আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
257 views
in সালাত(Prayer) by (6 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

১/হুজুর, এখন আমার বয়স চলে ১৮।আমি বালেগ হওয়ার পর থেকে দ্বীনে ফেরার আগ পর্যন্ত ইচ্ছাই অনিচ্ছাই অনেক নামাজ কাযা হয়ে গেছে। সেই আগের কাযা নামাজ গুলো আদায় করার নিয়ম কী?

২/ তবে আলহামদুলিল্লাহ ২.৫ বছর যাবৎ ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার চেষ্টা করছি। এর মধ্যেও সফর অবস্থায় ইচ্ছাই বা অনিচ্ছায় এবং ঘুমিয়ে থাকার করানে প্রায়ই ফজরের নামাজ কাযা হয়ে যায়। এই কাযা নামাজ পড়ার নিয়ম কি?

৩/প্রতি ওয়াক্তের কাযা নামাজ (যেমন: ফজর,যোহর,আছর, মাগরিব ও ইশা) কি ঐ ওয়াক্তের ফরজ, সুন্নাত নামাজ পড়া শেষে আদায় করা যাবে?

৪/ওয়াক্তের ফরজ নামাজ পড়ার আগে কি ঐ ওয়াক্তের কাযা নামাজ আদায় করা যাবে? যেমন: ফজরের সময় আগে ফজরের ২ রাকাত সুন্নত পড়ে তারপর ২ রাকাত কাযা নামাজ পড়লাম তারপর জামাতে ফরজ নামাজ টুকু আদায় করলাম। এমনি ভাবে যোহর,আছর, ইশা।

৫/‌ফজরের সময় সূর্য উঠার পর কি ফজরের কাযা নামাজ আদায় করা যাবে?

৬/ যেই বেতের নামাজ গুলো কাযা হয়ে গেছে এগুলো কি কাযা আদায় করতে হবে? হলেও কীভাবে কখন আদায় করতে হবে?

৭/কাযা নামাজ আদায়ের জন্য নিয়ত কীভাবে করতে হবে?আমি যদি এভাবে নিয়ত করে যে, ১ম দিন: আমার জীবনের সর্বপ্রথম ফজরের কাযা নামাজ আদায় করতেছি, আল্লাহু আকবার,এমনি ভাবে অনান্য ওয়াক্তের নামাজ ও সামিল। আবার ২য় দিন: আমার জীবনের ২য় ফজরের কাযা নামাজ আদায় করছি আল্লাহু আকবার, এমনি ভাবে অনান্য ওয়াক্তের নামাজ ও সামিল। এভাবে ১০০-২০০,৩০০ যতবার নামাজ কাযা হয়েছে সেগুলো কী এমন করে নিয়ত করে আদায় করলে হবে ⁉️

৮/ উপরিউক্ত ৭ এর মতো কী ইশার ওয়াক্তে বেতের কাযা নামাজ আদায় করা যাবে। গেলেও তার নিয়ম কী?

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাব

https://ifatwa.info/82261/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

নামাজ ত্যাগ অনেক মারাত্মক গুনাহ।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، قَالَ أَوْصَانِي خَلِيلِي ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنْ " وَلاَ تَتْرُكْ صَلاَةً مَكْتُوبَةً مُتَعَمِّدًا فَمَنْ تَرَكَهَا مُتَعَمِّدًا فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ الذِّمَّةُ وَلاَ تَشْرَبِ الْخَمْرَ فَإِنَّهَا مِفْتَاحُ كُلِّ شَرٍّ " .

আবূ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার প্রিয় বন্ধু (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে এই উপদেশ তুমি স্বেচ্ছায় ফরয নামায ত্যাগ করো না। যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় তা ত্যাগ করে তারথেকে (আল্লাহর ) যিম্মদারি উঠে যায়। তুমি মদ্যপান করো না। কেননা তা সর্বপ্রকার অনিষ্টের চাবিকাঠি। (সুনানে ইবনে মাজাহ ৪০৩৪)

 

অধিক কাযা নামাজ তারতীবকে রহিত করে দেয়। ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে আছে-

حتي ترك صلاة شهر ثم قضي ثلاثين فجر ثم ثلاثين ظهرا ثم هكذا صح

মর্মার্থ: কারোর যদি এক মাসের নামাজ কাযা হয়ে যায়। অত:পর সে ত্রিশ দিনের ফজরের নামাজ কাযা করে তারপর জহর…তাহলে তা সহীহ আছে। ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/১৮৩

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/25597/

 

ইবনে আবেদীন শামী রাহ কাযা নামায পড়ার নিয়ম এভাবে দিয়েছেন যে,

ﻭﻓﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ - ﻛَﺜُﺮَﺕْ ﺍﻟْﻔَﻮَﺍﺋِﺖُ ﻧَﻮَﻯ ﺃَﻭَّﻝَ ﻇُﻬْﺮٍ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﻭْ ﺁﺧِﺮَﻩُ،

 

ﻭﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻋﺎﺑﺪﻳﻦ ﺍﻟﺸﺎﻣﻰ – ( ﻗَﻮْﻟُﻪُ ﻛَﺜُﺮَﺕْ ﺍﻟْﻔَﻮَﺍﺋِﺖُ ﺇﻟَﺦْ ) ﻣِﺜَﺎﻟُﻪُ : ﻟَﻮْ ﻓَﺎﺗَﻪُ ﺻَﻠَﺎﺓُ ﺍﻟْﺨَﻤِﻴﺲِ ﻭَﺍﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ ﻭَﺍﻟﺴَّﺒْﺖِ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻗَﻀَﺎﻫَﺎ ﻟَﺎ ﺑُﺪَّ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺘَّﻌْﻴِﻴﻦِ ﻟِﺄَﻥَّ ﻓَﺠْﺮَ ﺍﻟْﺨَﻤِﻴﺲِ ﻣَﺜَﻠًﺎ ﻏَﻴْﺮُ ﻓَﺠْﺮِ ﺍﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ، ﻓَﺈِﻥْ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﺗَﺴْﻬِﻴﻞَ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮِ، ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺃَﻭَّﻝَ ﻓَﺠْﺮٍ ﻣَﺜَﻠًﺎ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﺇﺫَﺍ ﺻَﻠَّﺎﻩُ ﻳَﺼِﻴﺮُ ﻣَﺎ ﻳَﻠِﻴﻪِ ﺃَﻭَّﻟًﺎ ﺃَﻭْ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺁﺧِﺮَ ﻓَﺠْﺮٍ، ﻓَﺈِﻥَّ ﻣَﺎ ﻗَﺒْﻠَﻪُ ﻳَﺼِﻴﺮُ ﺁﺧِﺮًﺍ، ﻭَﻟَﺎ ﻳَﻀُﺮُّﻩُ ﻋَﻜْﺲُ ﺍﻟﺘَّﺮْﺗِﻴﺐِ ﻟِﺴُﻘُﻮﻃِﻪِ ﺑِﻜَﺜْﺮَﺓِ ﺍﻟْﻔَﻮَﺍﺋِﺖِ . ( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺼﻼﺓ، ﺑﺎﺏ ﻗﻀﺎﺀ ﺍﻟﻔﻮﺍﺋﺖ - 2/538

ভাবানুবাদঃ- উমরী কাযা নামায আদায় করতে হলে প্রথমে কোন ওয়াক্তের কতটা নামায কাযা হয়েছে তা নির্ণয় করবে।যদি সেটা নির্ণয় করা সম্ভব না হয়। তাহলে অনুমান করে নিবে। অনুমান করে কোন ওয়াক্তের কতটি নামায কাযা হয়েছে সেটা নির্ধারণ করে নিবে। তারপর ধারাবাহিকভাবে একে একে সবগুলোকে  আদায় করে নিবে।

 

যেমন, ফজরের নামায সর্বমোট ১০০ ওয়াক্তের কাযা হয়েছে। তখন কাযা নামায আদায় করার সময় এভাবে নিয়ত করবে যে, আমার জিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা রয়েছে, সে অনাদায়কৃত নামায সমূহের মধ্য থেকে প্রথম ফজরের নামাযকে এখন কাযা আদায় করছি” এমন নিয়তে নামায আদায় করবে। এভাবে হিসেবে করে পড়তে থাকবে। প্রতিবার অনাদায়কৃত প্রথম ফজরের নামায বলার দ্বারা তার যিম্মায় যতগুলো নামায বাকি ছিলো, সেগুলোর প্রথম নামাযের নিয়ত হচ্ছে, তাই এক্ষেত্রে নিয়তটি নির্দিষ্ট নামাযেরই হচ্ছে। ঠিক উল্টোভাবেও করা যায়। অর্থাৎ যত নামায কাযা আছে তার সর্বশেষ অনাদায়কৃত কাযার নিয়ত করছি। এভাবেও পূর্বোক্ত পদ্ধতিতে বাকি নামাযের কাযা আদায় করা যাবে। (রদ্দুল মুহতার-২/৫৩৮)

এ ধারাবাহিকতায় বাকি নামায সমূহের ক্বাযা আদায় করবে। যোহর, আছর, মাগরিব, ইশা এবং সাথে বিতিরের নামাযকে ও এভাবেই আদায় করে নিবে।

বিতিরের নামাযের ক্বাযা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://ifatwa.info/2053/   

উমরী কা’যার নামায সম্পর্কে  বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-  https://www.ifatwa.info/968

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. উপরের বর্ণিত পদ্ধতিতে আদায় করবেন।

২. চেষ্টা করবেন যাতে করে কোনো ওয়াক্তের নামাজ কাযা না হয়। কারণ, নামাজ কাযা করা অনেক বড় গোনাহ। এর পরও কোনো ওয়াক্তের নামাজ কাযা হয়ে গেলে তা এক-দুই দিনের মধ্যেই কাযা করে নিবেন।

৩-৫. তিন সময় নামাজ পড়া নিষিদ্ধ। সূর্যদয়, দ্বিপ্রহর ও সূর্যাস্তের সময়। এই তিন সময় ছাড়া যে কোনো সময় আপনি কাযা নামাজ আদায় করতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা নেই। সুতরাং প্রশ্নে বর্ণিত সময়েও আপনি চাইলে কাযা নামাজ আদায় করতে পারবেন।

 

৬. হানাফী মাজহাব অনুযায়ী বিতরের নামাজ তিন রাকাতই ঐ পদ্ধতিতে কাযা আদায় করবেন যেই পদ্ধতিতে আমরা প্রতিদিন তিন রাকাত বিতরের নামাজ আদায় করে থাকি। আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/2053/   

৭. উপরের বর্ণিত পদ্ধতিতে আদায় করবেন।

৮. উপরের বর্ণিত পদ্ধতিতে আদায় করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
৬. হুজুর বিতরের নামাজ কী শুধু ইশার ওয়াক্তে আদায় করতে হবে?
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! বিতিরের কা'যা নিয়ে মতপার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে।হানাফি মাযহাব অনুযায়ী বিতিরের কায়া তিন রাকাতই আদায়ের মত করতে হবে।আল্লাহ-ই ভালে  জানেন।
উপরিউক্ত মতে আমি যদি ইশার নামাজ অথাৎ ফরজ, সুন্নাত, বেতের পড়ার পর, মসজিদে বেতের কাযা নামাজ আদায় করি তখন তিন রাকাত বেতের পড়তে হবে তবে তৃতীয় রাকাতে কুনুত পড়ার সময় হাত তোলা যাবে না? তাই তো।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 373 views
0 votes
1 answer 179 views
...