আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
135 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (50 points)
পরিচিত এক বোন যার বয়স ১৬ বছর সে অনলাইনে একজনের সাথে হারাম রিলেশনে ছিল। সেই ছেলে বিয়ের প্রস্তাব আনে মেয়ের ফ্যামিলির কাছে তার আগে তারা দুইজন বাইরে দেখা করে দীর্ঘ সময় ধরে একসাথে বাইরেই কাটায়। মেয়ে বাসায় মিথ্যা বলে বের হয়ে যায়।

সেই ছেলের প্রত্যেকটা পদক্ষেপই হারাম। সেই হারামকে হালাল করার চেষ্টা চালাচ্ছে এই বলে যে আয়িশা (রা) কম বয়সে বিয়ে করেছেন। অথচ তারা সম্পূর্ণ হারামে ডুবে আছে। মেয়েকে বিভিন্ন গিফট দিয়েছে তার মধ্যে ফোন আছে, আংটি দিয়েছে যেটা আবার মেয়েটার আঙ্গুলেই আছে,হারামের প্রদর্শন আরকি।

এখন কি করা উচিত তার পরিবারের?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


ইসলামে বিবাহ পূর্ব প্রেম স্পষ্ট  হারাম।

হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন-

اَلْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظْرُ وَالْاُذُنَانِ زِنَاهُمَا الْاِسْتِمَاعُ وَاللِّسَانُ زِنَاهُمَا الْككَلَامُ وَالْيَدُ زِنَاهُمَا الْبَطْشُ وَالرِّجْلُ زِنَاهُمَا الخُطَا وَالْقَلْبُ يَهْوِىْ وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَالِكَ الْفَرْجُ اَوْ يُكَذِّبُه

“দুই চোখের ব্যভিচার হল হারাম দৃষ্টি দেয়াদুই কানের ব্যভিচার হল পরনারীর কণ্ঠস্বর শোনাযবানের ব্যভিচার হল অশোভন উক্তিহাতের ব্যভিচার হল পরনারী স্পর্শ করাপায়ের ব্যভিচার হল গুনাহর কাজের দিকে পা বাড়ানঅন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গঁ তা সত্য অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।” (মেশকাত ১/৩২)

 

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ

https://ifatwa.info/3298/

 

https://ifatwa.info/30521/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- দুনিয়ার আগুন শরীরের শুধু বাহ্যিক অঙ্গ পোড়াতে পারে। পোড়াতে পারে না তা অভ্যন্তরীণ অঙ্গ। কিন্তু জাহান্নামের আগুনের এমন পাওয়ার থাকবে যা জাহান্নামিদের শরীর পোড়ানোর পাশাপাশি তাদের হৃৎপিণ্ডও পুড়িয়ে ছাই করে ফেলবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘এটি আল্লাহর প্রজ্ব¡লিত অগ্নিযা তাদের হৃদয়কে গ্রাস করে ফেলবে।’ (সূরা হুমাজা : ৬-৭) দুনিয়ার আগুন লাল বর্ণের হয়ে থাকে। কিন্তু জাহান্নামের আগুন তীব্র উত্তপ্ত হওয়ার দরুণ কালো বর্ণের হবে।

আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘জাহান্নামের আগুন এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা লাল বর্ণ ধারণ করেছে। আবার এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা সাদা বর্ণ হয়েছে। তারপর এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা কালো বর্ণ হয়েছে। এখন তা গভীর অন্ধকার রাতের অন্ধকারের মতো কালো (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৪৩২০)। ‘জাহান্নামিরা যখন পিপাসায় ছটফট করবে তখন তাদেরকে গলিত পুঁজ পান করানো হবেযা সে এক এক ঢোক করে গিলবে’ (সূরা ইবরাহিম : ১৬-১৭)।

রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘পুঁজ যখন তার মুখের নিকটে নিয়ে আসা হবেসে তা অপছন্দ করবে। তারপর যখন আরো নিকটে নিয়ে আসা হবেতখন তার মুখমণ্ডল পুড়ে যাবে এবং মাথার চামড়া গলে পড়ে যাবে। তারপর সে যখন তা পান করবে তখন তার নাড়িভুঁড়ি গলে ছিন্নভিন্ন হয়ে মলদার দিয়ে বের হয়ে যাবে।’ (জামে তিরমিজি :২৫৮৩)

 ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিতএকদিন রাসূলুল্লাহ সা: এ আয়াত তিলাওয়াত করলেনঅর্থাৎ ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং পূর্ণ মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’ তারপর প্রিয় নবী সা: ইরশাদ করলেন, ‘যদি জাক্কুম গাছের একটা ফোঁটা এই দুনিয়ায় পড়ে তাহলে দুনিয়াবাসীর জীবনোপকরণ বিনষ্ট হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় ওইসব লোকের কেমন দুর্দশা হবে এটা যাদের খাদ্য হবে?’ (জামে তিরমিজি : ২৫৮৫)

রাসূল সা: জাহান্নামের সবচেয়ে সহজ শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তির আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ‘জাহান্নামিদের মধ্যে সবচেয়ে সহজ শাস্তি ওই ব্যক্তির হবেযাকে ফিতাসহ এক জোড়া জুতা পরিয়ে দেয়া হবে। এতে তার মগজ এমনভাবে টগবগ করবে গরম পানির পাত্র যেমন টগবগ করে। সে ধারণা করবে তার থেকে কঠিন আজাব আর কেউই ভোগ করছে না। অথচ সে হবে সবচেয়ে সহজ শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি। (সহিহ মুসলিম : ৩৬৪)

প্রিয় পাঠক! জাহান্নামের সবচেয়ে সহজ শাস্তির যদি হয় এমন পাওয়ার তাহলে কঠিন শাস্তির পাওয়ার কেমন হবেতা আমাদের ভাবতে হবে। প্রতিদিন কত গুনাহ আমরা করে যাচ্ছি অহরহ। কখনো কি ভেবে দেখেছিএর শাস্তি যদি আমাকে দেয়া হয় তাহলে কিভাবে সহ্য করবঅথচ জাহান্নামে যাওয়ার জন্য একটি কবিরা গুনাহ-ই যথেষ্ট। মহান আল্লাহ তায়ালা যদি আমাদের মাফ না করেনতাহলে আমাদের কী উপায় হবেআল্লাহ তায়ালা আমাদের জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি থেকে হিফাজত করুন।


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত মেয়ের পরিবারের জন্য উচিত হলো বিবাহ পূর্বক এই অবৈধ প্রেমের ভয়াবহতা ও উপরোক্ত জাহান্নামের শাস্তি সম্পর্কে তাকে অবগত করে বুঝিয়ে শুনিয়ে তাকে এই হারাম রাস্তা থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা।

এই বলে বুঝাতে হবে যে দেখো হারাম রিলেশন ত্যাগ করো। আল্লাহকে ভয় কর। জাহান্নামের শাস্তি খুবই কঠিন। মানুষের মৃত্যু কখন কি হয় বলা যায় না। তাই হারাম রিলেশন ত্যাগ করো। আল্লাহর কাছে তওবা করো।

ঐ ছেলের সাথে যোগাযোগের যাবতীয় পথ ও পদ্ধতি বন্ধ করে দেয়া।
মোবাইল ব্যবহার যেনো না করতে পারে,ঐ ছেলের সাথে যেনো কোনোভাবেই দেখা করতে না পারে,এর জন্য যাবতীয় যাহা যাহা করনীয়, সবই করা।

প্রয়োজনে ছেলেটির কাছে গিয়ে বুঝানো,কাজ না হলে তাকে শাসানো।

এর পরেও সমাধান না হলে দ্রুত মেয়েকে অন্যত্রে বিবাহ করে দেয়া,বা এই ছেলেটি তার মেয়ের যোগ্য হলে ও ভরনপোষণ দেয়ার সক্ষমতা রাখলে এই ছেলেটির সাথেও বিবাহ  দিতে পারে।
সেটি তার পরিবারের বিষয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 118 views
...