بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
মহিলাদের কন্ঠস্বর পর্দার
অন্তর্ভুক্ত।
وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ
অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের
অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}
বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী
রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা
করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী
১৪/১৪৬)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ হলেন সকল মুমিনের মা। অথচ তাঁদের সাথেই লেনদেন বা কথা-বার্তা
বলতে হলে পর্দার আড়াল থেকে করতে বলা হয়েছে। তাহলে অন্যান্য সাধারণ বেগানা নারীদের ক্ষেত্রে
হুকুমটি কত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত তা তো সহজেই অনুমেয়।
নন মাহরামের সাথে বিশেষ জরুরত
ছাড়া কথা বলা জায়েয নেই। তবে যদি একান্ত কোন প্রয়োজনে কথা বলতে হয় তাহলে কন্ঠের কোমলতা
পরিহার করে এমন ভাবে কথা বলবে যেন, তার প্রতি সে আকৃষ্ট না হয়। এবং যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই
বলবে তার অতিরিক্ত বলবে না।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ
করেনঃ
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা
অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী
ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে
যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা
বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}
কুরআনে কারীমে অপর আয়াতে
ইরশাদ হয়েছে,
إِنَّ السَّمْعَ وَالبَصَرَ وَالفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا.
...নিশ্চয়
কান, চোখ,
হৃদয় এর প্রতিটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা
করা হবে। সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ৩৬
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ
থেকে বর্ণিত।
فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন,
চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত।
কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল,
[গায়রে মাহরামের সাথে
সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল,
[খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর
চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা
পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}
গ্রহনযোগ্য মতানুসারে
যেহেতু মহিলাদের কন্ঠও সতরের অন্তর্ভুক্ত। গায়রে মাহরাম নারী নাশিদ গেলেও তাহা
শোনা জায়েজ হবেনা।
বিস্তারিত জানুনঃ https://www.ifatwa.info/1058
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
কোন পুরুষের জন্য গায়রে
মাহরাম নারীর নসিহা মূলক video শোনা ও তাদের face দেখা জায়েজ হবেনা। অডিও ভিডিও কোনোটাই জায়েজ হবেনা। ইসলামের দৃষ্টিতে মিউজিক
শোনা এবং পর নারীর দিকে দৃষ্টিপাত করা হারাম। সুতরাং টেলিভিশন নিউজ দেখার সময় যদি
মিউজিক আসে অথবা পর্দাহীন নারী খবর উপস্থাপন করে তাহলে মিউজিক শোনা বা সে দিকে
দৃষ্টিপাত করা অবশ্যই হারাম। তার বিকল্প হিসেবে খবরের কাগজ পড়া যেতে পারে।
আর বাস্তব কথা হল,
একান্ত জরুরি না হলে এ সব নিউজ না
শোনাই ভালো। কারণ অধিকাংশ টিভি চ্যানেল হলুদ সাংবাদিকতায় লিপ্ত এবং মিথ্যা ও বিকৃত
সংবাদ এবং
ইসলাম বিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে দিচ্ছে!