জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
( رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا )
হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না।(সূরা বাকারা-২৮৬)
অন্য এক আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
(وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ فِيمَا أَخْطَأْتُمْ بِهِ وَلَكِنْ مَا تَعَمَّدَتْ قُلُوبُكُمْ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا)
এ ব্যাপারে তোমাদের কোন বিচ্যুতি হলে তাতে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, তবে ইচ্ছাকৃত হলে ভিন্ন কথা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(সূরা আহযাব-৫)
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
إِنَّ اللَّهَ قَدْ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ، وَالنِّسْيَانَ، وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ
নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার উম্মতের অজ্ঞতা ও ভূলভাল কে ক্ষমা করে দিবেন।এবং অপারগতা বশত কৃত গোনাহকেও ক্ষমা করে দিবেন।(সুনানে ইবনে মা'জা,-২০৪৩)
★এ সমস্ত শরয়ী দলীল প্রমাণ করে যে,ওযর বিল জাহালাত গ্রহণযোগ্য। তথা অজ্ঞতা বশত কেউ কোনো গোনাহর কাজ করে ফেললে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন।
আরো জানুনঃ
,
(০২)
সুরা কাফ এর ১৬ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন
وَ لَقَدۡ خَلَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ وَ نَعۡلَمُ مَا تُوَسۡوِسُ بِہٖ نَفۡسُہٗ ۚۖ وَ نَحۡنُ اَقۡرَبُ اِلَیۡہِ مِنۡ حَبۡلِ الۡوَرِیۡدِ ﴿۱۶﴾
অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার মন তাকে যে কুমন্ত্রণা দেয়, তা আমি জানি। আমি তার ঘাড়ে অবস্থিত ধমনী অপেক্ষাও নিকটতর।
,
সুরা তালাক এর ১২ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নিজেই বলেন
اَللّٰہُ الَّذِیۡ خَلَقَ سَبۡعَ سَمٰوٰتٍ وَّ مِنَ الۡاَرۡضِ مِثۡلَہُنَّ ؕ یَتَنَزَّلُ الۡاَمۡرُ بَیۡنَہُنَّ لِتَعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ۬ۙ وَّ اَنَّ اللّٰہَ قَدۡ اَحَاطَ بِکُلِّ شَیۡءٍ عِلۡمًا ﴿۱۲﴾
আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন সপ্ত আকাশ এবং পৃথিবীও অনুরূপ, ওগুলোর মধ্যে নেমে আসে তাঁর নির্দেশ, যাতে তোমরা বুঝতে পার যে, অবশ্যই আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান এবং জ্ঞানে আল্লাহ সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ""ইলম দ্বারা আমাদের কাছে আল্লাহ তায়ালা আছেন, আমাদের পরিবেষ্ঠন করে রেখেছেন"
এই তাফসীর খোদ আল্লাহ তায়ালারই।
এই আয়াত নিয়ে সালাফ দের মধ্যে অন্য রকমের ব্যখ্যাও রয়েছেঃ
তাফসীরে ইবনে কাসিরে এসেছে
ইমাম ইবনে কাসীর (রঃ) বলেন,
এখানে نحن বা ‘আমরা’ বলে ফেরেশতাদেরকে বোঝানো হয়েছে। যাতে পরবর্তী আয়াতের সাথে অর্থের মিল হয়। তখন ঐ সমস্ত ফেরেশতাই উদ্দেশ্য হবে যারা মানুষের প্রাণ হরনের জন্য বান্দার কাছে এসে থাকে। আমার ফেরেশতাগণ তাদের ঘাড়ের শিরার কাছেই অবস্থান করছে। তারা আমার নির্দেশ মোতাবেক যে কোন সময় তাদেরকে পাকড়াও করবে। ফেরেশতাগণ সদাসর্বদা মানুষের সাথে সাথে থাকে। তারা মানুষের প্রাণ সম্বন্ধে এতটুকু ওয়াকিবহাল, যতটুকু খোদ মানুষ তার প্ৰাণ সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল নয়।
,
وَرِيْدٌ (শাহরগ) বলা হয় প্রধান অথবা এমন প্রাণধারক ধমনীকে যা কেটে গেলে মৃত্যু ঘটে যায়। এই ধমনী (কণ্ঠনালীর দুই পাশে দু’টি মোটা আকারের শিরা) মানুষের কাঁধ পর্যন্ত থাকে। আর এই নৈকট্যের অর্থ জ্ঞানের নৈকট্য। অর্থাৎ, জ্ঞানের দিক দিয়ে আমি মানুষের এত নিকটে যে, তার অন্তরের কথাগুলোও জানতে পারি।
,
وإنما قال : ( ونحن أقرب إليه من حبل الوريد ) كما قال في المحتضر : ( ونحن أقرب إليه منكم ولكن لا تبصرون ) [ الواقعة : 85 ] ، يعني ملائكته . وكما قال [ تعالى ] : ( إنا نحن نزلنا الذكر وإنا له لحافظون ) [ الحجر : 9 ] ، فالملائكة نزلت بالذكر - وهو القرآن - بإذن الله عز وجل . وكذلك الملائكة أقرب إلى الإنسان من حبل وريده إليه بإقدار الله لهم على ذلك ،
সারমর্মঃ এখানে ফেরেশতা উদ্দেশ্য।
(০৩)
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
تفكَّروا في كلِّ شيءٍ , ولا تتفكَّروا في اللهِ
তোমরা সব কিছু নিয়ে গবেষণা কর। কিন্তু আল্লাহর সত্ত্বা নিয়ে গবেষণা করো না।
ইমাম যুরকানী রহঃ বলেন, হাদীসটি হাসান লিগাইরিহী। [মুখতাসারুল মাকাসিদ, বর্ণনা নং-৩১৮]
,
সুতরাং আমরা উক্ত বিষয় নিয়ে গবেষণা করবোনা।
আরো জানুনঃ
,
শেষ আসমানে নেমে আসা নিয়ে উলামায়ে কেরাম বলেছেন যে তার রহমত আমাদের নিকটে (কাছে) চলে আসে।