আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
205 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (23 points)
edited by
▪️আমার স্বামী যে টাকা বেতন পান, সেই টাকা দিয়ে ওনার মা, বাবা, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে চট্টগ্রামে  আলাদা বাসা ভাড়া করে থাকা সম্ভব নয়। কিন্তুু, চরিত্র হেফাজতের জন্য হাসবেন্ড ওয়াইফ একসাথে থাকাটাও জরুরি আমাদের জন্য, হাসবেন্ডের ই বেশি কষ্ট হয় । আমাদের ৮ মাস বয়সী ছেলে সন্তান আছে।
শশুর শাশুড়ি গ্রামে থাকেন, আমার শাশুড়ি খুব অসুস্থ, কোমড়ে সমস্যার কারণে অনেক কষ্টে হাটা চলা করেন বয়স আনুমানিক ৫৩ হবে।তার যত্ন নেওয়ার মতো আপন মহিলা মানুষ,  তেমন নেই। তাই আমাকে সে বাড়ির বৌ হিসেবে  শাশুড়ির সঙ্গেই থাকতে হবে, তার দেখাশোনা করার জন্য। আপাতত আমার বাবার বাসায় ই আছি পড়াশোনার কারণে, হাসবেন্ড এখন আলাদা মেসে থাকেন, মেস থেকে সপ্তাহে ২ দিন করে এসে থেকে যান যেহেতু আমার বাবার বাড়িও এখানেই। কয়েক মাস পর ইন শা আল্লাহ পড়াশোনা শেষ হলে আমাকে হাসবেন্ড গ্রামে পাঠাতে চাচ্ছে।
 কিন্তুু আমাকে গ্রামে পাঠিয়ে দিলে,  হয়তো আমার হাসবেন্ড মাসে ১/২ বার আসতে পারবে। আমি সবসময় এটাই চাই সবাই  একসাথে থাকি কিন্তুু একসাথে রাখার সামর্থ্য তো হাসবেন্ডের নেই।
এখন আমাদের কি করা উচিত?এক্ষেত্রে ইসলাম কি বলে? এই পরিস্থিতিতে ইসলামিক সমাধান কি?
▪️আবার আরেকটা চিন্তার বিষয় হল, আমার শশুড় শাশুড়ি কে সুদের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানানোর পর ও তারা ব্যাংকে টাকা জমা রাখার মাধ্যমে সুদ খায়,  আমার হাসবেন্ডের বেতনের অর্ধেকই গ্রামে  বাবা মার কাছে পাঠায়, যার ফলে ঐ সুদের টাকার সাথে আমার স্বামীর হালাল ইনকাম করা টাকাও যোগ হয়। এখানে হালাল-হারামের মিশ্রণ  হয়ে যায়। এখন আমার বাবার বাসায় আছি আমার বাবা ভাই  আলহামদুলিল্লাহ হালাল ইনকাম করে তাই এখন হালালই খাচ্ছি,  কিন্তুু গ্রামে থাকতে গেলে তো সেখানে আমাকে হারাম খেতে হবেই, আমি না চাইতেও,যেহেতু আমি কোন ইনকাম করি না, আমি কিভাবে বাচবো এই হারাম খাওয়া থেকে। এমতাবস্থায় আমার করণীয় কি?

আমি অনেক ভয় করি এই সুদের ব্যাপারটা যেহেতু আল্লাহতালা দোয়াই কবুল করেন না, যারা হারাম খায় তাদের।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
ইসলামের দিক-নিদের্শনা হচ্ছে বিবাহের পরে স্বামীর প্রথম কতর্ব্য হলো স্ত্রীর জন্য এমন একটি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যেখানে স্ত্রী মানুষের দৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা পর্দা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আর এই বিধান পালন করার জন্য স্বামীর কতর্ব্য স্ত্রীকে সাহায্য করা। সেই সাথে অন্যান্য সকল কষ্ট থেকে স্ত্রীর আরামের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে স্ত্রীকে শ্বশুর ও শাশুড়ির সাথেই থাকতে হবে এমন বাধ্যও করা যাবে না। কেননা এমন কোন অধিকার স্বামীর নেই। তবে এই ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী উভয়কে সামাজিক অবস্থার উপর বিবেচনা করেও কিছু কাজ করতে হবে।

যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে স্বামীর পরিবারের সাথে অথবা অন্য আত্মীয়ের সাথে থাকার কথা বলে কিন্তু স্ত্রী কারো সাথে থাকার কথা রাজি না হয় তাহলে স্ত্রীকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা স্বামীর কতর্ব্য। কেননা স্ত্রীর সকল কিছু রক্ষা করা ও নিরাপদে বসবাস করার দায়িত্ব স্বামীর।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .

 

সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ

বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেনতিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যেতোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)

 

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

تجب السكني لها عليه في بيت خال

মর্থার্থ: স্ত্রীর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা স্বামীর উপর আবশ্যক। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াত১/৬০৪)


আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনার জন্য আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা করা আপনার স্বামীর উপর আবশ্যক।

কিন্তু এক্ষেত্রে আপনি যদি শাশুড়ীর খেদমত, সকলকে নিয়ে একসাথে থাকার সামর্থ্য স্বামীর না থাকা ইত্যাদি সব বিষয় বিবেচনা করে নিজ থেকেই গ্রামে যৌথ ফ্যামিলিতে থাকতে চান,সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।

তবে আপনি চাইলে নিজের জন্য স্বামীকে আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে চাপ দিতে পারবেন।

(০২)
এক্ষেত্রে আপনার খাবার আপনার স্বামীর ইনকাম থেকে ধরা হবে।

সেক্ষেত্রে আপনার জন্য উক্ত খাবার গ্রহন করতে সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 189 views
...