আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
75 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (28 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।

হাজবেন্ড ওয়াইফকে ফোনে টেক্সটের মাধ্যমে তিন তালাক বলেছে। হাজবেন্ড প্রবাসী এবং একবছর আগে দেশে এসেছিলেন, তাই উনাদের সরাসরি দেখা এক বছরেরও বেশি সময় আগে হয়েছিলো।

★এখন হাজবেন্ডের এই ফোনে মেসেজের মাধ্যমে তালাকটা কি সহীহ হয়েছে? নাকি মুখে বলতে হবে বা সাক্ষী লাগবে?

★আর এইভাবে তালাক সহীহ হলে, এইখানে মেয়েটার ইদ্দতের নিয়মটা কেমন হবে ?

1 Answer

0 votes
by (63,440 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

মোবাইলে লিখিত কিংবা মৌখিক তালাক প্রদান করলেও তালাক পতিত হয়ে যাবে। হাদিসে এসেছে,

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ، وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: النِّكَاحُ، وَالطَّلَاقُ، وَالرَّجْعَةُ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ তিনটি এমন কাজ আছে, যার জন্য চেষ্টা করা দরকার। যথাঃ বিবাহ, তালাক এবং পরিত্যক্ত স্ত্রীকে পুনঃগ্রহণ সম্পর্কে। (অর্থাৎ হাসি-ঠাট্টাচ্ছলে এরূপ কোনো করা যায় না।)। [তিরমিযী : হাদিস-1184]

অনুরূপভাবে মুখে দিলে যেমনিভাবে তালাক হয় তেমনিভাবে তালাক লিখে পাঠালেও তালাক পতিত হয়। ফকিহগণ বলেন,

إن الكتابة يقع بها الطلاق، ولو كان الكاتب قادرا على النطق، فكما أن للزوج أن يطلق زوجته باللفظ، فله أن يكتب إليها الطلاق.

নিশ্চয় চিঠি (ম্যাসেজ) দ্বারাও তালাক পতিত হয়। যদিও লেখক বলতে সক্ষম হয়। সুতরাং যেমনিভাবে স্বামী মুখে তালাক দিতে পারে, তেমনিভাবে লিখিতভাবেও দিতে পারে।  (ফিকহুস সুন্নাহ ৩/১৬৫)

সুতরাং উক্ত মহিলার উপর তিন তালাক পতিত হয়ে গেছে। এখন উক্ত মহিলা তার উক্ত স্বামীর সাথে ঘরসংসার করা আর বৈধ হবে না। হ্যাঁ, ইদ্দত শেষে যদি উক্ত মহিলার অন্যত্র বিয়ে হয়। সেখান থেকে কোনো কারণে তালাকপ্রাপ্তা হয় বা তার স্বামীর মারা যায় তাহলে ইদ্দত পালন শেষে তাকে উক্ত স্বামী দ্বিতীয়বার বিয়ে করতে পারবেন। এছাড়া আর কোন গত্যান্তর নেই। (কিতাবুন নাওয়াজেল-৯/৫২১-৫২৩)। আল্লাহ তাআলা বলেন,

 

فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ

তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। (সূরা বাকারা ২৩০)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তালাক উচ্চারণ বা ম্যাসেজ করার দ্বারাই স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয়ে যায়।এজন্য তালাক শব্দটি স্ত্রীর নিজে শোনা যেমন জরুরী নয়, তেমনি সংবাদ স্ত্রীর কাছে পৌছানোও জরুরী নয়। এমনিতেই তালাক পতিত হয়ে যায়। এমনকি তালাক পতিত হওয়ার জন্য সাক্ষী থাকাও জরুরী নয়। বাকি স্ত্রীকে জানিয়ে দেয়া জরুরী যেন স্ত্রী ইদ্দত পালন করে স্বাধীন হয়ে যেতে পারে।

তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হলেই ইদ্দত শেষ হয়ে যাবে। তিনমাসের বেশি সময় অপেক্ষার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই। ইদ্দত শেষে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে কোন সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...