জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: أَنَّ رَجُلًا قَالَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ أُمِّي افْتُلِتَتْ نَفْسُهَا، وَأَظُنُّهَا لَوْ تَكَلَّمَتْ تَصَدَّقَتْ، فَهَلْ لَهَا أَجْرٌ إِنْ تَصَدَّقْتُ عَنْهَا؟ قَالَ: «نَعَمْ
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি রাসূল সাঃ এর কাছে এসে বলল, আমার আম্মা হঠাৎ ইন্তেকাল করেছেন।[কিছু বলে যেতে পারেননি] আমার ধারণা! তিনি যদি কিছু বলার সুযোগ পেতেন, তাহলে আমাকে তার নামে সদকা করতে বলতেন। তো আমি যদি তার নামে সদকা করি, তাহলে কি এর সওয়াব তিনি পাবেন? রাসূল সাঃ বললেন, হ্যাঁ। [বুখারী, হাদীস নং-১৩৮৮]
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّ امْرَأَةً مِنْ جُهَيْنَةَ، جَاءَتْ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: إِنَّ أُمِّي نَذَرَتْ أَنْ تَحُجَّ فَلَمْ تَحُجَّ حَتَّى مَاتَتْ، أَفَأَحُجُّ عَنْهَا؟ قَالَ: «نَعَمْ حُجِّي عَنْهَا، أَرَأَيْتِ لَوْ كَانَ عَلَى أُمِّكِ دَيْنٌ أَكُنْتِ قَاضِيَةً؟ اقْضُوا اللَّهَ فَاللَّهُ أَحَقُّ بِالوَفَاءِ
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। এক জুহাইনা এলাকার এক মহিলা রাসূল সাঃ এর কাছে এসে বললেন, আমার আম্মা হজ্ব করার মান্নত করেছিলেন, কিন্তু হজ্ব করার আগেই তিনি ইন্তেকাল করেছেন। আমি কি এখন তার পক্ষ থেকে তা আদায় করবো? রাসূল সাঃ ইরশাদ করলেন, হ্যাঁ, তুমি তার পক্ষ থেকে আদায় কর। তোমার মায়ের যিম্মায় যদি ঋণ থাকতো, তাহলে কি তুমি তা আদায় করতে না? তেমনি এটাও আদায় কর। কারণ আল্লাহ তাআলাই অধিক হক রাখেন যে, তার সাথে কৃত অঙ্গিকার পূর্ণ করা হবে। [বুখারী, হাদীস নং-১৮৫২]
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: شَهِدْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْأَضْحَى بِالْمُصَلَّى، فَلَمَّا قَضَى خُطْبَتَهُ نَزَلَ مِنْ مِنْبَرِهِ وأُتِيَ بِكَبْشٍ فَذَبَحَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ، وَقَالَ: «بِسْمِ اللَّهِ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ، هَذَا عَنِّي، وَعَمَّنْ لَمْ يُضَحِّ مِنْ أُمَّتِي
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাঃ এর সাথে ঈদুল আযহায় নামাযে শরীক ছিলাম। যখন খুতবা শেষ হল। তখন তিনি মিম্বর থেকে নামলেন। তারপর তার কাছে একটি ভেড়া আনা হল। তারপর তিনি তা জবাই করলে নিজ হাতে। জবাইকালে বললেন, বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, এটি আমার এবং আমার ঐ উম্মতীর পক্ষ থেকে যারা কুরবানী করতে পারেনি। [আবু দাউদ, হাদীস নং-২৮১০]
وفی البحر: من صام أو صلی أو تصدق وجعل ثوابہ لغیرہ من الأموات والأحیاء جاز، ویصل ثوابہا إلیہم عند أہل السنة والجماعة کذا فی البدائع، ثم قال: وبہذا علم أنہ لا فرق بین أن یکون المجعول لہ میتا أو حیا. والظاہر أنہ لا فرق بین أن ینوی بہ عند الفعل للغیر أو یفعلہ لنفسہ ثم بعد ذلک یجعل ثوابہ لغیرہ، لإطلاق کلامہم، وأنہ لا فرق بین الفرض والنفل. اہ. وفی جامع الفتاوی: وقیل: لا یجوز فی الفرائض اہ․ (الدر المختار وحاشیة ابن عابدین (رد المحتار) 3/ 152، کتاب الجنائز، باب صلاة الجنازة، مطبوعة: مکتبة زکریا، دیوبند)
সারমর্মঃ-
কোনো ব্যাক্তি নামাজ পড়লো অথবা রোযা রাখলো অথবা সদকাহ করলো,এবং এর ছওয়াব কোনো মাইয়্যিত বা জীবিত ব্যাক্তির জন্য পাঠালো, তাহলে এটি জায়েজ আছে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মতে এর ছওয়াব উক্ত ব্যাক্তির নিকট পৌছবে।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনার স্বামীর কোনো নামাজ কাজা থাকলে বা কোনো রোযা কাজা থাকলে সেটি আপনার নামাজ রোযা আদায়ের দ্বারা পূরন হবেনা।
এক্ষেত্রে প্রত্যেকটি নামাজ ও প্রত্যেকটি রোযার জন্য ফিদইয়াহ আদায় করতে হবে।
তবে আপনার স্বামীর নামাজ রোযার কাজা হিসেবে নয়,আপনার স্বামীর নিকট ছওয়াব পৌছানোর জন্য আপনি নামাজ রোযা আদায় করতে পারেন।
এক্ষেত্রে নফল নামাজ, নফল রোযা আদায় করবেন।
নামাজ পড়ার পূর্বে এভাবে নিয়ত করবেন যে আমি যেই নামাজ পড়তেছি,হে আল্লাহ! এই নামাজের ছওয়াব আপনি আমার স্বামীর নিকট পৌছিয়ে দিন।
রোযা রাখার পূর্বে এভাবে নিয়ত করবেন যে আমি যেই রোযা রাখতেছি,হে আল্লাহ! এই রোযার ছওয়াব আপনি আমার স্বামীর নিকট পৌছিয়ে দিন।
আরো জানুনঃ-
(০২)
নারী চাকরির খাতিরে ঘর থেকে বের হতে পারবে। তবে এর জন্য কিছু নিয়ম ও শর্ত রয়েছে। নিয়ম ও শর্তগুলো মেনে চললে নারীর জন্য ঘর থেকে বের হওয়া জায়েয হবে; অন্যথায় নয়।
সেই শর্তগুলি জানুনঃ-
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনি উপরের লিংকে দেয়া শর্তাবলী মেনে চাকুরী করতে পারবেন।
ব্যাংকে চাকরি করা জায়েজ হবেনা।
ব্যাংক চাকুরী করলে বেতন হারাম হবে।
৭৮ বা তার চেয়ে বেশি দূরত্বে কোথাও যেতে হলে মাহরাম পুরুষ ছাড়া যাওয়া জায়েজ হবেনা। গুনাহ হবে।
আপনার ছেলে প্রাপ্ত বয়স্ক হলে তাকে নিয়ে বিদেশে যেতে পারবেন,সেক্ষেত্রে ফিতনার আশংকা থাকা যাবেনা,যেখানে যাবেন সেই জায়গা,যাতায়াত সহ সব কিছু নিরাপদ হতে হবে,পূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করতে হবে,এবং আরো কিছু শর্ত আছে,যাহা পূর্ণ ভাবে মানতে পারলে শরীয়াহ নীতির আওতায় থেকে বিদেশে যেতে পারবেন।
বাকি শর্ত গুলি জানুনঃ-
(০৩)
বিশুদ্ধ মতানুযায়ী মাহরাম না থাকলে মহিলার উপর হজ্বও ফরয হবে না। হাদীস শরীফে এসেছে-
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِاِمْرَأَةٍ وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ. فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ اكْتُتِبْتُ فِىْ غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا وَخَرَجَتِ امْرَأَتِىْ حَاجَّةً قَالَ: اِذْهَبْ فَاحْجُجْ مَعَ اِمْرَأَتِكَ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
[‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পুরুষ যেন কক্ষনো কোন স্ত্রীলোকের সাথে এক জায়গায় নির্জনে একত্র না হয়, আর কোন স্ত্রীলোক যেন কক্ষনো আপন কোন মাহরাম ব্যতীত একাকিনী সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! অমুক অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখানো হয়েছে। আর আমার স্ত্রী একাকিনী হজের উদ্দেশে বের হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যাও তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ/হজ করো।
সহীহ : বুখারী ৩০০৬, মুসলিম ১৩৪১, আহমাদ ১৯৩৪, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২৫২৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০১৩৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩৭৫৭।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
হজ্জ করার কতো আপনার মায়ের সাথে মাহরাম পুরুষ যেতে না চাওয়ার দরুন আপনার মায়ের উপর হজ্জ ফরজ হয়নি।
সুতরাং এক্ষেত্রে মাহরাম ব্যতীত নারী দলের সাথে আপনার মা হজ্জে যেতে পারবেননা।
গেলে হজ্জ আদায় হবে ঠিকই,তবে গুনাহ হবে।
আপনি আপনার নাবালেগ শিশু পুত্রকে নিয়ে আপনার মায়ের সাথে ওমরাহ / হজ্জে যেতে পারবেননা।