়াজ যেমন কুরআনের তেলাওয়াত ,আজান ,হামত ,নাত ইত্যাদির আওয়াজ

(খ) অবৈধ জিনিসের সাউন্ড যেমন ,গান-বাদ্য,অনর্থক বা কুরুচি পূর্ন কথা ইত্যাদির আওয়াজ । প্রথমটি ধর্মিয় শিয়ার (প্রতীক) হওয়ায় তা রিংটোন হিসাবে বাজালে শরয়ি শেয়ারের অপব্যবহার হবে বলে এটি জায়েজ নয় ।

আর দ্বিতীয়টির আওয়াজতো খোদ হাদিসেই নিষেধ করা হয়েছে। বিধায় এটাও রিংটোন হিসাবে ব্যবহার করা নাজায়েজ ।

(গ) বৈধ আওয়াজে যেমন ,পশু পাখি ও ঘন্টার আওয়াজ , যে গুলোতে মূলত মিউজিক ব্যবহার হয় না এগুলো মুবাইলে রিংটোন হিসাবে ব্যবহার করা জায়েজ । সূত্র: সূরা লুকমান ৬+,রুদ্দুল মুহতার ৯/৫০২ ।

সুতরাং এলার্ম ঘড়িতে সাধারণত ঘন্টার আওয়াজ দেওয়া থাকে এটি মিউজিকের অন্তর্ভূক্ত নয়। তবে যদি কোন ঘড়িতে গান বা বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ থাকে তাহলে তা ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকায় শ্রেয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...