আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
138 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (61 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
আমার সফরের মাসআলা মোটামুটি জানা আছে তবে একটি বিষয়ে আমি কনফিউজড তাই এর জন্য ফাতওয়া প্রয়োজন।  আমি থাকি ঢাকায়, আমার গ্রামের বাড়ি সফর সমান দূরত্ব।  আমার শশুর বাড়ি আমার গ্রামের এক গ্রাম পড়ে। অর্থাৎ সেটিও সফর সমান দূরে। যেহেতু আমার গ্রাম আমার জন্য ওয়াতনে আসলি তাই সেখানে গেলে আমি মুকিম থাকবো। কিন্তু আমি যদি আমার বাড়িতে না গিয়ে আমার শশুর বাড়ি যাই ওয়াতনে ইকামত থেকে এবং ওখানে যতক্ষণ অবস্থান করবো ততক্ষণ কি মুসাফির হব? আর যখন ওখান থেকে আমার বাড়িতে যাবো তখন তো আবার মুকিম হয়ে যাবো? আর পরে যখন আবার আমার বাড়ি থেকে আমার শশুর বাড়ি যাবো তখন তো মুকিম অবস্থাতেই থাকবো যেহেতু আমি মুকিম হয়ে যাওয়ার পর সফর সমান দূরত্ব অতিক্রম করিনি। যদি একটু ক্লিয়ার করতেন। আশা করি আমি বিস্তারিত বুঝাতে পেরেছি

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/107 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, মানুষ কখন মুসাফির হয় আবার কখন মুক্বিম হয় সেটা বুঝার জন্য প্রথমেই আমাদেরকে কিছু ফেকহী মূলনীতি বুঝতে হবে,,,,,,

والوطن الأصلي هو الذي ولد فيه" الإنسان "أو تزوج" فيه "أو لم يتزوج" ولم يولد فيه "و" لكن "قصد التعيش لا الارتحال عنه ووطن الإقامة موضع" صالح لها على ما قدمناه وقد "نوى الإقامة فيه نصف شهر فما فوقه"

ওয়াতানে আসলীঃ ঐ স্থান যেখানে মানুষ জন্মগ্রহণ করেছে,অথবা বিয়ে করেছে(সাথে বসবাসেরও নিয়ত করেছে)অথবা জন্মগ্রহণ ও করেনি এবং বিয়ে ও করেনি তবে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের দৃঢ়তর  ইচ্ছা পোষণ করেছে,সেখান থেকে সে অন্য কোথা যাবে না।এমন স্থানকে ওয়াতানে আসলী বলে।

ওয়াতানে ইক্বামাহঃ যেখানে অস্থায়ীভাবে ১৫দিনের বেশী সময় অবস্থানের নিয়ত করেছে।সে স্থানকে ওয়াতানে ইক্বামাহ বলে।(মারাক্বিল ফালাহ-১/১৬৫)

ويبطل الوطن الأصلي بالوطن الأصلي إذا انتقل عن الأول بأهله وأما إذا لم ينتقل بأهله ولكنه استحدث أهلا ببلدة أخرى فلا يبطل وطنه الأول ويتم فيهما............

......ولو انتقل بأهله ومتاعه إلى بلد وبقي له دور وعقار في الأول قيل: بقي الأول وطنا له وإليه أشار محمد - رحمه الله تعالى - في الكتاب،

ওয়াতানে আসলী, ভিন্ন ওয়াতানে আসলী দ্বারা বাতিল হয়ে যায়।(তথা পরবর্তীতে কোনো স্থানকে ওয়াতানে আসলী বানালে পূর্ববর্তী ওয়াতানে আসলী বাতিল হয়ে যায়)তবে যদি কেউ পূর্ববর্তী বাসস্থান থেকে পরিবারবর্গ কে না সরায়,এবং ভিন্ন শহরে নতুন কোনো পরিবারবর্গকে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য নির্ধারণ করে(অথবা দ্বিতীয় বাসস্থানে বর্তমান অবস্থানস্থল থাকলেও প্রথমটিকে বিক্রি করে দেয়া হয়নি,বরং মাঝেমধ্যে এখানে আসা হয়)তবে প্রথম বাসস্থান বাতিল হবে না।এ সময় উভয় বাসস্থান-ই ওয়াতানে আসলী হিসেবে গণ্য হবে।এবং উক্ত দুই স্থানেই পূর্ণ নামায পড়া হবে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া;১/১৪২) আরো রয়েছে- (ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়্যাহ-৫/১৭৬)

**বিয়ের পর মেয়েরা সাধারণত স্বামীর বাড়িতেই স্থায়ীভাবে বসবাস ও সংসার করা শুরু করেন। তখন স্বামীর বাড়িই তাদের ওয়াতনে আসলী তথা মূল বাড়ি হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে, তাই কোনও মেয়ে বিয়ের পর বাবা বাড়িতে ১৫ দিনের কম সময়ের জন্য বেড়াতে গেলে এবং স্বামীর বাড়ি থেকে বাবারবাড়ি ৪৮ মাইলের দূরত্বে হলে তাকে কসর করতে হবে।

ঠিক একিভাবে কোনও পুরুষ নিজের বাড়ি থেকে ১৫ দিনের কম সময়ের জন্য শশুরবাড়ি বেড়াতে গেলে এবং শশুরবাড়ি ৪৮ মাইলের দূরত্বে হলে তাকে কসর করতে হবে।

আর যদি মেয়েদের বাবার বাড়ি বা ছেলেদের শশুর বাড়ি শরীয়ত নির্ধারিত ৪৮ মাইলের দূরত্বের কমে হয় তাহলে তাদের কসর না পড়ে পুরো নামাজ আদায় করতে হবে। (ফাতাওয়া দারুল উলুম জাকারিয়া-২/৫১৪, ফাতাওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ-৪/৪৮৩, আপকি মাসায়িল আওর উনকা হল-২/৩৮৩)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

ঢাকা থেকে সফরের দূরত্বে আপনি যখন রওয়ানা হবেন পথিমধ্যে কসর করবেন, কিন্তু যখনই আপনি নিজ এলাকায় প্রবেশ করবেন তখন থেকেই মুকীম হিসেবে পরিগণিত হবেন। কারণ, আপনার শশুরবাড়ী ও নিজ বাড়ী দুটি একই এলাকার অন্তর্ভূক্ত। বিধায় আপনি উভয় জায়গায় কসরের নামায নয়, বরং পূর্ণাঙ্গ নামাযই মুকীম হিসেবে আদায় করতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 219 views
0 votes
1 answer 182 views
...