আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
748 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)

আমার সাথে একটা মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক আছে ১ বছরের.. আমি যখন জানতে পারলাম তখন সেই মেয়েকেও বললাম যে কোনো বেগানা নর নারীর সাথে বিয়ের আগের সম্পর্ক ইসলামএর দৃষ্টিতে হারাম।

উল্লেখ আমরা উভয়ই নামাজ কালাম ও কুরআন তিলওয়াত করি এবং নিজেদের এগুলো বিষয়ে সাহায্য করছি শুরু থেকেই.. তাই আমাদের মাঝে সম্পর্কটা গভীর হয় আরো..

সে আমার কথায় একমত প্রকাশ করলেও  আমাকে ছাড়তে রাজি না। আমি তাকে অনুরোধ করলেও সে কেঁদে দেয়। তাই আমি তাকে এমন অবস্থায় জোর করতে পারছি না... আর আমিও মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ছি।এমন অবস্থায় আমার এই সম্পর্ক নিয়ে কি করা উচিত? কিভাবে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী নিজেকে এবং মেয়েটিকে এই হারাম সম্পর্ক থেকে বের করে নিয়ে আসবো?

1 Answer

+2 votes
by (63,560 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

ইসলামে বিবাহ পূর্ব প্রেম স্পষ্ট  হারাম।

হাদীসে রাসূলুল্লাহ বলেছেন-

اَلْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظْرُ وَالْاُذُنَانِ زِنَاهُمَا الْاِسْتِمَاعُ وَاللِّسَانُ زِنَاهُمَا الْككَلَامُ وَالْيَدُ زِنَاهُمَا الْبَطْشُ وَالرِّجْلُ زِنَاهُمَا الخُطَا وَالْقَلْبُ يَهْوِىْ وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَالِكَ الْفَرْجُ اَوْ يُكَذِّبُه

“দুই চোখের ব্যভিচার হল হারাম দৃষ্টি দেয়া, দুই কানের ব্যভিচার হল পরনারীর কণ্ঠস্বর শোনা, যবানের ব্যভিচার হল অশোভন উক্তি, হাতের ব্যভিচার হল পরনারী স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার হল গুনাহর কাজের দিকে পা বাড়ান, অন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গঁ তা সত্য অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।” (মেশকাত ১/৩২)

 

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ

https://ifatwa.info/3298/

 

দুনিয়ার আগুন শরীরের শুধু বাহ্যিক অঙ্গ পোড়াতে পারে। পোড়াতে পারে না তা অভ্যন্তরীণ অঙ্গ। কিন্তু জাহান্নামের আগুনের এমন পাওয়ার থাকবে যা জাহান্নামিদের শরীর পোড়ানোর পাশাপাশি তাদের হৃৎপিণ্ডও পুড়িয়ে ছাই করে ফেলবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘এটি আল্লাহর প্রজ্ব¡লিত অগ্নি, যা তাদের হৃদয়কে গ্রাস করে ফেলবে।’ (সূরা হুমাজা : ৬-৭) দুনিয়ার আগুন লাল বর্ণের হয়ে থাকে। কিন্তু জাহান্নামের আগুন তীব্র উত্তপ্ত হওয়ার দরুণ কালো বর্ণের হবে।

আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘জাহান্নামের আগুন এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা লাল বর্ণ ধারণ করেছে। আবার এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা সাদা বর্ণ হয়েছে। তারপর এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা কালো বর্ণ হয়েছে। এখন তা গভীর অন্ধকার রাতের অন্ধকারের মতো কালো (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৪৩২০)। ‘জাহান্নামিরা যখন পিপাসায় ছটফট করবে তখন তাদেরকে গলিত পুঁজ পান করানো হবে, যা সে এক এক ঢোক করে গিলবে’ (সূরা ইবরাহিম : ১৬-১৭)।

রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘পুঁজ যখন তার মুখের নিকটে নিয়ে আসা হবে, সে তা অপছন্দ করবে। তারপর যখন আরো নিকটে নিয়ে আসা হবে, তখন তার মুখমণ্ডল পুড়ে যাবে এবং মাথার চামড়া গলে পড়ে যাবে। তারপর সে যখন তা পান করবে তখন তার নাড়িভুঁড়ি গলে ছিন্নভিন্ন হয়ে মলদার দিয়ে বের হয়ে যাবে।’ (জামে তিরমিজি :২৫৮৩)

 ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত, একদিন রাসূলুল্লাহ সা: এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন, অর্থাৎ ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং পূর্ণ মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’ তারপর প্রিয় নবী সা: ইরশাদ করলেন, ‘যদি জাক্কুম গাছের একটা ফোঁটা এই দুনিয়ায় পড়ে তাহলে দুনিয়াবাসীর জীবনোপকরণ বিনষ্ট হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় ওইসব লোকের কেমন দুর্দশা হবে এটা যাদের খাদ্য হবে?’ (জামে তিরমিজি : ২৫৮৫)

রাসূল সা: জাহান্নামের সবচেয়ে সহজ শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তির আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ‘জাহান্নামিদের মধ্যে সবচেয়ে সহজ শাস্তি ওই ব্যক্তির হবে, যাকে ফিতাসহ এক জোড়া জুতা পরিয়ে দেয়া হবে। এতে তার মগজ এমনভাবে টগবগ করবে গরম পানির পাত্র যেমন টগবগ করে। সে ধারণা করবে তার থেকে কঠিন আজাব আর কেউই ভোগ করছে না। অথচ সে হবে সবচেয়ে সহজ শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি। (সহিহ মুসলিম : ৩৬৪)

প্রিয় পাঠক! জাহান্নামের সবচেয়ে সহজ শাস্তির যদি হয় এমন পাওয়ার তাহলে কঠিন শাস্তির পাওয়ার কেমন হবে? তা আমাদের ভাবতে হবে। প্রতিদিন কত গুনাহ আমরা করে যাচ্ছি অহরহ। কখনো কি ভেবে দেখেছি, এর শাস্তি যদি আমাকে দেয়া হয় তাহলে কিভাবে সহ্য করব? অথচ জাহান্নামে যাওয়ার জন্য একটি কবিরা গুনাহ-ই যথেষ্ট। মহান আল্লাহ তায়ালা যদি আমাদের মাফ না করেন, তাহলে আমাদের কী উপায় হবে? আল্লাহ তায়ালা আমাদের জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি থেকে হিফাজত করুন।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

 

আপনি হারাম রিলেশন ত্যাগ করুন। আল্লাহকে ভয় করুন। জাহান্নামের শাস্তি খুবই কঠিন। ঐ মেয়েকেও বুঝান। একান্ত তাকে পছন্দ হলে তাকে বিয়ে করে ফেলুন। তবু হারাম রিলেশন করা যাবে না। মানুষের মৃত্যু কখন কি হয় বলা যায় না। তাই আপনি খুব দ্রুত হারাম রিলেশন ত্যাগ করুন। আল্লাহ তায়ালার কাছে তাওবা করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
আমি হারাম সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসতে চাই,কিন্তু যার সাথে সম্পর্ক ছিলো সে আমাকে নানা ভাবে থ্রেট দেয়।বাসায় কাওকে জানাতে চাই না,কারণ ছেলে টাকে আমি বিয়ে করতে রাজি নই।আমার ভুল বুঝতে পেরেছি,কিন্তু সায়াহস করে ছেলেটা কে না করতে পারছি না,সে নানা ভাবে আমাকে থ্রেট দেয়।এখন আমার করণীয় কী? তাকে নানা রকম ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছি এসব হারাম কিন্তু সে বুঝতে চায় না তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। আমি চাইছি আল্লাহর উপর পুর্ণ বিশ্বাস রেখে তাকে আর কোনো কিছু না বুঝিয়ে চুপ করে চলে আসতে।তওবা করতে,কারণ আমাদের সম্পর্কের কথা আমি জানাতে চাই না বাসায়,কারণ আমি জানি এটা ভুল ছিলো।আমার কি উচিত হবে চুপচাপ চলে আসা? তাকে আর কিছু বোঝানোর স্বার্থ আমার নেই,সরাসরি কিছু বলার সাহস নেই।আমার কি করা ঠিক হবে? 
by (63,560 points)
তাকে বুঝানোর প্রয়োজন নেই, বরং আপনি আজ থেকেই তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা৷ উক্ত হারাম সম্পর্ক থেকে আজ থেকেই ফিরে আসা এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে খাটি দিলে তাওবা করে হারাম সম্পর্ক থেকে ফিরে আসা৷

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 96 views
...