আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
184 views
in সালাত(Prayer) by (23 points)
আসসালামু আলাইকুম,
ওই বোনের প্রশ্ন।
আমি ২০২০ সালের মার্চ থেকে নামাজ নিয়মিত আদায় করছি। এর পূর্বে আমি নামাজ পড়লেও তিলাওয়াতে শুদ্ধ অশুদ্ধতা মিলিয়ে ছিল যেহেতু প্র‍্যাক্টিসিং ছিলাম না।
এখন ২০২০ থেকে পড়লেও আমার নামাজ কাজা হলে বা ফরজ গোসল হয়েছে না জানা অবস্থায় আদায় করা হয়নি কিছু বা ভুলে গিয়েছি কিছু ওয়াক্ত এরকম। (ইচ্ছাকৃত নয়)যেগুলা আমি লিখে রাখিনি।
পরে এখানে জানতে পেরেছি যে,ফরজ গোসল ছিল। বলা হয়েছে আনুমানিক হিশাব করে আদায় করতে।

১/ এখন উমরি কাযা নামাজ কি বছর আর দিন নির্দিষ্ট করে আদায় করতে হবে?নাকি "আমার জিম্মায় যত ফরজ নামাজ আছে , তার প্রথমটি আদায় করছি" এরকম বলে আদায় করলেই হবে হিশাব করে।

২/সে আনুমানিক ১৩ বছরে হায়েজ হয়েছে ধরে বিগত ১০ বছরের নামাজ আদায় করবে নিয়ত করেছে ইনশাআল্লাহ। কিন্তু ২০২০ সালের যেগুলা গোসল ফরজ অবস্থায় আদায় হয়নি সেক্ষেত্রে কিভাবে হিশাব করবে?

৩/ পূর্ব ও পরের কাজা নামাজ একত্র করে "আমার জিম্মায় যত ফরজ নামাজ আছে তার প্রথমটি আদায় করছি" এভাবে আদায় করতে থাকলে হবে?

৩/ উমরি কাযা নামাজ আদায় করতে গেলে মনে হয় এত নামাজ কেমনে পড়বো। সেক্ষেত্রে যদি আদায়হীন অবস্থায় মারা যায় সেক্ষেত্রে তার পরিবার ত প্র‍্যাক্টিসিং না। তারা ত ফিদইয়া দিবেনা। সবার আগে আল্লাহ সুবহানুওয়াতায়ালা নামাজের হিশাব নিবেন।সেক্ষেত্রে সে কিভাবে আদায় করতে পারে?
৪/ নিয়ত করার পরও যদি গাফলতি আসে তাহলে কি আল্লাহ সুবহানুওয়াতায়ালা শাস্তি দিবেন? ভয়ে নিয়ত করছেনা কারণ যদি আদায় করতে না পারে তবে ত ওয়াদা ভংগ করলো।
৫/ পূর্বে কাযা রোজা ( যেগুলা হায়েজের জন্য ছিলো) তা কিছু আদায় করেছে কিছু করেনি। সেগুলাও লিখে রাখা হয়নি।
সেক্ষেত্রে কতদিন হায়েজ ছিল কোন বছরে, তা মনে নেই।
এখন সাধারণত তার হায়েজ ৭ দিন থাকে। তবে কখনো ৫/৬ দিন বা কখনো ১০ দিনও ছিলো। এক্ষেত্রে গড়ে হিশাব ৭ দিন ধরে ১৩ বছরে বালেগ হয়েছে ভেবে আদায় করলে কি আদায় হয়ে যাবে?
৬/ এক্ষেত্রেও কি বছর নির্দিষ্ট করা আবশ্যক?যেমন ২০০৯ এর প্রথম কাযা রোজা।
৭/ কাযা রোজা রাখতে গিয়ে অসুস্থ হলে সে কাযা তো ওয়াজিব হয়। সেক্ষেত্রে প্র‍্যাক্টিসিং হয়ার পর কয়েকটায় এমন হয়েছে। সেগুলা কি পূর্ব কাযা রোজার সাথে একসাথে করে রাখা যাবে? নাকি দিন মনে করে রাখতে হবে?

তাকে নসীহাহ দিন।
জাজাকাল্লাহ খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
https://ifatwa.info/43094/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
নামাজ ত্যাগ অনেক মারাত্মক গুনাহ। 
হাদীস শরীফে এসেছে-
 
عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، قَالَ أَوْصَانِي خَلِيلِي ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنْ " وَلاَ تَتْرُكْ صَلاَةً مَكْتُوبَةً مُتَعَمِّدًا فَمَنْ تَرَكَهَا مُتَعَمِّدًا فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ الذِّمَّةُ وَلاَ تَشْرَبِ الْخَمْرَ فَإِنَّهَا مِفْتَاحُ كُلِّ شَرٍّ " .
 
আবূ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার প্রিয় বন্ধু (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
আমাকে এই উপদেশ তুমি স্বেচ্ছায় ফরয নামায ত্যাগ করো না। যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় তা ত্যাগ করে তারথেকে (আল্লাহর ) যিম্মদারি উঠে যায়। তুমি মদ্যপান করো না। কেননা তা সর্বপ্রকার অনিষ্টের চাবিকাঠি। (সুনানে ইবনে মাজাহ ৪০৩৪)

আরো জানুনঃ 

ইবনে আবেদীন শামী রাহঃ কাযা নামায পড়ার নিয়ম এভাবে দিয়েছেন যে,

ﻭﻓﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ - ﻛَﺜُﺮَﺕْ ﺍﻟْﻔَﻮَﺍﺋِﺖُ ﻧَﻮَﻯ ﺃَﻭَّﻝَ ﻇُﻬْﺮٍ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﻭْ ﺁﺧِﺮَﻩُ،

ﻭﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻋﺎﺑﺪﻳﻦ ﺍﻟﺸﺎﻣﻰ – ( ﻗَﻮْﻟُﻪُ ﻛَﺜُﺮَﺕْ ﺍﻟْﻔَﻮَﺍﺋِﺖُ ﺇﻟَﺦْ ) ﻣِﺜَﺎﻟُﻪُ : ﻟَﻮْ ﻓَﺎﺗَﻪُ ﺻَﻠَﺎﺓُ ﺍﻟْﺨَﻤِﻴﺲِ ﻭَﺍﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ ﻭَﺍﻟﺴَّﺒْﺖِ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻗَﻀَﺎﻫَﺎ ﻟَﺎ ﺑُﺪَّ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺘَّﻌْﻴِﻴﻦِ ﻟِﺄَﻥَّ ﻓَﺠْﺮَ ﺍﻟْﺨَﻤِﻴﺲِ ﻣَﺜَﻠًﺎ ﻏَﻴْﺮُ ﻓَﺠْﺮِ ﺍﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ، ﻓَﺈِﻥْ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﺗَﺴْﻬِﻴﻞَ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮِ، ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺃَﻭَّﻝَ ﻓَﺠْﺮٍ ﻣَﺜَﻠًﺎ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﺇﺫَﺍ ﺻَﻠَّﺎﻩُ ﻳَﺼِﻴﺮُ ﻣَﺎ ﻳَﻠِﻴﻪِ ﺃَﻭَّﻟًﺎ ﺃَﻭْ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺁﺧِﺮَ ﻓَﺠْﺮٍ، ﻓَﺈِﻥَّ ﻣَﺎ ﻗَﺒْﻠَﻪُ ﻳَﺼِﻴﺮُ ﺁﺧِﺮًﺍ، ﻭَﻟَﺎ ﻳَﻀُﺮُّﻩُ ﻋَﻜْﺲُ ﺍﻟﺘَّﺮْﺗِﻴﺐِ ﻟِﺴُﻘُﻮﻃِﻪِ ﺑِﻜَﺜْﺮَﺓِ ﺍﻟْﻔَﻮَﺍﺋِﺖِ . ( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺼﻼﺓ، ﺑﺎﺏ ﻗﻀﺎﺀ ﺍﻟﻔﻮﺍﺋﺖ - 2/538

ভাবানুবাদঃ-উমরী কাযা নামায আদায় করতে হলে প্রথমে কোন ওয়াক্তের কতটা নামায কাযা হয়েছে তা নির্ণয় করবে।যদি সেটা নির্ণয় করা সম্ভব না হয়। তাহলে অনুমান করে নিবে। অনুমান করে কোন ওয়াক্তের কতটি নামায কাযা হয়েছে সেটা নির্ধারণ করে নিবে। তারপর ধারাবাহিকভাবে একে একে সবগুলোকে  আদায় করে নিবে।

যেমন, ফজরের নামায সর্বমোট ১০০ ওয়াক্তের কাযা হয়েছে। তখন কাযা নামায আদায় করার সময় এভাবে নিয়ত করবে যে, আমার জিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা রয়েছে, সে অনাদায়কৃত নামায সমূহের মধ্য থেকে প্রথম ফজরের নামাযকে এখন কাযা আদায় করছি” এমন নিয়তে নামায আদায় করবে।এভাবে হিসেবে করে পড়তে থাকবে। প্রতিবার অনাদায়কৃত প্রথম ফজরের নামায বলার দ্বারা তার যিম্মায় যতগুলো নামায বাকি ছিলো, সেগুলোর প্রথম নামাযের নিয়ত হচ্ছে, তাই এক্ষেত্রে নিয়তটি নির্দিষ্ট নামাযেরই হচ্ছে।ঠিক উল্টোভাবেও করা যায়। অর্থাৎ যত নামায কাযা আছে তার সর্বশেষ অনাদায়কৃত কাযার নিয়ত করছি। এভাবেও পূর্বোক্ত পদ্ধতিতে বাকি নামাযের কাযা আদায় করা যাবে।(রদ্দুল মুহতার-২/৫৩৮)

এ ধারাবাহিকতায় বাকি নামায সমূহের ক্বাযা আদায় করবে। যোহর, আছর, মাগরিব, ইশা এবং সাথে বিতিরের নামাযকে ও এভাবেই আদায় করে নিবে।বিতিরের নামাযের ক্বাযা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/629

যত দিনের ইচ্ছে কাযা আদায় করা যাবে। কোন সমস্যা নেই।

উমরী কা’যার নামায সম্পর্কে  বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/968

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি এভাবে কাজা নামাজের নিয়ত করবেনঃ-
"আমার জিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা রয়েছে, তার মধ্য (সেই অনাদায়কৃত নামায সমূহের মধ্য) হতে প্রথম ফজরের নামাযকে এখন কাযা আদায় করছি”

(০২)
আনুমানিক একটি হিসাব করে সংখ্যা ধরে নিবে।

(০৩)
সহজ পদ্ধতি হলো,প্রতিদিন ঈশার পর বা আছরের পর বা মাগরিবের পর বা প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর সময় সুযোগ মোতাবেক এক দিনের বা কয়েক দিনের কাজা নামাজ উঠানো।

আর মনের মধ্যে নিয়ত রাখা,যে আমি ইনশাআল্লাহ সমস্ত কাজা নামাজ আদায় করবোই। সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।

তাহলেই ইনশাআল্লাহ সে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছাবে,ইনশাআল্লাহ। 

(০৪)
এরকম চিন্তা মাথায়া আনাই যাবেনা।
এখানে ওয়াদা ভঙ্গের গুনাহ হবেনা।

এভাবে গাফলতি আসবে নাকি আসবেনা,সেটি আগেই চিন্তা না করে আখেরাতের ভয়ে কাজা নামাজ গুলি আদায় শুরু করতে হবে।

আপনি প্রশ্নে যাহা উল্লেখ করেছেন,এটি শয়তানের ওয়াসওয়াসা,এভাবে শয়তানের ওয়াসওয়াসায় পড়ে গেলে শয়তানই সফল হবে।
আপনি নন।

(০৫)
মহিলাদের হায়েজের দিন গুলোর নামাজের কাজা আদায় করতে হবেনা।
আল্লাহ তায়ালা মাফ করে দিয়েছেন।

(০৬)
বছর নির্দিষ্ট করা আবশ্যক নয়।
এক নং প্রশ্নের জবাব দ্রষ্টব্য।

(০৭)
দিন মনে রাখতে হবেনা।
অন্যান্য কাজা রোযার সাথে রাখা যাবে।
তবে একদিন এক রোযারই কাজা আদায় করা যাবে। এর বেশি নয়।

একাধিক বছরের রোযা কাজা হলে কোন বছরের কাজা রোযা,সেই বছরের নিয়ত করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 219 views
0 votes
1 answer 380 views
...