بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
মহান আল্লাহ
তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
يَا
أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ
الظَّنِّ إِثْمٌ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ
أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ
وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ [٤٩:١٢]
মুমিনগণ,
তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক।
নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে
নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে?
বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে
ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। {সূরা হুজুরাত-১২}
গীবতের গুনাহ
খুবই মারাত্মক, তাই আমাদের জানতে হবে যে গীবত কি?
عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ:
«أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ؟» قَالُوا: اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ:
«ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ» قِيلَ أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا
أَقُولُ؟ قَالَ: «إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ، فَقَدِ اغْتَبْتَهُ، وَإِنْ لَمْ
يَكُنْ فِيهِ فَقَدْ بَهَتَّهُ»
হযরত আবু হুরায়রা
রাঃ থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম বলেছেনঃ তোমরা কি জান,
গীবত কি?
তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই
ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ গীবত হল তোমার ভাইয়ের সম্পর্কে এমন কিছু আলোচনা করা,
যা সে অপছন্দ করে। প্রশ্ন করা হলঃ
আমি যা বলেছি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থেকে থাকে, তাহলে আপনি কি বলেন?
তিনি বললেনঃ তুমি তার সম্পর্কে যা
বলেছ তা যদি তার মধ্যে থাকে, তাহলেই তুমি তার গীবত করলে। আর যদি তা তার মধ্যে না থাকে,
তাহলে তো তুমি তার প্রতি অপবাদ আরোপ
করলে।
{সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৫৮৯, ৭০, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-১১৪৫৪, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৭৫৮, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬২৯৩, মুজামে ইবনে আসাকীর, হাদীস নং-১৪১৭, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২১১৬৩}
গীবত করলে
বান্দার হক্ব নষ্ট হয়। আর কেউ বান্দার হক্ব নষ্ট করলে আল্লাহ তা'আলা ততক্ষণ পর্যন্ত ক্ষমা করবেন না যতক্ষণ না উক্ত বান্দা ক্ষমা করে দিচ্ছে। কিন্তু যদি হক্ব নষ্ট
কারী ঐ বান্দা পরবর্তীতে খালিছ নিয়তে তাওবাহ
করে ফেলে এবং আল্লাহর দয়া হয়ে যায়। তাহলে আল্লাহ তা'আলা সে বান্দা কে খুশী করে দিবেন যার হক্ব দুনিয়াতে
নষ্ট হয়েছিলো। এবং আল্লাহ তা'আলা উক্ত বান্দাকে সেই হক্ব নষ্টের গোনাহ থেকে ক্ষমা করে দিবেন। তখন আর সেই বান্দা
আল্লাহ কাছে বিচার দায়ের করবে না।
এখন কথা হলো
খালিছ নিয়তে বিশুদ্ধ তাওবাহ করার পদ্ধতি বা সূরত কি? তাওবাহ কবুল হওয়ার শর্ত হলো,
আল্লাহর হক্ব সম্ভলিত বিষয় হলে আল্লাহর
নিকট অনুনয় বিনয় করে আহাজারি করা, মিনতি করা।
আর বান্দার
হক্ব হলে, সেই হক্ব কে আদায় করে দেয়া বা তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেয়া। সেজন্য এর পিছনে সাধ্যমত
আপ্রাণ চেষ্টা করা। যদি নিজ সাধ্যমত আপ্রাণ চেষ্টা করার পরও উক্ত বান্দার হক্বকে আদায়
করা সম্ভব না হয়,বা ক্ষমা না পাওয়া যায়,তাবে আল্লাহর নিকট নিজ সেই চেষ্টার কথা তুলে ধরে সমাধান চাওয়া।এবং ভবিষ্যতে কোনো
বান্দার হক্ব নষ্ট না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া।
নিয়ত বিশুদ্ধ থাকলে অবশ্যই আল্লাহ
তাওবাহকে কবুল করে নেবেন এবং উক্ত গোনাহ থেকে ক্ষমা করে দিবেন। গীবতের মাধ্যমে কারো হক্ব
নষ্ট করলে এভাবেও তার নিকটে গিয়ে ক্ষমা চাইতে পারেন যে,
শরঈ দিবস যেমন ঈদ, আশুরা, ইত্যাদিতে তার নিকট গিয়ে বলা। প্রিয় ভাই/বোন!
আমরা এক সাথে
চলাফেরা করেছি।ইসলাম সম্পর্কে পুরোপুরি জ্ঞান না থাকায় আমাদের চলাফেরায় একজন অন্যজনের
কত হক্বই না নষ্ট করেছি। আপনি না করলেও আমি অবশ্যই করেছি। দয়া করে আজকের এই পবিত্র
দিনে আমাকে যাবতীয় হক্ব নষ্ট করার গোনাহ থেকে ক্ষমা করে দিন।
এভাবে ক্ষমা
করিয়ে নিবেন। হ্যা ভবিষ্যতে আর এরকম কাজ কখনো করবেন না। তবেই আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/641
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনি ভাই/বোন!
১. যাদের গীবত করা হয়েছে,
যদি ক্ষমা চাইতে যাওয়া হয় তা ব্যক্ত
করে যে গীবত করেছি আপনার, তবে সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। তাই সরাসরি গীবতের কথা না বলে বরং উপরে লিখিত পদ্ধতিতে শুধু ক্ষমা চাইতে হবে।
২. সাবালক
হওয়ার পর থেকে সকল ফরজ ও বিতির নামাজ এবং ফরজ রোজা কাযা আদায় করতে হবে। নফল বা সুন্নাত নামাজরে
কোন কাযা আদায় করতে হবে না। কা'যা নামায আদায় না করে শুধুমাত্র তাওবাহ ইস্তেগফার
যথেষ্ট হবে না। বরং অবশ্যই আদায় করতে হবে এবং সাথে সাথে তাওবাহ ইস্তেগফার জারী রাখতে
হবে।
কখন থেকে এবং
কোন পদ্ধতিতে কা'যা নামায-কে আদায় করতে হবে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1609
যেমন:
ফজরের নামায সর্বমোট ১০০ ওয়াক্তের
কাযা হয়েছে। তখন কাযা নামায আদায় করার সময় এভাবে নিয়ত করবে যে,
আমার জিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা
রয়েছে, সে অনাদায়কৃত নামায সমূহের মধ্য থেকে প্রথম ফজরের নামাযকে এখন কাযা আদায় করছি”
এমন নিয়তে নামায আদায় করবে। এভাবে হিসেবে করে পড়তে থাকবে। প্রতিবার অনাদায়কৃত প্রথম
ফজরের নামায বলার দ্বারা তার যিম্মায় যতগুলো নামায বাকি ছিলো,
সেগুলোর প্রথম নামাযের নিয়ত হচ্ছে,
তাই এক্ষেত্রে নিয়তটি নির্দিষ্ট নামাযেরই
হচ্ছে। ঠিক উল্টোভাবেও করা যায়। অর্থাৎ যত নামায কাযা আছে তার সর্বশেষ অনাদায়কৃত কাযার
নিয়ত করছি। এভাবেও পূর্বোক্ত পদ্ধতিতে বাকি নামাযের কাযা আদায় করা যাবে। (রদ্দুল মুহতার-২/৫৩৮)
এ ধারাবাহিকতায়
বাকি নামায সমূহের ক্বাযা আদায় করবে। যোহর, আছর, মাগরিব, ইশা এবং সাথে বিতিরের নামাযও এভাবেই আদায় করে নিবে।
বিতিরের নামাযের ক্বাযা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/629