আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
100 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
উস্তাদ আই ফতোয়াতে স্বামী স্ত্রী সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নের উত্তর পড়েছি যেখানে পেয়েছি, স্ত্রী জান্নাতি হলে সে তার দুনিয়ার শেষ স্বামীকে স্বামী হিসাবে পাবেন। স্বামী জান্নাতি হলে তার দুনিয়ার স্ত্রীও জান্নাতি হলে দুনিয়ার স্ত্রী হবেন হুরদের সর্দারনী।
তাহলে স্বামী অল্প বয়সে মারা গেলেও স্ত্রী আর দ্বিতীয় বিবাহ না করলে পরকালে উনার শেষ স্বামী উনিই থাকছেন। তাহলে তারা জান্নাতি হলে স্বামী স্ত্রী হিসাবে একজন আরেকজনকে পাবেন না কেন? উনি উনার স্বামীকে খুব ভালোবাসেন এবং উনি পরকালে উনার স্বামীকে ফিরে পেতে চান। তার জন্য আমল করতে চান। উল্লেখ্য উনার স্বামীও উনার প্রতি যথেষ্ট মোহাব্বত করেছেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত লয়াল থেকেছেন। তাহলে পরকালে উনার স্বামীকে পুনরায় স্বামী হিসাবে উনি পাবার আশা কেন রাখতে পারেন না আমৃত্যু আর বিবাহ না করে? আর যেহেতু উনাদের একটা শিশুসন্তান আছে উনি  ইচ্ছে পোষণ করলে উনার শিশু সন্তানকে নিয়ে বাকি জীবন কাটাতে পারবেন না?
২.  উনার স্বামী মারা যওয়ার আগে উনাকে বেশ কিছু কথা বলে গেছেন,  উনার স্বামী দুনিয়াতে না থাকলে শিশুসন্তানকে নিয়ে কিভাবে চলবেন এ সংক্রান্ত।  সেক্ষেত্রে উনার স্বামীর নির্দেশ মতাবেক উনি চলতে পারবেন কি না যেটায় কারো কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই এবং আল্লাহর নফরমানী নেই।

৩. শিশুসন্তানটি যেহেতু আল্লাহর এবং উনার স্বামীর রেখে যাওয়া আমানত। পৃথিবীতে দ্বিতীয় আর কেউই সন্তানটিকে তার পিতার মতো স্নেহ ভালোবাসা দিতে পারবে না। সেক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির স্ত্রীর দ্বিতীয় বিয়ে সন্তানটির ওপর  না- ইনসাফী হয়ে যাবে, বরং তার সন্তানের প্রতি নিজের সুখের জন্য  তিনি অবিচার করে ফেলবেন  বলে উনার স্ত্রী  বিশ্বাস করেন৷ উনার স্বামীর রেখে যাওয়া আমানতের উনি কোনো খিয়ানত করতে চান না। সন্তানকে নিয়ে থাকতে চান। এক্ষেত্রে ইসলামের বিধান উনার জন্য কি?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

হযরত আবু দারদা রাযি থেকে বর্ণিত

أيما امرأة تُوفي عنها زوجها ، فتزوجت بعده ، فهي لآخر أزواجها " 

যে মহিলার স্বামী মারা যাবে, অতঃপর সে পরবর্তীতে বিয়ে করবে,তাহলে ঐ মহিলা তার সর্বশেষ স্বামীর সাথে জান্নাতে থাকবে।(সহিহুল জামে-২৭০৪)


ﻭﻣﻦ ﺗﺰﻭﺟﺖ ﺑﺄﻛﺜﺮ ﻣﻦ ﻭﺍﺣﺪ : ﻓﻬﻲ ﻵﺧﺮ ﺃﺯﻭﺍﺟﻬﺎ ، ﺃﻭ ﻷﻭﻟﻬﻢ ﺇﻥ ﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻃﻠﻘﻬﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ، ﺃﻭ ﺗﺨﻴﺮ ﻓﺘﺨﺘﺎﺭ ﻣﻦ ﻛﺎﻥ ﺃﺣﺴﻨﻬﻢ ﺧﻠﻘﺎً ﻣﻌﻬﺎ ، ﺃﻗﻮﺍﻝ : ﺻﺤﺢ ﺟﻤﻊ ﻣﻨﻬﺎ ﺍﻷﻭﻝ ، ﻭﺗﻌﻄﻰ ﺯﻭﺟﺔ ﻛﺎﻓﺮ ﺩﺧﻠﺖ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻟﻤﻦ ﺷﺎﺀ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ " ﺍﻧﺘﻬﻰ ﻣﻦ " ﺭﻭﺡ ﺍﻟﻤﻌﺎﻧﻲ " ( 25/136 ) .
ঐ মহিলা যে দুনিয়াতে দুই বা ততোধিক স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল,সে সর্বশেষ স্বামীর সাথে জান্নাতে থাকবে,অথবা প্রথম স্বামীর সাথে থাকবে( যদি বিবাহ বিচ্ছেদ না হয়ে থাকে),অথবা স্ত্রীকে এখতিয়ার দেয়া হবে।আহলে কিতাবের মু'মিন স্ত্রীকে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তার সাথে বিবাহ দিবেন।(রুহুল মা'আনী-২৫/১৩৬)

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
স্বামী মারা গেলে স্ত্রী আর দ্বিতীয় বিবাহ না করলে পরকালে উনার শেষ স্বামী উনিই থাকছেন। 

তবে এক্ষেত্রে যদি স্ত্রী ২য় বিবাহ করে,সেক্ষেত্রে জান্নাতে যদি স্ত্রী আর ২য় স্বামী যান,তাহলে জান্নাতে সে তার ২য় স্বামীর সাথে থাকবে।

হ্যাঁ  এক্ষেত্রে সেই স্ত্রী যদি ১ম স্বামীর সাথে জান্নাতে থাকতে চায়,আর সেই ১ম স্বামীও জান্নাতে যায়,এক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা তাকে ১ম স্বামীর সাথে থাকার ইচ্ছা পূরন করবেন।
সে এক্ষেত্রে ১ম স্বামীর সাথে জান্নাতে থাকতে পারবে।

প্রশ্নে উল্লেখিত স্ত্রী চাইলে তার শিশু সন্তানকে নিয়ে বাকি জীবন কাটাতে পারবেন। এটি তার ইচ্ছাধীন।
তবে গুনাহে জড়িয়ে পড়া যাবেনা।
,
জান্নাতবাসীদের সকল ইচ্ছা পূরণ করা হবে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

 وَ لَکُمۡ فِیۡہَا مَا تَشۡتَہِیۡۤ اَنۡفُسُکُمۡ وَ لَکُمۡ فِیۡہَا مَا تَدَّعُوۡنَ ﴿ؕ۳۱﴾ 
সেখানে তোমাদের জন্য থাকবে যা কিছু তোমাদের মন চাইবে এবং সেখানে তোমাদের জন্য থাকবে যা তোমরা দাবী করবে।
(সূরা হামিম সাজদাহ ৩১)

 وَ فِیۡہَا مَا تَشۡتَہِیۡہِ الۡاَنۡفُسُ وَ تَلَذُّ الۡاَعۡیُنُ ۚ وَ اَنۡتُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿ۚ۷۱﴾ 

সেখানে মন যা চায় এবং যাতে নয়ন তৃপ্ত হয় তাই থাকবে। আর সেখানে তোমরা স্থায়ী হবে।
(সুরা আয যুখরুফ ৭১)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَتَحَدَّثُ - وَعِنْدَهُ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ -: إِنَّ رَجُلًا مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ اسْتَأْذَنَ رَبَّهُ فِي الزَّرْعِ. فَقَالَ لَهُ: أَلَسْتَ فِيمَا شِئْتَ؟ قَالَ: بَلَى وَلَكِنْ أُحِبُّ أَنْ أَزْرَعَ فَبَذَرَ فَبَادَرَ الطَّرْفَ نَبَاتُهُ وَاسْتِوَاؤُهُ وَاسْتِحْصَادُهُ فَكَانَ أَمْثَالَ الْجِبَالِ. فَيَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى: دُونَكَ يَا ابْن آدم فَإِنَّهُ يُشْبِعُكَ شَيْءٌ . فَقَالَ الْأَعْرَابِيُّ: وَاللَّهِ لَا تَجِدُهُ إِلَّا قُرَشِيًّا أَوْ أَنْصَارِيًّا فَإِنَّهُمْ أَصْحَابُ زَرْعٍ وَأَمَّا نَحْنُ فَلَسْنَا بِأَصْحَابِ زَرْعٍ فَضَحِكَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন নবী (সা.) কথাবার্তা বলছিলেন। এ সময় তাঁর কাছে একজন গ্রাম্য বেদুইন উপস্থিত ছিল। তিনি (সা.) বললেন, জান্নাতবাসী এক লোক সেখানে কৃষিকাজ করার জন্য তার প্রভুর কাছে অনুমতি চাবে। তখন আল্লাহ তা'আলা তাকে বলবেন, তোমার চাহিদা মতো সবই কি পাচ্ছ না? লোকটি বলল, হ্যা, তবে আমি কৃষিকাজ ভালোবাসি। অতঃপর সে বীজ বপন করবে এবং চক্ষুর পলকে তা উদ্গত হবে, পোক্ত হবে এবং ফসল কাটা হবে। এমনকি পাহাড়ের সমান স্তুপ হয়ে যাবে। তখন আল্লাহ তা'আলা বলবেন, হে আদম সন্তান নিয়ে যাও, কোন কিছুতেই তোমার তৃপ্তি হয় না। তখন গ্রাম্য বেদুইন লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর শপথ! দেখবেন, সে হয়তো কোন কুরায়শী অথবা আনসার গোত্রীয় লোক হবে। কেননা তারাই কৃষিকাজ করে থাকে। আর আমরা তো কৃষিকাজ করি না। রাসূলুল্লাহ (সা.) তার কথা শুনে হেসে দিলেন।
(বুখারী ২৩৪৮, মুসনাদে আহমাদ ১০৬৫০, সহীহুল জামি ২০৮০,মিশকাত ৫৬৫৩।)

(০২)
হ্যাঁ, তিনি তার স্বামীর নির্দেশ মোতাবেক চলতে পারবেন।

(০৩)
এটি তার ইচ্ছাধীন।
তবে গুনাহে জড়িয়ে পড়া যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...