ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
রোযার ফিদয়া
যদি কোনো শরয়ী উজরে কারো ফরয রোযা ক্বাযা হয়ে যায়,তাহলে তার হুকুম হল, সে পরবর্তীতে তার ক্বাযা আদায় করে নেবে।
ক্বাযার পূর্বেই যদি সে মারা যায়,অথবা যদি বার্ধক্যর দরুণ রোযা রাখা তার জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে দাড়ায়,
তাহলে এক্ষেত্রে বিধান হল সে রোযার পরিবর্তে ফিদয়া আদায় করবে।
যেমন অাল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﺃَﻳَّﺎﻣًﺎ ﻣَّﻌْﺪُﻭﺩَﺍﺕٍ ۚ ﻓَﻤَﻦ ﻛَﺎﻥَ ﻣِﻨﻜُﻢ ﻣَّﺮِﻳﻀًﺎ ﺃَﻭْ ﻋَﻠَﻰٰ ﺳَﻔَﺮٍ ﻓَﻌِﺪَّﺓٌ ﻣِّﻦْ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﺃُﺧَﺮَ ۚ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﻄِﻴﻘُﻮﻧَﻪُ ﻓِﺪْﻳَﺔٌ ﻃَﻌَﺎﻡُ ﻣِﺴْﻜِﻴﻦٍ ۖ ﻓَﻤَﻦ ﺗَﻄَﻮَّﻉَ ﺧَﻴْﺮًﺍ ﻓَﻬُﻮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَّﻪُ ۚ ﻭَﺃَﻥ ﺗَﺼُﻮﻣُﻮﺍ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَّﻜُﻢْ ۖ ﺇِﻥ ﻛُﻨﺘُﻢْ ﺗَﻌْﻠَﻤُﻮﻥَ ]] ٢: ١٨٤ ]
গণনার কয়েকটি দিনের জন্য অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে, অসুখ থাকবে অথবা সফরে থাকবে, তার পক্ষে অন্য সময়ে সে রোজা পূরণ করে নিতে হবে। আর এটি যাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয়, তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্য দান করবে। যে ব্যক্তি খুশীর সাথে সৎকর্ম করে, তা তার জন্য কল্যাণ কর হয়। আর যদি রোজা রাখ, তবে তোমাদের জন্যে বিশেষ কল্যাণকর, যদি তোমরা তা বুঝতে পার। [সূরা বাকারা-১৮৩-১৮৪]
রোযার ফিদয়া কোনো ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় দিতে পারবে।কিন্তু সালাতের ফিদয়া জীবদ্দশায় দেয়া যাবে না।বরং তার মৃত্যুর পরই দিতে হবে।কেননা রোযার তুলনায় সালাত অত্যন্ত সহজ। বিধায় মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত সালাত আদায়ের চেষ্টা করবে।মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ থেকে তার সালাতের ফিদয়া আদায় করা হবে।এবং রোযার ও।
সাওম ও সালাতের ফিদয়ার পরিমাণঃ
( ﻭَﻟَﻮْ ﻣَﺎﺕَ ﻭَﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺻَﻠَﻮَﺍﺕٌ ﻓَﺎﺋِﺘَﺔٌ ﻭَﺃَﻭْﺻَﻰ ﺑِﺎﻟْﻜَﻔَّﺎﺭَﺓِ ﻳُﻌْﻄَﻰ ﻟِﻜُﻞِّ ﺻَﻠَﺎﺓٍ ﻧِﺼْﻒَ ﺻَﺎﻉٍ ﻣِﻦْ ﺑُﺮٍّ ) ﻛَﺎﻟْﻔِﻄْﺮَﺓِ ( ﻭَﻛَﺬَﺍ ﺣُﻜْﻢُ ﺍﻟْﻮِﺗْﺮِ ) ﻭَﺍﻟﺼَّﻮْﻡِ، ﻭَﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻳُﻌْﻄِﻲ ( ﻣِﻦْ ﺛُﻠُﺚِ ﻣَﺎﻟِﻪِ ) ( ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ - 2/72
যদি কেউ মারা যায়,এবং তার উপর অনেক সালাত ক্বাযা থাকে, অথবা যদি মৃত ব্যক্তি সালাতের ফিদয়ার ওসিয়ত করে যায়,তাহলে প্রত্যেক সালাতের বিপরীতে এক ফিতরা সমপরিমাণ ফিদয়া আদায় করতে হবে।পাচঁ ওয়াক্ত সালাতের সাথে বিতিরের সালাতের ও ঐ পরিমাণ( তথা এক ফিতরা সমপরিমাণ) আদায় করতে হবে।এবং ছুটে যাওয়া প্রত্যেকটি সাওমের বিধান ও একিই।ফিদয়া- মৃত ব্যক্তির এক তৃতীয়াংশ সম্পত্তি থেকে-ই আদায় করা হবে।(আদ্দুর্রুল মুখতার-২/৭২,ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-১০/১৭৬)
অপারগ ব্যক্তির নামাযের বিধানঃ
اذا مات المريض ولم يقدر على الصلاة بالإيماء لا يلزمه الإيصاء بها-
(مراقى الفلاح بإمداد الفتاح علي نور الإيضاح و نجاة الأرواح ;١/١٦٩)
যদি অসুস্থ ব্যক্তি মারা যায়, এমতাবস্থায় যে,সে ইশারায় ও নামায পড়তে অক্ষম।তাহলে তার উপর উক্ত নামায ফরয হবে না।(উক্ত নামাযের ক্বাযা ফিদয়া কিছুি দিতে হবে না)(মারাক্বিল ফালাহ-১/১৬৯)
একটি সংশয় নিরসনঃ
ورد النص في الصوم بإسقاطه بالفدية، والحنفية يرون أن الصلاة كالصوم استحسانا لكونها أهم منه. وغيرهم يرى ألا كفارة للصلاة إلا قضاؤها،................................ الخ........... والحنفية مع قولهم بذلك يرجون القبول والشفاعة.
(مراقى الفلاح بإمداد الفتاح علي نور الإيضاح و نجاة الأرواح ;١/١٦٩)
রোযা সম্পর্কে কুরআনের ঘোষনা-
অপরাগ অবস্থায় ফিদয়া দিলে রোযার ফরয হুকুম আদায় হয়ে যাবে।হানাফি উলামায়ে কেরামগণ মনে(ক্বিয়াস) করেন,নামাযের ফিদয়ার আলোচনা কুরআন-হাদীসে যদিও আসেনি।তথাপি ফিদয়ার ক্ষেত্রে নামায রোযার মতই হবে।যেহেতু নামায ইসলামের অধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান এমনকি রোযার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।অন্যান্য উলামায়ে কেরাম মনে করেন,নামাযের কোনো ফিদয়া নাই। নামাযকে একমাত্র ক্বাযা মাধ্যমেই সমাপ্ত করতে হবে।
কিন্তু হানাফি ফুকাহায়ে কেরাম আশা করেন, হয়তো ফিদয়ার আল্লাহ কবুল করবেন।এবং উক্ত ব্যক্তির জন্য রসূলের শাফায়ত নসিব হবে।(হানাফি মাযহাব মতে নামাযের ফিদয়া আশার উপর)(মারাক্বিল ফালাহ-১/১৬৯)আল্লাহ-ই সর্বজ্ঞ।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
আপনার বাকা যদি ইশারা করে নামাজ পড়তেও অক্ষম থাকেন।এবং স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার ধরুণ অবশ্যই অক্ষম।এমতাবস্থার নামায রোযার ফিদয়া ওয়াজিব হবে না।হ্যা পূর্ববর্তী জীবনের নামায-রোযার ফিদয়া আদায় করতে পারবেন।
কতদিনের নামায রোযার ফিদয়া দিতে হবে?
সঠিক জানা না থাকলে ধারণার উপর বিত্তি করে ফিদয়া আদায় করে নিবেন।
একটা ফিদয়া নামাযে হোক বা রোযার হোক, একটা ফিতরা সমপরিমাণ। তথা ৩কেজি ৬৫০গ্রাম আটার মূল্য যা বর্তমান হিসেবে ১১৫ টাকা হয়।সেটা দিয়ে দিবেন।