আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
218 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
আসসালামু আলাইকুম হযরত,

কোনো কিতাবে হয়ত পড়ছি যে, কেউ যদি চায় যে তার জন্য কেই অপেক্ষা করে থাক এটা হাদিসে নিষেধ আছে..সঠিক মনে করতে পারতেছি না হাদিস টা।ঐই হাদিসটা জানালে উপকৃত হতাম।
by (590,550 points)
আপনি পূর্ণ হাদিসটি বলবেন। 

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
edited by
ওয়া আলাইকুম আসসালাম।
মুহতারাম
আপনার প্রশ্ন সংক্ষিপ্ত ও অসম্পূর্ণ।
বিস্তারিত ব্যাখা সহকারে বললে জবাবের সকল দিক একিই জবাবে একত্রিত করা সম্ভব হত।


হাদিস কি, কাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি এবং কোন সাহাবি কত হাদিস বর্ণনা করেছেন, প্রধান প্রধান হাদিসগ্রন্থ গুলো কি ?
হাদিস (আরবিতে الحديث) হলো মূলত ইসলাম ধর্মের শেষ বাণীবাহক হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাণী ও জীবনাচরণ। হাদিসের উপদেশ মুসলমানদের জীবনাচরণ ও ব্যবহারবিধির অন্যতম পথনির্দেশ। কুরআন ইসলামের মৌলিক গ্রন্থ এবং হাদিসকে অনেক সময় তার ব্যাখ্যা হিসেবেও অভিহিত করা হয়।
আল্লামা হাফেজ সাখাবী (রহ.) বলেন-
والحديث لغة ضد القد يم واصطلا حامااضيف الى النبى ﷺ قولا له اوفعلا له اوتقرير اوصفة حتى الحركات والسكنات فى اليقظة والمنام -
অর্থ : আভিধানিক অর্থে হাদীস শব্দটি কাদীম তথা অবিনশ্বরের বিপরীত আর পরিভাষায় বলা হয় রাসূলুাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিকে সম্বন্ধযুক্ত। চাই তার বক্তব্য হোক বা কর্ম বা অনুমোদন অথবা গুণ এমন কি ঘুমন্ত অবস্থায় বা জাগ্রত অবস্থায় তাঁর গতি ও স্থির সবই হাদীস।
বুখারী শরীফের বিশিষ্ট ব্যাখ্যাগ্রন্থ عمدة القارى এর মধ্যে হাদীস সম্বন্ধে রয়েছে:
علم الحديث هو علم يعرف به اقوال النبى ﷺ وافعاله واخواله –
অর্থ : ইলমে হাদীস এমন বিশেষ জ্ঞান যার সাহায্যে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা, কাজ ও অবস্থা জানতে পারা যায়। আর ফিক্হবিদদের নিকট হাদীস হল:
اقوال رسول الله ﷺ وافعاله –
অর্থ : হাদীস হলো আল্লাহর রাসূলের কথা ও কাজসমূহ।
বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও আলিয়া মাদ্রাসার সাবেক হেড মাওলানা মুফতী সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ আমীমুল ইহসান বারকাতী (রহ.) এর মতে, হাদীস (حديث) এমন একটি বিষয় যা রাসূলুাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী, কর্ম ও নীরবতা এবং সাহাবায়ে কেরাম, তাবিঈনদের কথা, কর্ম ও মৌন সম্মতিকে বুঝায়।[১]:
হাদীস সংরক্ষণ ও বর্ণনা করার ফযীলত
হাদীস সংরক্ষণ করা বর্ণনা করা অত্যন্ত ফযীলতময়। কারণ এর মাধ্যমে প্রিয়নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র কালামের হেফাযত করা হয়। আর এরকম ব্যক্তির ব্যাপারে প্রিয়নবী বলেছেন:-
نضرالله امرأسمع مقالتى فوعاهاواداها كماسمع فرب حامل فقه غير فقيه ورب حامل فقه الى من هوافقه منه –
অর্থ : আল্লাহ পাক সেই ব্যক্তিকে সতেজ, ও সমুজ্জ্বল রাখুন, যে আমার কথাগুলো শুনেছে, সংরক্ষণ করেছে এবং অপরজনের নিকট তা পৌঁছে দিয়েছে। (আবু দাউদ)
এই হাদীস আমাদের নিকট তুলে ধরে হাদীস বর্ণনা করার গৌরব ও সম্মান। এজন্যে এই হাদীসের ব্যাখ্যায় কোন কোন মুহাদ্দিস বলেছেন, যে ব্যক্তি মূলত অর্থেই হাদীস সন্ধানী হয় তার চেহারা সজীব বা নূরানী হয়ে ফুটে উঠবে।
শুধু ফযীলত নয়, আল্লাহর রাসূল দোআ করেছেন হাদীস বর্ণনাকারীদের জন্য এবং তাদেরকে নিজের উত্তরসূরী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে বলেছেন:
اللهم ارهم خلفائى قالو يارسوالله ومن خلفائك قال الذين يرؤون الاحاديث ويعلمونـها الناس –
অর্থ : হে আল্লাহ, আমার উত্তরসূরীদের প্রতি রহম কর“ন। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলুাল্লাহ! আপনার উত্তরসূরী কারা? তিনি বলেন, তারাই যারা আমার হাদীস বর্ণনা করে ও মানুষের নিকট শিক্ষা দেয়। হাদীস বর্ণনাকারীরা আরো একটি উপায়ে লাভবান হতে পারে। আল্লাহর রাসূল বলেছেন, “নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন তারাই আমার নিকটবর্তী হবে যারা অধিক হারে আমার প্রতি দরূদ ও সালাম পেশ করে।” (তিরমিযী)
এই হাদীসটি ইবনে হিব্বান ও তার হাদীসের গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন এবং বলেছেন এই হাদীস এর ফায়েজ ও বরকত লাভ করবে নিশ্চিতভাবে মুহাদ্দিসানে কেরাম ও হাদীসের শায়খগণ। কারণ তারাই তো অধিক হারে হাদীস পড়ে, লিখে। যতবার হাদীস লিখবে বা পড়বে ততবার তিনি প্রিয়নবীর প্রতি দরূদ সালাম পড়বেন ও লিখবেন। এর ফলে রোজ কিয়ামতে সহজেই তারা প্রিয়নবীর নিকটবর্তী হতে পারবেন। [২]:
কিতাবুস সিত্তা
কিতাবুস কথাটি কিতাব كتاب থেকে আগত, যার অর্থ বই। আর সিত্তা হচ্ছে ৬টি। ইসলামী পরিভাষায় হাদীসের ছয়খানা অন্যতম হাদীসগ্রন্থকে একত্রে কিতাবুস সিত্তাহ বলে।
কিতাবুস সিত্তা গ্রন্থাবলী ও এর সংকলকদের নাম ক্রমিক নং গ্রন্থের নাম সংকলকের নাম জন্ম ওফাত জীবন কাল হাদীস সংখ্যার বরননাঃ
১ ) সহীহ বুখারী মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল ইবনে ইবরাহীম ইবনে মুগীরা ১৯৪ হিজরী ২৫৬ হিজরী ৬২ বছর ৭৩৯৭টি
২ )সহীহ মুসলিম মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ আল কুশায়রী আল নিশাপুরী ২০৪ হিজরীতে নিশাপুরে ২৬১ হিজরী ৫৭ বছর ৪০০০টি
৩ )জামে আত তিরমিযী আবু ঈসা মুহাম্মদ ইবনে ইসা ইবনে আওরাতা আত-তিরমিযী ২০৯ হিজরীতে খোরাসানের তিরমিযী শহরে ২৭৯ হিজরী ৭০ বছর ৩৮১২টি
৪ ) সুনানে আবু দাউদ আবু দাউদ সুলায়মান ইবনে আশআশ ইবনে ইসহাক ২০২ হিজরীতে সীস্তান নামক স্থানে ২৭৫ হিজরী ৭৩ বছর ৪৮০০টি
৫ ) সুনানে নাসায়ী ইমাম আবু আবদুর রহমান আহমদ ইবনে শুআইব ইবনে আলী আল খোরাসানী আন-নাসায়ী ২১৫ হিজরী নাসা শহরে ৩০৩ হিজরী ৮৮ বছর ৫৭৬১ টি
৬ ) সুনানে ইবনে মাযাহ আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইয়ায (সংগৃহিত)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...